ইরফান উল্লাহ, ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মাঝে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।
এতে গতকাল রবিবার আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের লাঞ্ছনা সহ বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলন করেন আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা আল-ফিকহের বাইরে অন্য বিভাগের তিন শিক্ষার্থীকে ইন্ধনদাতা দাবি করেন।
এর প্রতিবাদে সোমবার বিকেল সাড়ে চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস কর্নারে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মানহানির অভিযোগে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই তিন শিক্ষার্থী।
তারা হলেন আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী জাকারিয়া, আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আমিরুল ইসলাম ও দাওয়াত অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী হাসানুল বান্না অলি।
সম্মেলনে ইবি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আজাহারুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক নাজমুল হোসাইন, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক নুর আলম, ইবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাজমুল হক জাইম সহ কর্মরত অন্য সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী জাকারিয়া বলেন, চব্বিশের আন্দোলনের শুরু থেকেই আমি সামনে ছিলাম। আমি মনে করছি কোন একটি মহল আমি ব্যক্তি জাকারিয়াকে মানহানি করার জন্যই এই ঘটনার সাথে আমাকে জড়ানো হয়েছে। আমাকে কেন জড়ানো হয়েছে তা আমি ছাত্র হিসেবে জানি না। এই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে তাদের রিপোর্টে সুনির্দিষ্ট কারণ জানতে পারবো। আমি আগে থেকেই মেইনগেটে ছিলাম। উৎসুক জনতা হিসেবে আমি পরিস্থিতি দেখতে গেছি। সেখানে শুধু আমি একা ছিলাম না, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী এবং সমন্বয়ক প্যানেলের অনেকেই ছিল।
এসময় তিনি আরো বলেন, এখানে অনেক শিক্ষার্থী ছিল, অন্য কারো নাম কেন উল্লেখ করা হলো না এটা আমাদের প্রশ্ন। আমাদের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো হলো যে আমরা এখানে ইন্ধন যুগিয়েছি এবং মারামারির সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম। উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে এমন অভিযোগ করা হয়েছে। আমরা আশা করছি তদন্ত কমিটিতে সঠিক তথ্য উঠে আসবে। বাস আটকানোর সময় সম্পূর্ণ বিষয়টা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন। সেখানে অনেক শিক্ষার্থী ছিলেন, যাতে কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা না ঘটে সেহেতু আমরা বাসের মধ্যে দুই পক্ষকে বাধা দিয়েছিলাম। শিক্ষকদের গায়ে আঘাতের মত একটা ঘটনা ঘটেছিল। আমরা চাই এর তদন্ত হোক এবং দ্রুত বিচার হোক। আমরা পুরো ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই।
দাওয়াত অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী হাসানুল বান্না অলি বলেন, আমি ওখানে গিয়ে দেখি শিক্ষার্থীরা মবের দিকে আগাচ্ছে। তখন আমি একজন সচেতন শিক্ষার্থী হিসেবে উভয় বিভাগের শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করি। আমরা সেখানে দুই পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করেছিলাম। সেখানে আমাদের ছবি দেখালে হামলাকারী প্রমাণিত হয় না। দুই পক্ষকে থামাতে গিয়ে বৈষম্য বিরোধী, প্রক্টর, শিক্ষার্থী অনেকের ছবি উঠেছে। আমাদেরকে নিয়েই কেন প্রশ্ন।
এর আগে গতকাল রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে একই ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রক্টর অফিসে রাকিব তার ভুল স্বীকার করে মাফ চায় এবং এ বিষয়ে লিখিত মুচলেকা দিতে সম্মত হয়। এই সিদ্ধান্তকে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা স্বাগত জানায়। তবে মিটিংয়ের এই সিদ্ধান্ত বাহিরে জানাতে গেলে সেখানে উপস্থিত আল ফিকহ ও অন্য অনুষদের কিছু শিক্ষার্থী ‘আল ফিকহ’ বিভাগের নামে স্লোগানসহ বিভিন্ন উস্কানীমূলক বক্তব্য দেয়। এরপর তারা আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের উপর অতর্কিত ও পরিকল্পিত হামলা চালায়। এ হামলায় সরাসরি সম্পৃক্ত ও ইন্ধনদাতা ছিল জাকারিয়া (বঙ্গবন্ধু হল), আমিনুর (জিয়া হল), হাসানুল বান্না (লালন হল)। এদের কেউ আল ফিকহ বিভাগের শিক্ষার্থী নন।
প্রিন্ট করুন
Discussion about this post