চারদিকে দৌড়াদৌড়ি। কার আগে কে যাবে এই নিয়ে পাড়াপাড়ি। শুধু মাত্র গণপরিবহন বন্ধ এই বলেই এত তাড়াতাড়ি।
রাস্তায় এসে দেখি বাস, লেগুনা, ট্যাম্পু ট্রাক ছাড়া বাকী সবই চলছে। হাজার হাজার গাড়ির প্রতিযোগিতা। কারো দিকে ফিরে তাকাবার ফুরসত যেন কারো নেই।
অফিস আদালত খোলা। ঠিক টাইমে অফিসে যাওয়া এড়াবার সুযোগ নেই। তাই নানা যন্ত্রণা নিয়েই বের হতে হয়।
প্রশ্ন হলো দোকানপাট মার্কেট বন্ধ তবুও কেন মানুষ ছুটছে? কে কি টানে ছুটছে তা জানি না। তবে আমাকে বেরোতে হয় অফিসের টানে। প্রতিদিন 50-60 টাকায় রিকশায় যাতায়াত করি। এজন্য প্রতিদিন খরচ হয় প্রায় 120-130 টাকা।
লকডাউনের কারনে প্রতিদিন 80-90 টাকা বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে। কেবলমাত্র আমি নই হাজারো যাত্রীদেরও একই অবস্থা। এভাবেই প্রায় সারাটা বছরই চলছি। কার কাছে এর প্রতিকার চাইবো। এত কিছু শুনার সময় তো কারোই নেই। থাকবেই বা কেন?
আয় না বাড়ায় আমার মতো সীমিত আয়ের মানুষগুলো জীবনযাত্রায় চলছে নানা টানাপোড়ন। প্রাইভেট কোন একটা প্রতিষ্ঠানেও বেতন বাড়েনি। বরং যেটা পায় তা নেওয়াই এখন দুষ্কর হয়ে যাচ্ছে।
করোনা মহামারীর কারণে বিশ্ব আজ হিমশীম খাচ্ছে। সেই প্রভাব সারাবিশ্বে যেমন আমার দেশেও তেমন। তারপরও কোথায় যেন একটা গড়মিল দেখা যাচ্ছে।
লকডাউনের সংজ্ঞা কি জানিনা। গনপরিবহন বন্ধ রেখে কার লাভ হচ্ছে তা বুঝছি না। যারা বুঝেছেন তারা কি কেউ বলতে পারেন গনপরিবহন বন্ধ রেখে যাত্রী হয়রানি, বেশি ভাড়া গুনে আম জনতা কেন রাস্তায় দৌড়াচ্ছেন। এভাবেই যদি সবাইকেই যদি দৌড়াতেই হয় তাহলে লকডাউনটা কার জন্য?
আমার পাশের কলিগ উত্তরা থেকে, আরেকজন নারায়নগঞ্জ, কেউবা আসেন মোহাম্মদপুর, ডেমরা, ফতুল্লা থেকে। উহ্ কি দুর্বীসহ যন্ত্রণা। সিএনজিতে ডবল ভাড়া গুনতে হচ্ছে। তাই বলছি, এ শুধু রোগের মহামারী নয়। অর্থের মহামারীও বটে।
অফিস আদালত খোলা রেখে গনপরিবহন বন্ধ রাখার কোন যুক্তিই জনগন বুঝেনা। অনেক এলাকায় দেখলাম দোকানের শাটার বন্ধ ভিতরে চলছে কাজ। প্রতিটি এলাকায় একই চিত্র । বাইরে গেট বন্ধ ভিতরে অফিস চলছে। আমরা আসলে কেউই নিয়ম মানিনা। কিভাবে কে কখন অফিসে পৌছবে রাত থেকেই চলছে নানা প্রস্তুতি । আহ্ কি যন্ত্রণা। একটা সুষ্ঠু শৃঙ্খালা দরকার। কোন একটা ঘোষণা আসলেই মানুষ একাত্তরের যুদ্ধের মতো ঝাপিয়ে পড়ে। শুধুই ছুটাছুটি একেবারেই অপ্রয়োজনে। আসলে আমাদের আরো মানবিক হওয়া উচিত। সব কিছুর সাথে সমন্বয় রেখেই সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার ।
কি সিদ্ধান্ত নিলে ভোগান্তি থেকে মুক্তি মিলে সেই ব্যবস্থাই করা প্রয়োজন। তাহলে সাশ্রয় যেমন হবে তেমনি এ ভোগান্তি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে।
দৈনিক দেশতথ্যের মতামত কলামের জন্য পাঠিয়েছেন সাংবাদিক তাহমিনা।
![প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন](http://dailydeshtottoh.com/wp-content/plugins/wp-print/images/printer_famfamfam.gif)
Discussion about this post