গাজায় হানাদার ইসরাইলি বাহিনী হামলায় প্রতিদিন ফিলিস্থিনীদের তাজা লহুতে রঞ্জিত হচ্ছে পথঘাট, খালি হচ্ছে অসংখ্য মায়ের বুক। ইসরায়েলিরা যে ট্যাংক বা বিমান থেকে বোমা হামলা চালাচ্ছে, সেগুলো আকাশে ওড়ে কিন্তু মুসলিম দেশগুলোর তেলে! ভাবা যা যায় , অবাক হচ্ছেন ৷ মোটেই না ৷ আরব বিশ্বের তেলে মুসলিম নিধনে মেতেছে ইসরাইল ৷ অথচ আরব দেশগুলো যদি তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল মূহুর্তেই পুঙ্গ ৷
দেশটির বিমানবাহিনীতে ব্যবহার করা এফ-১৬ যুদ্ধবিমান আকাশে ওড়তে প্রতি ঘণ্টায় সাড়ে ৩ হাজার লিটার ও এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান প্রতি ঘণ্টায় ৫ হাজার লিটার তেল পোড়ায়। অন্যদিকে, সেনাবাহিনীতে ব্যবহার করা অত্যাধুনিক মারকাভা ট্যাংক চালাতে যুদ্ধকালীন প্রতি ঘণ্টায় প্রয়োজন হয় ১৫০ থেকে ১৮০ লিটার তেল। গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বর্তমানে অবরুদ্ধ গাজার বেসামরিক নিরস্ত্র সাধারণ নাগরিকদের ওপর স্মরণকালের ভয়াবহ হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। এ হামলায় ব্যবহার করা হচ্ছে এফ-১৬ ও এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কিংবা মারকাভা ট্যাঙ্ক।
অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, এসব যুদ্ধবিমান ও ট্যাঙ্কে ব্যবহার করা জ্বালানির প্রায় পুরোটাই আসছে মুসলিম দেশগুলো থেকে। কারণ, ইসরাইলের আমদানি করা অধিকাংশ তেল আসে কাজাখস্তান, আজারবাইজান, মিশর, নাইজেরিয়া ও ইরাক ও সৌদি আরব থেকে।
ইসরাইলি ট্যাঙ্ক ও যুদ্ধবিমানসহ অন্যান্য সমরাস্ত্রের হামলায় এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ ১১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি । আহত হয়েছেন ৬০ হাজারেরও বেশি। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজার । গাজা যেন শিশুদের গোরস্থান ৷
সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরাইল বর্তমানে প্রতিদিন ২ লাখ ২০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত তেল আমদানি করে। এর ৬০ শতাংশই আসে দুটি মুসলিম-অধ্যুষিত দেশ কাজাখস্থান ও আজারবাইজান থেকে।
এর পাশাপাশি গ্যাবন ও নাইজেরিয়ার মতো পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিম-অধ্যুষিত দেশগুলোও ইসরাইলের অন্যতম তেল সরবরাহকারী। সব মিলিয়ে ইসরাইলের আমদানি করা তেলের প্রায় ৮১ শতাংশের বেশি আমদানি হয় মুসলিম-অধ্যুষিত এ দেশগুলো থেকে। মুসলিম দেশগুলোর তেলেই চলছে ইসরাইলি ট্যাংক ও যুদ্ধবিমানগুলোর নিধনযজ্ঞ ।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//