শেখ জাহাঙ্গীর আলম শাহীন, লালমনিরহাট:
লালমনিরহাট জেলা র কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছে লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান আহম্মেদের পুত্র রাকিবুজ্জামান আহমেদ ।
তিনি তার আপন চাচা বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী মোঃ মাহবুবুজ্জামান আহমেদ কে পরাজিত করতে প্রার্থী হয়েছে।
সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর পুত্র রাকিবুজ্জামান গতকাল রবিবার অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল করে। এই ঘটনায় তৃণমূলের আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। দলের মধ্যে বিশৃংখলা সৃষ্টি হয়েছে। নির্যাতিত হচ্ছে বঞ্চিতরা।
জানা গেছে, সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ও বর্তমান এমপি নুরুজ্জামান আহম্মেদের আপন ছোট ভাই মাহাবুবুজ্জামান আহম্মেদ বিগত নির্বাচনে পরপর দুইবার আওয়ামীলীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছেন। তৃনমূলে সাবেক মন্ত্রীর চেয়ে ছোট ভাই মাহাবুবুজ্জামান আহম্মেদের জনপ্রিয়তা বহুগুণে বেশী রয়েছে। সাংগঠনিক অবস্থান সুদৃঢ় । একজন সাংগঠনিক রাজনীতিবিদ হিসেবে পৃথক অবস্থান বহু আগে হতে রয়েছে। সাবেক মন্ত্রী পুত্রের অরাজনৈতিক ও অনৈতিক কর্মকান্ডে চাচা হিসেবে বিরোধীতা করে আসছিলেন। এতেই ভাতিজা রাকিবুজ্জামান মনক্ষুণ হয়ে পড়ে। ৮ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনে প্রকাশ্য জনসভায় সাবেক মন্ত্রী পুত্র রাকিবুজ্জামান ও তার এপিএসের মিজানুর রহমানের নৈতিক কর্মকান্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলে বক্তব্য রেখেছিলেন চাচা উপজেলা চেয়ারম্যান মাহাবুবুজ্জামান আহম্মেদ। এর প্রতিশোধ হিসেবে এবারের নির্বাচনে চাচার সাথে প্রতিদ্বন্দিতা করে চাচাকে নির্বাচনে হারাতে চায়। এঘটনায় তৃণমূলের নেতা কর্মীরা হতাশ। তৃণমূলের কর্মী রাজু জানান, চাচা ভাতিজার দ্বন্দ্বের দায় কেন ঐতিহাসিক এই রাজনৈতিক সংগঠন নিবেন। সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমান এমপি নুরজ্জামান আহম্মেদের জনপ্রিয়তা ও ইমেজ সংকটের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এমপি পুত্র রাকিব ও সাবেক এপিএস। সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচার রয়েছে নানা অনৈতিক ও অরাজনৈতিক বির্তকিত কর্মকান্ডে জড়িয়ে হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছে। যাহা বিগত সংসদ নির্বাচনে নুরুজ্জামান আহম্মেদ এমপির নির্বাচনী বৈতরণী পাড়িতে কষ্টে ফেলে ছিল।
সংসদ সদস্যের ছোট ভাই জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুজ্জামান আহমেদ বলেন, আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদে বিপুল ভোটে পরপর দুবার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। দুইবারে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে তৃণমূলের মানুষ ও নেতা কর্মীদের উন্নয়নে কাজ করেছি। সাংগঠনিক ভাবে তৃণমূল পৃথক জনপ্রিয়তা রয়েছে। রয়েছে দলমত নির্বিশেষে ভক্ত ও সমর্থক। তারা আমার আহবানে সাড়া দিয়ে ২১ মে অনুষ্ঠিতব্য কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচিনে পুনরায় চেয়ারম্যান পদে আমাকে নির্বাচিত করবেন। তৃণমূলের সর্মথনে নির্বাচন করার জন্য মনোনয়নপত্র কিনেছি ও ইতিমধ্যে অনলাইনে দাখিল করেছি।
সাবেক মন্ত্রী ও এমপি পুত্র রাকিবুজ্জামান আহমেদ বলেন, পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার জন্য মনোনয়নপত্র কিনেছি ও ইতিমধ্যে অনলাইনে দাখিল করেছি। তার বিরুদ্ধে নানা রকম রাজনৈতিক অপপ্রচার করা হচ্ছে, যাহা আদোতে সত্য নয়। তার বিরুদ্ধে সুনিদিষ্ট কোন দুর্নীতির অভিযোগ নেই। মিডিয়াকে এর বাইরে আর কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
এদিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী ও এমপির পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজনদের অংশগ্রহণ না করতে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের বিধি নিষেধ রয়েছে। এমন কি উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রক্রিয়ায় থাকলে সেখান থেকে সরে আসতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশ আছে। এমন পরিস্থিতিতে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য পুত্র তার আপন চাচার সাথে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মনোনয়ন পত্র দাখিল করায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা সৃষ্টি করেছে। তৃণমুলের নেতা কর্মীরা হয়ে পড়েছে নানা ভাগে বিভক্ত। যাহা সাংগঠনকে দূর্বল করে তুলেছে।
যার প্রভাব ইতোমধ্যে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে প্রভাব পড়েছে।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//

Discussion about this post