এডিসি (রাজস্ব) বললেন দুইবার নোটিশ করার পরও ইজারার টাকা জমা দেয়নি। এলাকাবাসী বলছে বিল থেকে দ্রুত মাছ মেরে ইজারাদার রেজাউল পালানোর চেষ্টা করছেন।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মনোহরদিয়া ইউনিয়নের রাধানগর মরা নদী জলকর মহলের ইজারাকৃত টাকা সরকারী কোষাগারে জমা না দিয়েই ঐ নদী দখলের অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, রাধানগর ছয়ঘোরিয়া মরানদী মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি রেজাউল ইসলামের নামে রাধানগর মরানদী জলকর জলমহল টেন্ডারের মাধ্যমে ইজারা পান। ৩ বছর মেয়াদী সরকারী দর অনুযায়ী ট্যাক্স ভ্যাট সহ প্রায় ১ কোটি ৫১ লক্ষ টাকা। প্রথম বছরে কিস্তি আসে প্রায় ৫০ লক্ষ ১৩ হাজার টাকা। প্রথম কিস্তির সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করার কথা থাকলেও পরিশোধ করা হয়নি। এই ব্যাপারে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সিরাজুল ইসলাম টাকা প্রদানের জন্য দুইবার নোটিশ প্রদান করেছেন সমিতির সভাপতি রেজাউল ইসলামের নিকট।
এই ব্যাপারে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সিরাজুল ইসলাম জানান, রাধানগর মরানদী জলকর মহলের ইজারার সম্পূর্ণ টাকা ইজারাদার রেজাউল পরিশোধ করেন নাই। তাকে দুইবার নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
মনোহরদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম জহুর জানান, জলমহল ইজারার ৭ কার্য দিবসে প্রথম কিস্তির টাকা পরিশোধের নিয়ম রয়েছে। প্রথম কিস্তির টাকা ৫০ লক্ষ ১৩ হাজার প্রায়। এই টাকা এখনো রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়নি। এই ব্যাপারে আমি কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক, এডিসি রিভিনিউ, কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট ফোন করেও কোন ফল হয়নি। আগামী কাল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া ৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফের নিকট অভিযোগ প্রদান করবো।
এই ব্যাপারে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাধন কুমার বিশ্বাস জানান, বিগত সময়ে হাতিয়া বিল ইজারা নেন রাধানগর ছয়ঘোরিয়া সমবায় সমিতি লিঃ। সেখানে কিছু টাকা পাওনা আছে। এসিল্যান্ডে খোজ নিলেই কত টাকা পাওনা আছে জানা যাবে।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দবির উদ্দিন ফোন রিসিভ করেননি।
রাধানগর ছয়ঘোরিয়া মরানদী মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির লিঃ এর সভাপতি রেজাউল ইসলাম ইবি থানার পাটিকাবাড়ীর কুমারনদী ইজারা পেয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান কানুর নিকট প্রতি বছর ৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে সাব ইজারা প্রদান করেন। যা আইন সঙ্গত নয়।
আরো জানা যায়, গতবার কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে হাতিয়া জলমহলের টেন্ডার ইজারা পান এই সমিতির সভাপতি রেজাউল ইসলাম। ইজারার মেয়াদ শেষ হলেও এখনো ৫ লক্ষ টাকা প্রদান করেননি তিনি।
এই সমিতির সভাপতি রেজাউল বিভিন্ন দূর্নীতির মাধ্যমে নানান অপকর্ম করে আসছে।
লিজ গ্রহিতার চুক্তিপত্র অনুযায়ী জানা যায়, লিজগ্রহীতা লিজকৃত মূল্য পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে বা কিস্তি খেলাপ হলে কালেক্টর লিজ বাতিল করিতে পারবেন। লিজগ্রহীতা লিজ মূল্য পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে বা কিস্তি খেলাপ করা হলে কালেক্টর লিজ বাতিল করবেন এবং জামানত সহ জমাকৃত ইজারামূল্য সরকারের অনূকুলে বাজেয়াপ্ত হবে। লিজগ্রহীতা সমিতির পরবর্তী ৩ বছর কোন জলমহলের ইজারার জন্য বা উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারেবন না। এছাড়াও লিজের কোন শর্ত ভঙ্গ করলে লিজদাতা লিজ বাতিলের এখতিয়ারে রাখবে। লিজ বাতিল করা হলে লিজ গ্রহীতা আপত্তি করতে পারবে না বা আইনানুগ পদক্ষেপ নিতে পারবে না।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, বিল থেকে দ্রুত মাছ মেরে ইজারাদার রেজাউল পালানোর পায়তারা করছে।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//আগস্ট ০৭,২০২২//

Discussion about this post