নেপথ্যে নেতা স্থানীয় প্রভাবশালী ও নৌ-পুলিশ
এনামুল হক, কুষ্টিয়া : বছরের পর বছর পদ্মা নদীর কুষ্টিয়া অংশে বালু লুটের ঘটনা ঘটে আসছে। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতা সহ স্থানীয় প্রভাবশালীরা এসব ঘটনার সাথে যুক্ত। নৌ-পুলিশের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় প্রভাবশালীরা নির্বিঘ্নে রাত-দিন লুটে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকার বালু। হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা তারা মানছেনা। আবার স্থানীয় প্রশাসনও কার্যকর তেমন পদক্ষেপ নিচ্ছেনা। দায়সারা অভিযান পরিচালনা করলেও বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি।
অনুসন্ধানে দেখা পদ্মার আশেপাশে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে(ভেড়ামারা ও ঈশ্বরদী) অংশে অসংখ্য এসকেভেটর ও পেলুটারের মাধ্যমে প্রতিদিন শত শত ড্রাম ট্রাকের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা ও পাবনার ঈশ^রদী এলাকার প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় তোলা হচ্ছে কোটি কোটি টাকার বালু। বিশেষ করে হার্ডিঞ্জ ব্রীজ ও লালন শাহ সেতুর তলদেশ, ভেড়ামারা উপজেলার, চরবাহাদুরপুর বড়পুল এবং তার আশপাশ এলাকা থেকে তোলা হচ্ছে বালু। চরবাহাদুরপুর বড়পুল এলাকায় উঠতি ফসলী জমি কেটে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে ওইসব এলাকায় গভীর গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে হুমকীর মুখে পড়ছে নদীরক্ষা বাঁধসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। স্থানীয় কৃষক তাতে বাধা হয়ে দাঁড়ালে উল্টোর তাদের ওপর চড়াও হচ্ছে প্রভাবশালীরা। অথচ হাইকোর্টের পরিস্কার নির্দেশনা রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ওইসব স্থাপনাসহ পদ্মায় অবৈধ উপায়ে উত্তোলন করা যাবেনা বালু। কিন্তু কে শোনে কার কথা। এমন নির্দেশনা উপেক্ষা করে দেদারসে তোলা হচ্ছে বালু। জানা গেছে, নৌ-পুলিশের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় সুযোগ নিচ্ছে বালু লুটেরা। নৌ-পুলিশের ওসি ইমরান মাহমুদ তুহিন মোটা অংকের কমিশনের মাধ্যমে বালু তোলায় সহযোগিতা করছেন। গত ৫আগস্টের আগে অর্থাৎ শেখ হাসিনা সরকারের সময় নৌ-পুলিশের এই ওসি ইমরান মাহমুদ তুহিনের মদদে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা পাবনার দোগাছী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী হাসান, কুষ্টিয়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইয়াছির আরাফাত তুষার, তালবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হান্নান মন্ডল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহববুউল আলম হানিফের ভাগ্নে আতিকুজ্জামান বিটু, ভাই রফিকুল আলম চুন্নু ও ব্যবসায়িক পার্টনার আবু সাঈদ খান শত কোটি টাকার বালু লুটিয়ে নেন।
কিন্তু ৫ আগস্ট পরবর্তি সময়ে স্থানীয় বিএনপির প্রভাবশালী নেতাদের সহযোগিতায় তোলা হচ্ছে বালু। আর এর প্রকাশ্য মদদ দাতা নৌ-পুলিশের ওসি ইমরান মাহমুদ তুহিন।
এবিষয়ে পাবনার রূপপুর লক্ষ্মীকুন্ডা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ওসি মো: ইমরান মাহমুদ তুহিন জানান, অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের সাথে তার কোন সখ্যতা বা যোগাযোগ নেই। আর্থিক সুবিধা নেয়া তো দুরের কথা। বরং যারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
এম/দৈনিক দেশতথ্য//

Discussion about this post