ফজলুল হক, কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসে বিলের পানিতে নৌকা ডুবে নিখোঁজের ১৭ ঘন্টার পর মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে মায়ের লাশ উদ্ধার করেছে ডুবুরী দল।
তার শিশু ছেলে এখনো নিখোঁজ রয়েছে। উপজেলার ভাউমান টালাবহ এলাকায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত হলেন, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার তক্তারচালা এলাকার সৌদি প্রবাসী হাবিবুর রহমানের স্ত্রী সাদিয়া আক্তার (২৩)।
এলাকাবাসী ও ফায়ার সার্ভিস সুত্রে জানা গেছে, গত কয়েক বছর আগে কালিয়াকৈর ভাউমান টালাবহ এলাকার সাইফুল ইসলামের মেয়ে সাদিয়া আক্তারের সঙ্গে পারিবারিকভাবে সৌদি প্রবাসী হাবিবুর রহমানের বিয়ে হয়। ১০/১২ দিন আগে সাদিয়া তার তিন বছরের ছেলে আব্দুল্লাহকে নিয়ে বাবার বাড়ি ভাউমান টালাবহ এলাকায় বেড়াতে আসেন। গত সোমবার বিকেলে সাদিয়া ও পরিবারের পাঁচজন নৌকা যোগে পাশের বগাবাড়ি বিলে বেড়াতে যান। কিন্তু বিকেল ৬টার দিকে ওই বিলের কৈডাঙ্গা কালভার্টের নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় স্রোতে তাদের নৌকাটি ডুবে যায়। এসময় দাদা ফরমান উদ্দিন, দাদী সুরভানু বেগম ও ছোট বোন মরিয়ম কোনভাবে পাড়ে উঠে। কিন্তু স্রোতের পানিতে ডুবে নিখোঁজ হন নাতনি সাদিয়া ও সাদিয়ার শিশু ছেলে। পরে আশপাশের লোকজন ছুটে গিয়ে নিখোঁজ মা সাদিয়া ও ছেলে আব্দুল্লাহকে উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়।
খবর পেয়ে কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গেলেও তারা নিখোঁজ মা-ছেলেকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। পরের দিন মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরের টঙ্গী থেকে একদল ডুবুরী ঘটনাস্থলে গিয়ে নিখোঁজ মা-ছেলেকে উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। অনেক খোঁজাখুজি করে নিখোঁজের ১৭ ঘন্টা পর বেলা ১১টার দিকে মা সাদিয়ার লাশ উদ্ধার করে ডুবুরী দল।
কিন্তু নিখোঁজের একদিন পেরিয়ে গেলে নিহতের ছেলে আব্দুল্লাহকে উদ্ধার করতে পারেনি ডুবুরী দল। তাকে উদ্ধারে ডুবুরী দলের সঙ্গে স্থানীয় লোকজন যারা মাছ ধরে তারাও ছোট ছোট নৌকা নিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনার খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম আজাদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে লাশের দাফন-কাপনের জন্য শোকাহত পরিবারকে ২০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করেন চেয়ারম্যান।
কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের ষ্টেশন কর্মকর্তা ইফতেখার রায়হান চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, টঙ্গী থেকে ডুবুরী দল ঘটনাস্থলে গিয়ে চেষ্টা চালিয়ে নৌকা ডুবে নিখোঁজ মায়ের লাশ উদ্ধার করেছে। এখনো নিহতের শিশু ছেলে নিখোঁজ আছে। তবে ওই নিখোঁজ শিশুকে উদ্ধারের কাজ অব্যাহত রয়েছে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম আজাদ জানান, নৌকা ডুবে মায়ের মৃত্যু ও তার শিশু ছেলে নিখোঁজ। এটা একটা মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে শোকাহত পরিবারকে লাশ দাফন-কাপনের জন্য আর্থিক সহযোগীতা করা হয়েছে।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//

Discussion about this post