দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-১ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন রোকেয়া খাতুন নামের এক নারী।
তিনি গণমুক্তি জোট থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী রোকেয়া খাতুন নিজেকে আওয়ামী লীগের কর্মী দাবি করে বলেন, ‘ আমি বোন জামাইয়ের কথায় এমপি প্রার্থী হয়েছি। তিনিই খরচ চালাবেন।’
রোকেয়া খাতুন ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার গাজিরভিটা ইউনিয়নের বোয়ালমারা গ্রামের বাসিন্দা। স্বামী ফারুক দীর্ঘদিন আগে দুই সন্তানসহ তাঁকে ছেড়ে চলে গেছেন। সরকারি খাস জায়গায় একটি ঘরে বৃদ্ধ মা আছিয়া খাতুন ও দুই সন্তানকে নিয়ে রোকেয়ার বসবাস। তিনি হালুয়াঘাট পৌর শহরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন।
সেটি বন্ধ হয়ে গেলে বিভিন্ন চিকিৎসকের বাসাবাড়িতে কাজ করে সংসার চালান।
এ আসনে রোকেয়া নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল থেকে মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে আলোচনায় এসেছেন। বোয়ালমারা এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধ আব্দুল মালেক বলেন, ‘অভাবের কারণে যেখানে তার সংসার চলে না সেখানে সে কিভাবে এমপি প্রার্থী হয়েছে তা আমার জানা নেই। এটা আমাদের কাছে খুবই বিব্রতকর।’
শহিদ মিয়া নামে একজন বলেন, ‘চাইলেই যে এমপি প্রার্থী হওয়া যায়, তা দেখে আমরা এলাকাবাসী সত্যিই খুব অবাক হয়েছি।’
এমপি প্রার্থী রোকেয়ার মা আছিয়া খাতুন বলেন, ‘আমার মেয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। তার দুলাভাই তাকে এমপি পদে দাঁড় করিয়েছে। তারাই সকল খরচ দেবে। আমরা এত টাকা কোথায় পাব? ’
গণমুক্তি জোটের মনোনীত প্রার্থী রোকেয়া বলেন, ‘আমি আগে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চাকরি করতাম। বর্তমানে এখানে-সেখানে কাজ করে সংসার চালাই।’
তিনি আরো বলেন, “২৮ নভেম্বর আমাকে প্রার্থী হওয়ার জন্য আমার দুলাভাই ময়মনসিংহ সদর আসনের ন্যাশনাল পিপলস পার্টির এমপি প্রার্থী হামিদুল ইসলাম অনুরোধ করেন। আমার সকল খরচ তিনিই বহন করেন। ’ পরে আমার সকল কাগজপত্র তিনিই রেডি করে আমাকে প্রার্থী হতে সহযোগিতা করেছেন। আমার নির্বাচনের সকল খরচ তিনি দেবেন। আমি নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত থাকব।”
এ বিষয়ে জানতে ময়মনসিংহ-৪ সদর আসনের ন্যাশনাল পিপলস পার্টি থেকে মনোনীত এমপি প্রার্থী হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘রোকেয়া খাতুন সম্পর্কে আমার শ্যালিকা। আমি তাকে এমপি প্রার্থী হওয়ার জন্য বলেছি এবং সকল সহযোগিতা করছি।’
পিপলস পার্টি থেকে মনোনীত এমপি প্রার্থী হয়ে অন্য দল থেকে মনোনয়নের ব্যবস্থা করা যায় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের দল থেকে কোনো আর্থিক সাপোর্ট না দিলেও গণমুক্তি জোট থেকে পাওয়া যায়। তা ছাড়া গণমুক্তি জোট আওয়ামী লীগের শরিক দল হিসেবে রয়েছে। তাদের অবস্থান বেশ শক্তিশালী। তাই আমি আমার শ্যালিকাকে প্রার্থী করেছি।’
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//
![প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন](http://dailydeshtottoh.com/wp-content/plugins/wp-print/images/printer_famfamfam.gif)
Discussion about this post