মাহাবুল ইসলাম, গাংনী: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ষোলটাকা, কাজিপুর ও ধানখোলা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র দীর্ঘদিন ধরে ওষুধ ও জনবল সংকটে ভুগছে। ১৯৮৬ সালে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে কেন্দ্রগুলো চালু করা হলেও বর্তমানে কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রায় এক লাখ মানুষ।
গত পাঁচ মাস ধরে কোন ওষুধ বরাদ্দ না থাকায় সাধারণ চিকিৎসা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। নরমাল ডেলিভারি, প্রসূতি সেবা, কিশোর-কিশোরী স্বাস্থ্যসেবা ও সাধারণ স্বাস্থ্যসেবাসহ নানা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়েছে। চারটি অনুমোদিত পদের বিপরীতে প্রতিটি কেন্দ্রে রয়েছে কেবল একজন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার। সপ্তাহে দুই-তিন দিন সামান্য সময়ের জন্য কেন্দ্র খোলা থাকলেও বাকী সময়ে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালন করতে হয়।
এছাড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর ভবন ও আবাসিক কোয়ার্টার একেবারেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দেয়ালের সাদ-ঢালায় খসে পড়ছে, নিরাপত্তার অভাবে সন্ধ্যার পর সেখানে বসছে মাদকের আড্ডা।
স্থানীয়রা জানান, জরুরি চিকিৎসার জন্য গাংনী, মেহেরপুর বা কুষ্টিয়া যেতে হয়। সম্প্রতি সহড়াবাড়িয়া গ্রামের এক কৃষক হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে গাংনী হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান। স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো অবহেলিত ভাবে পড়ে থাকায় চিকিৎসার জন্য অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয় সেবা প্রার্থীদের।
ষোলটাকা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি বলেন, “স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো নামেই আছে। ডাক্তার-নার্স নেই, প্রয়োজনীয় ঔষধও সময়মতো মেলে না। অধিকাংশ সময় কেন্দ্র বন্ধ থাকে।”
ধানখোলা ইউনিয়নের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান ফিরোজ জানান, “পরিত্যক্ত কোয়ার্টার ভবনে ডাক্তাররা থাকতে চান না। ফলে রাতের বেলায় রোগীদের শহরে নিতে হয়। নিয়মিত ওষুধের অভাবও মারাত্মক ভোগান্তি তৈরি করছে।”
ষোলটাকা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপসহকারী মেডিকেল অফিসার মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, “জনবল ও ওষুধ সংকট রয়েছে। একাই চারজনের কাজ করতে হয়। যথাযথ জনবল ও ওষুধ সরবরাহ হলে কিছুটা হলেও সেবা দেয়া সম্ভব।”
এ বিষয়ে মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডা. এ.কে.এম. আবু সাঈদ জানান, “দ্রুত ওষুধ সরবরাহ করা হবে এবং খুব শিগগিরই জনবল নিয়োগ দেয়া হবে।

Discussion about this post