শেখ নাদীর শাহ্, পাইকগাছা(খুলনা): পাইকগাছার কপিলমুনি ইউপির সচিব গণি গাজীর বিরুদ্ধে পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ ১০ জন সদস্যের একযোগে লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশের পর সচিব এবং জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে দুঃসম্পর্কের বিষয়টি প্রকাশ্য রুপ নিয়েছে।
সচিবের বিরুদ্ধে অসদাচারণের অভিযোগ সর্বজনস্বীকৃত হলেও সচিব সদস্যদের বিরুদ্ধাচারণ করতে গিয়ে একের পর এক মিথ্যাচার শুরু করেছেন।
দাবি করা হচ্ছে, সচিব গণি গাজী জনপ্রতিনিধিদের সরাসরি প্রতিপক্ষ হিসেবে নিয়ে সংবাদকর্মীদের কাছে ঢালাও মিথ্যা ও ভূল তথ্য পরিবেশন করছে। তথ্যানুসন্ধানে বাস্তবতার সাথে তার অভিযোগের কোন সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা।
সূত্র জানায়, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী মামলায় জড়িয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত নির্বাচিত চেয়ারম্যান গ্রেফতার এড়াতে আত্নগোপনে যাওয়ার পর থেকে খানিকটা বেসামাল হয়ে পড়েন সচিব। বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে ইতোপূর্বে ভাগবাটোয়ারর তথ্য ধামাচাপা দিতে এক কথায় নিজেকে আঁড়াল করতে সচিবের এহেন ভোল পাল্টানো আচারণ বলেও অভিযোগ করা হচ্ছে।
স্থানীয় কাশিমনগর ওয়ার্ড সদস্য শেখ রবিউল ইসলাম জানান, সচিব গণি গাজীর দেওয়া তথ্যে তারই আস্থাভাজন স্থানীয় এক সংবাদকর্মী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়েছেন যে, ‘কপিলমুনি ইউনিয়নে ২২-২৩ অর্থ বছরে প্রায় ২ লক্ষ টাকার মেহগনি ও গাব বৃক্ষ রোপণ করা হয়। কমিটির সভাপতি সম্পাদক ইউপি সদস্য পুরুষ ও মহিলা’।
এ প্রসঙ্গে ওয়ার্ড সদস্যের দাবি, ইউপি চেয়ারম্যান নিজে প্রকল্প করে তাদের দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে প্রকল্পটি করেছেন। তবে প্রকল্পে মানিকতলা প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে ইমরানের চাযের দোকান হয়ে সামাদ গাজীর বাড়ি অভিমূখে রাস্তায় বনায়ন হয়েছিল। যার কিছু গাছ বিনষ্ট হলেও বাকিগুলো বেঁচে আছে। তাছাড়া সচিব গণি গাজী নিজে সরেজমিনে পরিদর্শনপূর্বক ছবি তুলে ফাইল ফরোয়ার্ড করলে প্রকল্পের অর্থ ছাড় হয়। যদি প্রকল্পে কোন ঘাপলা থাকে তাহলে তিনিও তার বাইরে নয়।
এছাড়া বিবিজি অর্থায়নে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে গৃহিত প্রকল্পে ২ ও ৪ নং ওযার্ডে ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার ইটের সোলিং নির্মাণ ও ইটের রাস্তা সংষ্কার প্রকল্পে ইস্টিমেট অনুযায়ী কাজ না করেই টাকা উত্তোলনের চেষ্টা! সংক্রান্তে তার দাবি এমন প্রকল্প সম্পর্কে তিনি কিছু জানেনইনা। তাই ইস্টিমেট অনুযায়ী কাজ না করে এধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রশ্নই আসেনা। এমনকি এধরনের কোন প্রকল্প তার ওয়ার্ডের কোথাও কেউ বাস্তবায়ন করেছে কিনা তাও জানা নেই তার।
তিনি আরো বলেন, গত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে উত্তোলনকৃত ট্যাক্সের টাকায় ইউপি সদস্যদের অনারিয়াম প্রদান করে উদ্বৃত্ত আরো ১ লাখ টাকা তাদের যৌথ অপারেটরে ব্যাংকে রাখা হয় পরবর্তীতে ওই টাকার খোঁজ নিলে দেখা যায় একাউন্টে টাকা নেই। যার হিসাবও তিনি দেখাতে ব্যর্থ হন।
মূলত পরিষদে আগত বিভিন্ন বিষয়ে সেবা গ্রহিতাদের সাথে অসদাচারণ এবং অর্থ আত্মসাতের একাধিক ঘটনায় ইউএনও, জেলা প্রশাসকসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ১০ জন সদস্যের লিখিত অভিযোগের বরাদ দিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় খবর প্রকাশের পর কিংকর্তব্য অবস্থায় সচিব গণি গাজী ভূল প্রলাপ শুরু করেছেন।
সূত্র জানায়, অভিযুক্ত সচিব গণি গাজী গত সরকারের শাসনামলে আওয়ামী লীগের মনোনীত ইউপি চেয়ারম্যান কওছার আলী জোয়াদ্দারের দোসর হিসেবে এবং সাবেক ভূমি মন্ত্রীর লোক হিসেবে বিভিন্ন স্থানে নিজেকে জাহির করলেও অভ্যুত্থান পরবর্তী রাতারাতি ভোল পাল্টে ধোয়া তুলশীর পাতা প্রমানে বিভিন্ন স্থানে মালিশ শুরু করেছেন। এমনকি সাংবাদিক ম্যানেজে মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছেন তারই অনুসারী মহল বিশেষ কতিপয় ব্যক্তিরা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল গনি গাজীর ব্যবহৃত মোবাইলে ফোন বন্ধ থাকায় তার প্রতিক্রিয়া জানা সম্ভব হয়নি।
প্রিন্ট করুন
Discussion about this post