আবেদ হোসাইন: তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সুইচ টিপে ১লা অক্টোবর ইসরাইলে ইরানের হামলার প্রতিশোধ নিতে শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) রাতে ইরানের তিন প্রদেশে সামরিক কেন্দ্রে হামলা চালায় ইসরায়েল। হামলার সময় সাহসী! নেতানিয়াহুসহ মন্ত্রীরা বাংকারে আত্মগোপনে ছিল।হামলায় ইরানের ২ সৈন্য নিহত হয়েছেন। এই হামলায় ইসরায়েলের অন্তত ১৬০টি যুদ্ধবিমান অংশ নেয়। ইরানে হামলা চালাতে ইসরায়েলের যুদ্ধবিমানগুলো প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে প্রথমে সিরিয়ার রাডার নেটওয়ার্কে হামলা চালায়। যাতে ইরান সিরিয়ার কাছ থেকে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলোর অবস্থান সম্পর্কে জানতে না পারে। এরপরই ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো ইরানের দিকে রওনা হয়।জেরুসালেম পোস্ট, টাইমস অফ ইসরাইল, বিবিসি, সিএনএন, আল জাজিরা।
এদিকে ইরানে হামলা সম্পন্ন হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। আইডিএফ মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আমি এখন নিশ্চিত করতে পারি যে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের হামলার প্রতিক্রিয়া আমরা শেষ করেছি। আমরা ইরানে সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে সুনির্দিষ্ট হামলা চালিয়েছি। ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী তার মিশন পূরণ করেছে।
ইরানে ডিফেন্স হেডকোয়ার্টার্স জানিয়েছে, “ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সফলভাবে তা সনাক্ত করে মোকাবিলা করেছে। তবে কিছু স্থানে সীমিত ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতির মাত্রা সঠিকভাবে জানতে তদন্ত চলছে।”হামলার পর মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দপ্তর পেন্টাগন জানিয়েছে ইরানে চালানো ইসরায়েলি বিমান হামলার সঙ্গে তারা জড়িত নয়। তবে ইসরায়েল তাদের হামলার কথা জানিয়েছে। বাইডেন প্রশাসনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, ইরানের সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলা, তেহরানের আগের হামলার লক্ষ্যবস্তু এবং আনুপাতিক প্রতিক্রিয়া বলে মনে হচ্ছে।
ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, দেশটির রাজধানী তেহরান, খুজিস্তান ও ইলাম প্রদেশের বিভিন্ন স্থাপনায় ইসরায়েল যে হামলা চালিয়েছে তা ব্যর্থ হয়েছে। ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এই হামলা ব্যর্থ করে দিতে সক্ষম হয়েছে। তবে হামলায় কিছু ক্ষেত্রে সামান্য ক্ষতি হয়েছে।ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তেহরান ও আশপাশের বাসিন্দারা বিস্ফোরণের যেসব শব্দ শুনতে পেয়েছেন সেগুলো ছিল আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সক্রিয় হয়ে ওঠার শব্দ।
এক সূত্রের বরাতে ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম বলেছে, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, ইরান ইসরায়েলি আগ্রাসনের জবাব দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। ইরান নিজের ওপর যেকোনো ধরনের আগ্রাসনের জবাব দেয়ার অধিকার রাখে। নিঃসন্দেহে ইসরায়েল যেকোনো হামলার যথোপযুক্ত জবাব পাবে।
এদিকে ইসরায়েলের পাল্টা হামলার জবাবে ইরান এক হাজারেরও বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুত রেখেছে এবং এ হামলা আগের হামলা থেকে আরও বেশি শক্তিশালী হবে।
সামরিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ইসরায়েল যুদ্ধ চাইলেও ইরানের সঙ্গে বড় কোনো যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত নয়। এ জন্যই মূলত ইরানে তাদের হামলার ব্যাপ্তি ছিল খুবই ছোট।
ইরান ও ইসরায়েলের বিরোধ অনেক পুরোনো। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা এবং এর জের ধরে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর যুদ্ধ শুরুর পর এই বিরোধ যেন আরো বেড়ে যায়।