কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: ১৪ মাসের ভোগান্তি মুক্তির দাবিতে রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীরা।
এসময় সংবাদ সংগ্রহে গেলে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে।
রবিবার সকাল ১১টায় কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ০১নং হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ন প্রধান সড়কে এই গাছের গুড়ি ফেলে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়ায় আবার নতুন মাত্রাযুক্ত হয় চলমান ভোগান্তিতে।
এসময় আন্দোলনকারীরা স্থানীয় জনপ্রতিনধিদের প্রতিও খিস্তি খেওড় ভাষায় কথা বলেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বলছেন, একাধিকবার সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলীকে তাগাদা দিয়েও কোন ফল পাননি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী নিজের দায় এড়িয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকেই দুষছেন। তার দাবি এই কাগুজি ঠিকাদারকে কাজ দিয়ে আমারাও বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে আছি।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, ১৪মাস পূর্বে স্থানীয় সরকারী প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে নির্মানাধীন কুষ্টিয়া হরিপুর সংযোগ সেতুর হরিপুরাংশে বাজিতপুর সড়ক নামে খ্যাত রাস্তাটি প্রশ^স্ত ও মেরামতের জন্য খুড়াখুড়ি করে স্বাভাবিক চলাচলের অযোগ্য করে রেখেছে কার্যাদেশ প্রাপ্ত মাগুড়া জেলার শেরপুর খামারপাড়া এলাকার ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স খন্দকার এন্টার প্রাইজ। একদিকে এলজিইডির কর্মকর্তাদের গাফিলতি ও অবহেলা অন্যদিকে একটা অযোগ্য ঠিকাদারকে কাজ দিয়ে এই ইউনিয়নসহ আরও ৩টি ইউনিয়নের জনগন চলাচলের প্রধান সড়কটি সম্পূর্নরূপে চলাচলের অযোগ্য করে রেখেছে।
একদিকে ধুলোবালিতে ঢেকে গেছে সবকিছু। অন্যদিকে যানবাহনের চাকার নীচে পড়ে রাস্তার খোয়া ছিটকে গিয়ে রক্তাক্ত জখমসহ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুকিতে জীবন কাটাতে হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই যানবাহন উল্টে যাত্রীরা আহত হওয়ার ঘটনা এখন নিত্য নৈমিত্তিক হয়ে গেছে। আমরা অনেক সয়েছি, আর না। হয় জরুরী ভিত্তিতে কাজ শেষ করে রাস্তাটি চলাচলের যোগ্য করে ভোগান্তির অবসান করুন নয়তো সংযোগ সেতু থেকে রাস্তার যোগাযোগ সম্পূর্নরূপে বন্ধ করে দেয়া হোক। আমরা দরকার হলে এলাকাবাসাী অন্যকোন বিকল্প ব্যবস্থা করে চলাচলের ব্যবস্থা করবো।
ভোগান্তির সত্যতা স্বীকার করেই ইউপি চেয়ারম্যান এম মুশতাক হোসেন মাসুদ বলেন, ‘রাস্তাটি এভাবে চলাচলের অযোগ্য ফেলে রেখে জনগনের সীমাহিন ভোগান্তি হচ্ছে জানিয়ে পরিষদের সকল সদস্য একসঙ্গে গিয়ে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে আবেদন নিবেদন করেও কোন সুফল হয়নি। চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী। আমি যতদুর জেনেছি কার্যাদেশ প্রাপ্ত ঠিকাদারের কাজ তোলার মতো আর্থিক সক্ষমতা নেই। অনেকদিন আগেই সেবিষয় জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানিয়েছি প্রয়োজনে কার্যাদেশ বাতিল করে নতুন করে দরপত্র আহ্বান করে রাস্তাটি দ্রুত মেরামতের উদ্যোগ নেন। কিন্তু কিছুই হলো না এখন পর্যন্ত। কি রহস্য জনক কারনে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ এই অযোগ্য ঠিকাদারকে ঝুলিয়ে রেখে শুধু শুধু জনভোগান্তি বিলম্বিত করছে’।
বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর অভিযোগ বিষয়ে এলজিইডি কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘প্রায় ২ কোটি টাকা প্রাক্কলন ব্যায়ে রাস্তাটি নির্মানে গত বছরের ২৩ জানুয়ারী মেসার্স খন্দকার এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। শুরুতে বুঝতে না পারলেও খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা বুঝতে পারি যে এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাগজপত্রের শর্তপূরন সাপেক্ষে কার্যাদেশ পেলেও বাস্তবে কাজ করার বাস্তব সক্ষমতা তার নেই। তারপরও আমরা বার বার তাদের তাগাদা দিয়ে কাজটি শেষ করার অনুরোধ করে আসছি। এখন তো আর পিছানোর কোন পথ নেই। ইতোমধ্যে কার্যচুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। দুই একদিনের মধ্যে যদি কাজ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে আমরা সরাসরি কার্যাদেশ বাতিলের সিদ্ধান্তে যাবো। যদিও আমরা ’সেটা করতে চাইনা, কারণ একটা কাজ একবার বাতিল হয়ে গেলে ওই প্রকল্পটাই অনিশ্চিত সময়ের জন্য ঝুলে যায়’।