গজে চড়ে আসছেন দেবী দুর্গা, পাইকগাছার ১৫৫টি মন্ডপে চলছে শারদীয় দুর্গোৎসবের শেষ সময়ের প্রস্তুতি
শারদীয় দুর্গোৎসব সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ উৎসব হলেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশের গোটা বাঙালিদের মাঝেই তৈরী হয় উৎসবের উন্মাদনা। দেবী দুর্গা এবারে আসছেন গজে চড়ে, যাবেন নৌকায় করে’ এমন প্রত্যাশায় ১ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ শারদীয় দুর্গোৎসবের। আগামী ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের দুর্গাপূজা।
এ উপলক্ষে দেশের প্রায় প্রতিটি পূজা মন্ডপের ন্যায় খুলনার পাইকগাছার মন্ডপ গুলোতেও চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। রাত পোহালেই দুর্গাপূজা। আর তাই সময় ঘনিয়ে আসায় শেষ সময়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন মৃৎশিল্পীরা। অবশ্য ইতোমধ্যেই উপজেলার প্রায় সবকটি মন্দিরে রং তুলির আঁচড়ে সেজেছেন দেবী দুর্গা।
সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানাযায়, দীর্ঘ করোনাকাল কাটিয়ে এবারে খুলনার পাইকগাছায় পৌর সদরের ৬টি ও গদাইপুর, কপিলমুনি, হরিঢালী, রাড়ুলীসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ১৫৫টি পূজা মন্ডপে চলছে শারদীয় দুর্গোৎসবের শেষ সময়ের আয়োজন। আর তাই পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দরাও বেশ খানিকটা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
প্রতিবেদনকালে সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন মন্ডপ ঘুরে দেখা যায়, দীর্ঘ করোনা বিরতির পর এবারের পূজায় মৃৎশিল্পীরাও খানিকটা নড়ে চড়ে বসেছেন। সাথে স্ব স্ব মন্ডপের আয়োজক বৃন্দরাও। আর তাই সংশ্লিষ্টদের সর্বাত্মক সহযোগিতায় দেবী দুর্গা সহ অন্যান্য দেব দেবীদের প্রতিমা গুলোকে নান্দনিক শিল্পকর্মে ফুটিয়ে তুলেছেন মৃৎশিল্পীরা।
তবে এবারের পূজা উপলক্ষে এখন পর্যন্ত উপজেলার কপিলমুনিতেই সর্বোচ্চ নান্দনিক প্যন্ডেল ও তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। এমনকি কপিলমুনির সর্ববৃহৎ প্যন্ডেল নির্মাণ করেছে ৩ টা মন্দির। তদ্মধ্যে পোদ্দার পাড়ায় ঐতিহাসিক ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল আদলে ও কপিলমুনি কেন্দ্রীয় মিলন মন্দিরে ভারতের মায়াপুর মন্দির সাদৃশ্যের প্যান্ডেল এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছ। এছাড়া ঐতিহ্যবাহী উত্তর নাছিরপুর (সিংহবাড়ী) আমতলা পূজা মন্ডপেও নির্মিত হচ্ছে নান্দনিক গেট।
এব্যাপারে কপিলমুনি পোদ্দার পাড়া মন্দিরের সভাপতি হিমাদ্রী শেখর জানান, বিগত বছরগুলোর সকল কিছু পরিবর্তন করে রাণী ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের আদলে তারা মন্ডপ সাজানোর চেষ্টা করেছে।
কপিলমুনি মিলন মন্দিরের সভাপতি বিপ্লব সাধু জানান, এবারের দুর্গোৎসবে উপজেলার সর্বোচ্চ নান্দিক গেট সব বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে সব বয়সীদের মনে ভিন্নমাত্রা যোগ করতে পারবেন এমনটাই আশা করছেন তারা। আর গোটা প্যান্ডেল জুড়েই থাকবে বাহারি চমক।
এব্যাপারে পাইকগাছা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আনন্দ মোহন বিশ্বাস জানান, সাম্প্রদায়িক সাম্প্রীতির জনপদ খুলনার কপিলমুনিতেই এবারে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ব বৃহৎ প্যান্ডেল করা হয়েছে। তাছাড়া উপজেলার সর্বোত্র স্ব স্ব মন্দির কমিটির সর্বাত্মক সহযোগিতা ও মৃৎশিল্পীদের নিপুন হাতের ছোঁয়ায় প্রত্যেকটি মন্ডপেই ইতোমধ্যে প্রতিমা তৈরীর কাজ শেষ হয়েছে। প্রশাসন ও উপজেলার সর্বোস্তরের মানুষের সর্বাত্মক সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণ ভাবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ উৎসব পালিত হবে বলেও জানান তিনি।
পাইকগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জিয়াউর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে সুন্দর শৃঙখলভাবে পূজা উদযাপনে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনা হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে উপজেলার প্রত্যেকটি মন্ডপে পূজা শুরুর আগেই প্রতিটা মন্দিরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানসহ জনবহূল এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার জন্য জানানো হয়েছে। এছাড়া কন্ট্রোলরুম খোলা রেখে ২৪ ঘণ্টা সাইবার মনিটরিং, টহল পুলিশ সহ সর্বাত্মক নিরাপত্তায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//সেপ্টম্বর ২৯,২০২২//
![প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন](http://dailydeshtottoh.com/wp-content/plugins/wp-print/images/printer_famfamfam.gif)
Discussion about this post