খোকসার সহকারী শিক্ষা অফিসার ৬ স্কুলের সভাপতি হেড মাস্টার ও শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
কুষ্টিয়ার খোকসায় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র ও রুটিন মেরামত কাজের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় দুদক পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করেছে। আরো পৃথক তিনটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) কুষ্টিয়া আদালতে দায়েরকৃত মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল আখতারসহ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি তিনজন সভাপতি, এসব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, উপজেলা প্রকৌশলী এবং একজন সহকারী শিক্ষা অফিসারকে আসামী করা হয়েছে। দুদকের পক্ষে পৃথক তিনটি মামলার এজাহার করেছেন উপপরিচালক (সংযুক্ত) মোঃ আলমগীর হোসেন।
দুদক সূত্র জানায়, ১০১৯-২০ অর্থবছরে শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে উপজেলার বেশ কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র মেরামত ও উন্নয়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ আসে। বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে কাজ না করেই বেশির ভাগ স্কুলের প্রধান শিক্ষক, পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি, শিক্ষক সমিতির নেতা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ তুলে আত্মসাৎ করে বলে অভিযোগ ওঠে।
দুদকের তদন্তে অভিযোগের প্রমাণও মেলে। এ আলোকে ৬ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি, প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেয় দুদক প্রধান কার্যালয়।
এ সিদ্ধান্তের আলোকে এ মামলায় আসামী করা হয়েছে উপজেলার মাছুয়াঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিকর্ণ কুমার বিশ্বাস, খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বাবুল আখতার, মামুদানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসীম কুমার বিশ্বাস, সভাপতি মাহিমা রঞ্জন মৈত্র, ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজুর হক, সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং স্থানীয় সরকারী প্রকৌশলী অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুস সামাদ ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার হোসাইন মোহম্মদ বেলাল।
আসামীদের বিরদ্ধে দন্ডবিধি ৪০৯/১০৯ তৎসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এবং ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন , সমন্বিত জেলা কার্যালয়, কুষ্টিয়ার মামলা নম্বর ৬, ৭ ও ৮। তারিখ ১৮ এপ্রিল ২২ ইং।
প্রসঙ্গত ২০১৯-২০ অর্থ বছরে শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে উপজেলার বেশ কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র মেরামত ও উন্নয়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ আসে। বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে কাজ না করেই বেশির ভাগ স্কুলের প্রধান শিক্ষক, পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি, শিক্ষক সমিতির নেতা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা ভুয়া বিল ভাউচারে অর্থ তুলে আত্মসাৎ করে।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক সমন্বিত কুষ্টিয়া কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জাকারিয়া কিছুদিন পূর্বে সরেজমিনে তদন্ত করে বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে কোন কাজ না করে তা আত্মসাত করার প্রমাণ পান।
দুদক কর্মকর্তারা তদন্তকালে এসব স্কুলে মাটি ভরাটসহ অন্য যেসব সংস্কার কাজ হওয়ার কথা ছিল তার কিছুই হয়নি বলে জানতে পারেন। তদন্ত শেষে মামলার আরজি জানিয়ে দুদক প্রধান কার্যালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। এর পর দুর্নীতির বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। সম্প্রতি দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে বিভাগীয় কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়ে মামলা করার পাশাপাশি তদন্তকারী কর্মকর্তা ও তদারকি কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কয়েকজন প্রধান শিক্ষক জানান, দুর্নীতির বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবু হানিফ দুদক কর্মকর্তাদের ম্যানেজের কথা বলে প্রতিটি বিদ্যালয় থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা হারে চাঁদা তোলেন। তবে দুদক কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করতে না পারলেও আবু হানিফ সে অর্থ আর ফেরত দেননি।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য// এপ্রিল ১৯,২০২২//
![প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন](http://dailydeshtottoh.com/wp-content/plugins/wp-print/images/printer_famfamfam.gif)
Discussion about this post