ফজলুল হক, কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অবৈধ ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু চিমনী না ভাঙ্গায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।অপর দিকে একই অপরাধে বৈষম্যের জরিমানায় ক্ষুব্দ ইটভাটার মালিকরা।
এলাকাবাসী, ইটভাটা কর্তৃপক্ষ ও ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর কালিয়াকৈর উপজেলায় ৪৩টি ইটভাটার মধ্যে চালু আছে ২৭টি। এসব ইটভাটা তিন ফসলি জমি, নদীর তীরসহ লোকালয়ে অবস্থিত। এর মধ্যে উপজেলার দরবাড়িয়া এলাকায় রোববার দুপুরে পাশাপাশি তিনটি অবৈধ ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী মাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকীর নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) অনিন্দ্য গুহ, কালিয়াকৈর থানার এসআই আফজাল হোসেনসহ উপজেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা। অভিযান চালিয়ে ওই তিন অবৈধ ইটভাটার সাইট ওয়ালের আংশিক ভেঙ্গে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু চিমনী না ভাঙ্গার কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, কয়েক দিন পরই বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে এসব ইটভাটা আবার চালু হবে। ওই অবৈধ ইটভাটার মধ্যে জে.আর.বি ইটভাটাকে ৪ লক্ষ টাকা, এস.বি স্টারকে ৪ লক্ষ টাকা এবং ন্যাশনাল ব্রিকসকে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ইটভাটার মালিকদের অভিযোগ, পাশাপাশি ইটভাটা, অপরাধও একই ধরণের। অথচ অদৃশ্য কারণে এক ইটভাটাকে ২ লক্ষ টাকা কম জরিমানা করা হয়। একই অপরাধে বৈষম্যের জরিমানায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভুক্তভোগী অপর দুই ইটভাটার মালিক।
এস.বি স্টার ইটভাটার মালিক নাছির উদ্দিন বলেন, একই অপরাধে আমাকে ৪ লক্ষ টাকা জরিমানা করলেও অদৃশ্য কারণে পাশের ইটভাটা ন্যাশনাল ব্রিকসকে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। এটাকে কি সঠিক বিচার বলে?
অপর জে.আর.বি ইটভাটার মালিক সৈয়দ সোহেল রানা বলেন, আমার ইটভাটার ৪টি দেয়াল ভাঙ্গা হলেও একই অপরাধে ন্যাশনাল ব্রিকসের ২টি ছোট দেয়াল ভাঙ্গা হয়। অজ্ঞাত কারণে ওই ভাটাকে জরিমানাও করা হয়েছে। এটা কেমন বিচার?
কম জরিমানা করার বিষয়ে জানতে চাইলে ন্যাশনাল ব্রিকসের মালিক নুরুল ইসলাম জানান, আমাকে প্রশাসন ডেকে ছিল। আমি মেয়াদ উত্তীর্ণের কাগজপত্র দেখানোর কারণে আমাকে কম জরিমানা করেছেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী মাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী জানান, কাগজপত্র না থাকার কারণে তিনটি ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চালিয়ে ওই তিনটি ইটভাটা বন্ধ করে দিয়েছি। এছাড়া তিনটি ইটভাটাকে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
চিমনী কেন ভাঙ্গা হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, চিমনীটা ভেঙ্গে দিতে পারলাম না, সেটা বিষয় না। যেটা ভেঙ্গে দিয়েছি, সেটা ছাড়া ইটভাটা চালাতে পারবে না। এই চিমনী ভাঙ্গতে গেলে সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। পরবর্তীতে এসব ইটভাটা পরিচালনা করলে আমরা আরো কঠোর আইগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তবে আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//