ফজলুল হক, কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি:
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সরকারী এক কলেজের এইচএসসি পরিক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের এক নেতাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এসময় কুপিয়ে অপর এক ছাত্রলীগ নেতাকে গুরুতর জখম করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার চন্দ্রা ডাইনকিনি এলাকায় ওই কলেজের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত হলো, কালিয়াকৈর উপজেলার বরিয়াবহ এলাকায় মোতালেব হোসেনের ছেলে আল আমিন হোসেন (১৯)। সে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারী কলেজের ডিগ্রী ১ম বর্ষের ছাত্র ও ওই কলেজের দ্বাদশ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিল। অপর আহত হলো, ওই শাখা ছাত্রলীগের সদস্য কামরুল হাসান (১৯)। তাৎক্ষনিকভাবে তার ঠিকানা পাওয়া যায়নি।
এলাকাবাসী, সহকর্মী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার কালিয়াকৈর উপজেলার জাতির বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের এইসএসসি পরিক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান ছিল। ওই বিদায় বেলার অনুষ্ঠানে সাউন্ড সিস্টেমকে কেন্দ্র করে ওই সরকারী কলেজ শাখার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান গ্রুপের সঙ্গে দ্বাদশ শ্রেনী শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন গ্রুপের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে ছাত্রলীগের সিনিয়র নেতৃ বৃন্দ ও কলেজ কর্তৃপক্ষ মিলে ওই দু-গ্রুপের মধ্যে বিষয়টি মিমাংসার কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ওই ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই সরকারি কলেজের ছাত্রলীগের দু-গ্রুপ নিয়ে বসার কথা ছিল। কিন্তু এর আগেই বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার চন্দ্রা ডাইনকিনি এলাকায় ওই কলেজের পাশে দ্বাদশ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন ও কামরুলকে পেয়ে প্রকাশ্যে এলোপাথারী কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। তাদের গ্রুপের সদস্যদের অভিযোগ, বিদায়ী অনুষ্ঠানের সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কালিয়াকৈর ছাত্রলীগের সভাপতি ও ওই কলেজের ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইমন খান ও ওই কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানের নেতৃত্বে সাকিব, হৃদয়, আকাশ, কাউসার, আলামিনসহ বেশকিছু ছাত্রলীগের নেতাকর্মী দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপারী কুপিয়ে তাদের জখম করে। পরে আহতদের ফেলে রেখে হামলাকারী ছাত্রীলীগের নেতাকর্মীরা একটি বাসে উঠে সাভারের দিকে চলে যায়।
এসময় তাদের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে গিয়ে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই ছাত্রলীগ নেতা আল আমিনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এছাড়াও গুরুতর আহত কামরুল হাসানকে উন্নত চিকিৎসক জন্য টাঙ্গাইলের মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে নেওয়া হয়।
কালিয়াকৈর থানার ওসি এএফএম নাসিম ও তদন্ত ওসি তরিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
ওই সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সুফিয়া বেগম জানান, শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিদায় অনুষ্ঠান করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোন ধরণের র্যাগ-ডে পালনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। সেই অনুষ্ঠানে কিছু অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনার জেরে একটি পক্ষ হামলা চালিয়ে এক ছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়াও অপর এক ছাত্রকে আহত করা হয়।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারী কলেজের এইএসসি পরিক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানে দুই গ্রুপের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে তাদের সিনিয়র ও কলেজের শিক্ষকরা বিষয়টি মিমাংসা করার কথা ছিল। তবে তদন্ত শেষে হত্যাকান্ডের প্রকৃত কারণ উদঘাটন হবে। এছাড়াও এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সোহাগ//দৈশতথ্য//জুন০৬/০৬/২০২৪

Discussion about this post