নিজস্ব প্রতিবেদক : কুষ্টিয়া শহরের বড়বাজার কবি আজিজুর রহমান সড়কে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন করে চলেছে সিয়াম ফুড নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সিয়াম ফুড নামীয় প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন ধরনের পাউরুটির কেক বিস্কিট সহ নানান ধরনের বেকারীর আইটেম তৈরি করে থাকেন। বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য সামগ্রী উৎপাদন ও বাজারজাত করে থাকলেও শুধুমাত্র একটি পণ্যের (বিস্কুট) বিএসটিআই অনুমোদন আছে। কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় সিয়াম ফুডের বিভিন্ন মূল্যের কেক ও বিভিন্ন মূল্যের পাউরুটি সচরাচর অধিকাংশ দোকানেই পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু কেক পাউরুটি বিস্কিট কোনো পন্যেই নেই বিএসটিআই সিল, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুতের তারিখ ও মূল্য।
বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকটি দোকানদারের সাথে কথা বললে তারা জানান, আমরা বিক্রির জন্য এগুলো রেখেছি। সিয়াম ফুডের পক্ষ থেকে প্রতিদিন এসে খাবারগুলো বিক্রির জন্য দোকানে দিয়ে যাওয়া হয়। আমরা সেরকম পড়াশোনা না জানাই ওগুলো সচরাচর দেখে নেওয়া হয় না। তবে তারা যদি অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে খাবার উৎপাদন করে থাকে এবং সরকারের নিয়ম নীতি না মেনে চলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
সরেজমিনে সিয়াম ফুডের কবি আজিজুর রহমান সড়কস্থ কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন করছে প্রতিষ্ঠানটি। খাদ্যদ্রব্য উৎপাদনের সাথে যারা জড়িত আছেন তাদের পরনে নোংরা পোশাক-পরিচ্ছদ, হাতে নেই কোন হ্যান্ড গ্লাভস। শরীরের অংশগুলো নোংড়াতে ঢাকা। নোংরা ট্রেতে আটা ময়ান দিয়ে রাখা রয়েছে। বেশ কয়েক দিনের পুরাতন ফুড সেন্ট, ফুড কালার অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে, সেগুলো দিয়ে পচা দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। এগুলোই আবার খাবারে ব্যবহার করছে প্রতিষ্ঠানটি। বাজারজাত করার জন্য প্রস্তুত কেক পাউরুটি ও বিস্কিটের প্রতিটি প্যাকেটের স্টিকারের উপরে নেই প্রস্তুতের তারিখ, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ ও মূল্য। ঘটনাস্থলে সে সময় প্রতিষ্ঠানের মালিক ফিরোজ আলী উপস্থিত না থাকায় সার্বিক বিষয় নিয়ে উপস্থিত খাদ্যদ্রব্য উৎপাদনের সাথে জড়িত শ্রমিকদের কাছে জানতে চাইলে তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে মুঠোফোনে সিয়াম ফুডের মালিক ফিরোজ আলীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমাদের একটি পণ্যের বিএসটিআই অনুমোদন আছে। অন্যান্য পণ্যগুলো বিএসটিআই অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াধীন আছে। খুব শীঘ্রই হয়তো সেগুলো পেয়ে যাব। তবে সকল প্রমাণাদি থাকার পরেও বাজারজাত করার উদ্দেশ্যে প্রস্তুতকৃত পাউরুটি, কেক ও বিস্কুটের প্যাকেটের স্টিকারের উপর মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, প্রস্তুতের তারিখ ও মূল্য না থাকার বিষয়টি এবং অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুতের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
এদিকে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কুষ্টিয়া জেলা কার্যালয়ের নিরাপদ খাদ্য অফিসার সজিব পালের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিষয়টি নিয়ে বিএসটিআই বিভাগীয় অফিস খুলনার পরিচালক এসএম ইসহাক আলীর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা এসএমএস করে পাঠিয়ে দেবার জন্য বলেন। আগামীকাল অফিস খুললে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে মর্মে জানান।
![প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন](http://dailydeshtottoh.com/wp-content/plugins/wp-print/images/printer_famfamfam.gif)
Discussion about this post