স্টাফ রিপোর্টারঃ চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তার কার্যালয়ের নাজির দেবাশীষ রুদ্রের বিরুদ্ধে সেবার নামে অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতি ও হয়রানিসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে।
ভূমি অফিসের চৌকাঠ পেরুলেই তার আইন মানতে হয়। এ কারণেই ভূমি সংক্রান্ত বিরোধও বেড়েছে বহুগুণ। দীর্ঘদিন ধরে কর্ণফুলী ভূমি অফিসে কর্মরত তিনি। অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে নিজের পকেট ভারি করা এ কর্মকর্তার বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে সম্প্রতি ভূমি মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসক, এডিসি রাজস্বসহ প্রশাসনের বিভিন্ন কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করা হয়।
ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ করেন না তিনি। গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে ভূমি অফিসে আসা অধিকাংশ ভুক্তভোগীই জানান, হয়রানি আর ভোগান্তি কী-তা এখানে না এলে বোঝা যায় না। অফিসের প্রত্যেক ধাপে ঘুষ দিয়েই ফাইল এসিল্যান্ডের টেবিল পর্যন্ত পৌঁছাতে হয়।
জানা যায়, দেবাশীষ রুদ্র মূলত অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক। সোজা বাংলায় কেরানি পদ। কিন্তু তিনি যে উপজেলায় গেছেন স্থানীয় এসিল্যান্ডকে ম্যানেজ করে নাজিরের দায়িত্ব পালন করেছেন। এটাই তাঁর আয়ের কৌশল।
কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের শাহমীরপুর ৬ নং ওয়ার্ডের মোঃ ইউসুফ আলীর ছেলে নুরনবী ও মৃত আহমদ হোসেনের ছেলে ইব্রাহিম সম্প্রতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কাছে লিখিত এ অভিযোগ করেন। অভিযোগে বলা হয়, নাজির দেবাশীষ ও সার্ভেয়ার ইউনুস অভিযোগকারীদের কোন মৌখিক শুনানি ও বক্তব্য না নিয়ে জমির কাগজপত্র না দেখে আদালতের রায় ডিগ্রীকে অবৈধ বলে বিপক্ষে অবস্থান নেন। বিভিন্ন ভাবে সেবাপ্রার্থীদের হয়রানি করেন। অশ্লীল ভাষায় কথা বলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ শাহমীরপুর মৌজার আরএস ১৪৯২ খতিয়ানের ৭১৪ দাগ ও বিএস ৪৮৯ দাগে ২২ শতাংশ নাল জমি সংক্রান্ত ৩৮৮৫ নং খতিয়ান সৃজন করে দিয়েছেন। যার নামজারি মামলা নং-৮৩৪৮।
আনোয়ার হোসেন নামে আরেক সেবাপ্রার্থী জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে অভিযোগ করেছেন, নাজির দেবাশীষ রুদ্র তাঁদের কোম্পানীর দুটি মুল খতিয়ান বাতিল করিয়েছেন এসিল্যান্ডকে ভূল তথ্য দিয়ে। আড়ালে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সবাইকে ম্যানেজ করেছেন। পরে ৩৪৮০ খতিয়ান সৃজন করে অনলাইনে প্রবেশ করিয়ে দিয়েছেন। যে খতিয়ানের অফিসিয়ালি ভাবে কোন হদিস নেই। এটি ছিল চরপাথরঘাটা ইছানগর মৌজার ১৬০৮ ও ১৬৪২ দাগে। যার নামজারি মামলা নং-৩২৮৭-২০২১-২১/২২ইং।
জানা যায়, এর আগেও ঘুষ ও দুর্নীতির কারণে নাজির দেবাশীষ বিভিন্ন উপজেলায় বির্তকিত ছিলেন। এর আগে তিনি সীতাকুন্ড, মীরসরাই, পটিয়া ও সাতকানিয়া উপজেলায় কর্মরত ছিলেন। এরপর বদলি হয়ে আসেন কর্ণফুলীতে। এখানেও একই অবস্থা। জনশ্রুতি রয়েছে এই ভূমি কর্মকর্তা ভূমি অফিসে ঘুষ বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। অবৈধভাবে অর্থ হাতিয়ে তিনি পরিবারের সদস্যদের নামে-বেনামে বিপুল পরিমান সম্পদ গড়েছেন। দুদক তদন্ত করলে অভিযোগের সত্যতা মিলবে বলে অভিযোগকারী নুরনবী ও ইব্রাহিম জানান।
এ ব্যাপারে নাজির দেবাশীষ রুদ্রের নাম্বারে গত এক সপ্তাহ যাবত মুঠোফোনে কল ও হোয়াটস আপে মেসেজ পাঠালেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে কর্ণফুলী সহকারি কমিশনার (ভূমি) পিযুষ কুমার চৌধুরী বলেন, আমি কয়েক মাস আগে কর্ণফুলী উপজেলায় যোগদান করেছি। সেবাপ্রার্থীরা সেবা না পেলে যে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারেন। তবে সুনিদির্ষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আর//দৈনিক দেশতথ্য//৮ আগষ্ট-২০২২

Discussion about this post