Print Date & Time : 10 May 2025 Saturday 8:44 pm

কনজ্যুমার ঋণ নিয়ে দিতে হচ্ছে চড়া সুদ, বিপাকে শিক্ষক কর্মচারি

শেখ জাহাঙ্গীর আলম শাহীন, লালমনিরহাট: লালমনিরহাট জেলার কয়েক হাজার বেসরকারি স্কুল কলেজের শিক্ষক কর্মচারি দেশের তফশিলভুক্ত সরকারি বেসরকারি ব্যাংক হতে কনজ্যুমার ঋণ নিয়ে পড়েছে মহা বিপাকে।

ঋণ নেয়ার সময় ব্যাংকের সাথে চুক্তি ছিল ৮ বছর মেয়াদে পরিশোধ করতে হবে। ঋণের সুদ হবে সিঙ্গেল জিজিটে ৯ পর্সেন্ট হারে। কিন্তু বর্তমান সরকারের আমলে এসে এই ঋণের সুদ দিতে হচ্ছে ১৩-১৪ পর্সেন্ট হারে। পরিশোধ করতে হবে ৫ বছর মেয়াদে। বর্ধিত হারে সুদ ও মাসিক কিস্তি বেতন হতে কেটে নেয়ায় শিক্ষক কর্মচারি গণ পড়েছে মহা বিপাকে।

ছদ্ম নাম সহকারি অধ্যাপক শাহীনুর রহমান সর্বসাকুল্যে মাসিক বেতন – ভাতা উত্তোলন করেন ৪০ হাজার টাকা। বিগত ৩ বছর পূর্বে কনজ্যুমার ( ভোগ্যপণ্য ঋণ) ঋণ ১২ লাখ টাকা নিয়ে ছিল।

সুদের হার ছিল শতকরা ৯ পার্সেন্ট। এই ঋণের টাকায় অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসা, পারিবারিক সমস্যা সমাধান, বাড়ি সংস্কার সহ কিছু সৌখিন পণ্য ক্রয় করেছেন। আগে প্রতিমাসে সুদ সহ ঋণ পরিশোধে ব্যাংক বেতনের হিসাব হতে কেটে নিতেন ১৮ হাজার টাকা। বর্তমানে এখন ব্যাংক কেটে নিচ্ছেন ২৫ হাজার টাকা। তিনি ব্যাংক ঋণ নিয়ে ছিলেন সোনালী ব্যাংক হতে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে এটা শুধু লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলায় নয়। সারা জেলায় সকল সরকারি বেসরকারি তফশীলভুক্ত ব্যাংক বর্তমানে এভাবে চড়াসুদ ঋণের কিস্তি সহ কেটে নিচ্ছে। এতে করে মহাবিপাকে পড়েছে বেসরকারি স্কুল – কলেজের শিক্ষক কর্মচারি গণ। অধ্যাপক শহীনুর বলেন, ৪০ হাজার টাকা বেতন ভাতা হতে ১৮ হাজার ঋণ ও কিস্তি কেটে নেওয়ায় তেমন কোন কষ্ট হতে না। এখন ২৫ হাজার টাকা কিস্তি কেটে নেয়ায় মাত্র ১৫ হাজার টাকায় সংসার চলে না। সবকিছু দাম বেশি এখন। এছাড়াও ব্যাংকের সাথে ঋণ চুক্তি লিখিতভাবে হয়ে ছিল। তারা সিঙ্গেল ডিজিটে সুদ নিবেন। ৮ বছরে কিস্তিতে পরিশোধ হবে। এখন সুদ নিচ্ছেন ১৩-১৪ পার্সেন্ট শতকরা হারে। পরিশোধ করতে হবে ৫ বছরে। এতে করে ব্যাংক ঋণের চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করছেন। বিষয়টি গ্রাহক পর্যায়ে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

সোনালী ব্যাংকের মহিষখোচার শাখার ম্যানেজার জানান, কেন্দ্রীয় পর্যায়ে চিঠি এসেছে যেভাবে সুদ ও কিস্তি কাটার সেভাবে কাটা হচ্ছে।

গ্রাহকের সাথে চুক্তি করার সময় শর্ত ছিল যেকোন শর্ত পরিবর্তন পরিমার্জন করা যাবে। সেটা ব্যাংকে গ্রাহক হতে অধিকার দিয়েছে।
মহিখোচা স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ রবিউল ইসলাম জানান, সিঙ্গেল ডিজিটে সুদ ও ৮ বছর মেয়াদি কিস্তি কর্তন করলে পরিশোধে শিক্ষক কর্মচারিদের কষ্ট হত না। এখন চড়া সুদে কিস্তি কাটায় অনেকে ব্যাংক ঋণের দায় পরিশোধ করে সংসার চালাতে গিয়ে আরো ঋণের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। অনেক শিক্ষক কর্মচারি ঋণে জন্য বাড়ি ছাড়া হয়েছে। এমন নজির সমাজে রয়েছে।