১৬ ডিসেম্বর ২০২১ থেকে ভারতের কলকাতাস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে ভিসা প্রসেসিং করবে একটি এজেন্সি। এব্যাপারে দিল্লির একটি এজেন্সির সাথে চুক্তি সাক্ষর সম্পন্ন করেছে ডেপুটি হাইকমিশন।
অভিযোগ উঠেছে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে দিল্লির এক অখ্যাত এজেন্সিকে ভিসা আউট সোর্সিং কাজ দিয়েছে কলকাতাস্থ বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশন অফিস। এমন অভিযোগ সংশ্লিষ্ট মহলে ব্যপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
যে এজেন্সিকে টেন্ডার ছাড়াই এই কাজ দেওয়া হয়েছে আগামী ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসে তাদের এই কার্যক্রম উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। কিন্তু তার আগেই বিতর্কের মুখে পড়লো প্রক্রিয়াটি।
আরও অভিযোগ উঠেছে, দিল্লির যে কোম্পানিকে ভিসা প্রসেসিং এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেই সংস্থার এ ধরনের কাজের কোনও পূর্ব অভিজ্ঞতাই নেই। নেই লোকবল বা পরিকাঠামোও। ওই এজেন্সি মাত্র ১ লক্ষ টাকা মূলধন বিনিয়োগ করে ৮ মাস আগেই কাজ শুরু করে দিয়েছে।
নির্ভরযোগ্য একটি কূটনীতিক সূত্র থেকে জানা গেছে বিনা টেন্ডারে এই সংস্থাকে বাছাইয়ের জন্য অবৈধ লেনদেন হয়েছে। সেই লেনদেনে রয়েছে অনেক বড় অংকের হিসাব।
এমন প্রশ্নও জোরেশোরে উঠেছে যে, এক লক্ষ টাকা যে কোম্পানির paid-up ক্যাপিটাল, কোন হিসেবে তাদের প্রায় ৯০ কোটি টাকার কাজ দেয়া হয়!
প্রসঙ্গত, করোনাকালের আগে কয়েক বছরে কলকাতার ডেপুটি হাইকমিশন অফিস বছরে এক লক্ষ কুড়ি হাজার ভিসা প্রদান করেছে।
প্রতি ভিসার জন্য নতুন এই কোম্পানিটি ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা প্রসেসিং ফি আদায় করবে। যার পরিমাণ হবে বছরে প্রায় ৯০ কোটি টাকা।
যিনি তড়িঘড়ি করে সব কিছু কাভার আপ করে নতুন কোম্পানিকে দিয়ে প্রসেসিং কাজ শুরু করাতে উঠে পড়ে লেগেছেন আগামী বছরের জানুয়ারিতে তাঁর বদলি হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগেই তিনি অনৈতিক সুবিধার ফায়দা গুটিয়ে ফেলতে তৎপর।
এদিকে, চুক্তি স্বাক্ষরের আগেই কোম্পানিটি ভিসা জমা নেয়ার জন্য কলকাতার বহু বাইরে সুদূর সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে একটি অফিস ভাড়া নিয়েছে। যেখানে ভিসার আবেদন জমা দিতে ও ভিসা নিতে যেতে মানুষকে চূড়ান্তভাবে নাকাল হতে হবে। কারণ কলকাতার বাইরে ওই এলাকায় গণপরিবহন একান্তই অপ্রতুল।
এই পদক্ষেপের ব্যাপারে কলকাতার ডেপুটি হাইকমিশনার তৌফিক হাসানকে ২/৩ দিন ধরে ফোন করা হয়েছে। তিনি কল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

তবে ডেপুটি হাইকমিশনের এক কর্মকর্তা বলেছেন তিনি নতুন এসেছেন তাই আলোচিত বিষয়ে তার কাছে কোন উত্তর নেই। দিল্লিস্থ হাই কমিশনের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছেন কাকে কাজ দেয়া হবে সেটা ডেপুটি হাই কমিশনের এক্তিয়ার। টেন্ডারের হয়েছে কিনা তা তিনি জানেন না।
কলকাতাস্থ ডেপুটি হাইকমিশনের অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে কূটনৈতিক মিশন থেকে নিয়োজিত এজেন্সিকে সহায়তার জন্য তাদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে আরও জোরালো করার হয়েছে। তা ছাড়াও প্রতিদিন শত শত লোক অফিসে ভিড় করে। একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও নিরাপত্তাকর্মীরের জন্য জন-সাধারণের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা একটি চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার। অন্যান্য কনসুলেটগুলির বেশিরভাগই নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তাদের আশেপাশে ভিড়ের অনুমতি দেয় না।
প্রসঙ্গত, কলকাতা অফিস ১৯৭১ সাল থেকে দেশের প্রথম বিদেশি মিশন এবং সেখানে ৫০ বছর ধরে ভিসা প্রদান করে আসছে। এর আগে অন্য কোনও কূটনৈতিক অফিস থেকে বাংলাদেশের ভিসা করাতে ভারতীয়দের অর্থ না লাগলেও, কলকাতা থেকে ভিসা করাতে প্রত্যেক ভারতীয়কে ৮০০ থেকে ৮৫০ রুপী করে ভিসা প্রসেসিং ফি বাবদ দিতে হবে এবার। বাড়তি অর্থ গুণে তারা পাবে দূরবর্তী স্থানে যাতায়াতের হেনস্থা।
এনিয়ে দৈনিক দেশতথ্যের অনলাইন এডিশনে গত ৩ জুলাই একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল। যার লিঙ্ক https://www.facebook.com/100008435146470/posts/2722543768036768/
এছাড়াও ২ জুলাই কলকাতার আজকাল বাংলাদেশের দৈনিক ইত্তেফাক সহএকাধিক সংবাদ মাধ্যমে ব্যপক লেখালেখিও হয়েছে।

Discussion about this post