কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধিঃ কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বোডিং এর অংশের ধান কাটতে গিয়ে ইউনুস আলী (৬০) নামে এক কৃষককে কুপিয়ে হত্যা করেছে বোন জামায় ও তার লোকজন।
শনিবার (১৮ মে) সকালে উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের খোর্দ্দবনগ্রামে নিহতের মালিকানাধীন বোডিং এর ধান কাটতে গেলে মাঠের মধ্যেই নৃশংস ভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয় তাকে। এসময় গুরুতর যখম হন আরো চারজন।
আহতদেরকে প্রথমে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং এদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কা জনক হলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নিহত ইউনুস আলী খোর্দ্দবন এলাকার মৃত আকবর আলীর ছেলে এবং হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত শিলাইদহ ইউনিয়নের মাজগ্রামের হাসেন আলীর পুত্র মুক্তার হোসেনের শ্যালক।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই বছর পূর্বে ছেলে-মেয়ে উভয়ের সম্পর্কের জের ধরে মুক্তার শেখের মেয়ে জুঁই এর সঙ্গে ইউনুস আলীর ছেলে হোসেনের পারিবারিকভাবে মৌখিক বিয়ে দেয়া হয়। বনি-বনা না হওয়ায় বিয়ের কয়েক মাসের মাথায় উভয় পক্ষের সমঝোতায় কনে পক্ষকে ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা প্রদান সাপেক্ষে বিষয়টির নিষ্পত্তি করা হয়। পরবর্তীতে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে একাধিক দিন ধার্য করে ও ছেলেপক্ষ কণে পক্ষকে মিটমাটের ধার্যকৃত টাকা না দিলে বাড়তে থাকে অন্ত কলহ।
উল্লেখ্য, ঘটনার কয়েকদিন পূর্বেও ধান কাটতে গিয়ে একইভাবে বাধার সম্মুখীন হন ইউনুস আলী। সহিংসতা ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি আঁচ করে গত ১৬ ই মে বৃহস্পতিবার কুমারখালী থানায় একটি অভিযোগ ও দায়ের করেন তিনি। মুক্তার হোসেনকে প্রধান আসামি করে তিনজনের নাম উল্লেখ পূর্বক ১২ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে অভিযোগ দেন তিনি। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তাতেও। অভিযোগ প্রদানের একদিনের মাথায় আজ সকালে মুক্তার হোসেনের হাতেই খুন হন তিনি।
এ বিষয়ে নিহত ব্যক্তির ছেলে হোসেন আলী জানান, সকালে পানি সেচের ভাগের ধান কাটতে গেলে তার মামা মুক্তার সহ ২০-২৫ জন দেশীয় অস্ত্র কাঁচি, রামদা, হাসুয়া নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় তার বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তিনি সহ অন্তত পাঁচ জন আহত হয়েছেন। তিনি থানায় মামলা করবেন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ক্ষয়-ক্ষতির ভয়ে মালামাল নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। সহিংসতা এড়াতে এলাকায় মোতায়ন রয়েছে পর্যাপ্ত পুলিশ।
এ বিষয়ে কুমারখালী সদর হাসপাতালের আর এম ও ডা সাইদ সাকিব বলেন, আজ সকালে শিলাইদাহ ইউনিয়নের খোর্দ্দবন গ্রাম থেকে কয়েক জন মারামারির রোগী এসেছিল। এদের মধ্যে ইউনুস আলীর হাসপাতালের আসার পূর্বে মৃত্যু হয়। সেই সাথে দুইজন কুমারখালীতে চিকিৎসাধীন আছে এবং একজনের অবস্থা আংশকাজনক হওয়ায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে।
এবিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আকিবুল ইসলাম জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একজন নিহত হয়েছে। অপরাধীধের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
এবিষয়ে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তিনাথ জানান, দীর্ঘদিন ধরে দুই পরিবারের মধ্যে দ্বদ্বে চলে আসছিলো। সকালে ইউনুস আলী ধান কাটতে গেলে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে মুক্তার হোসেনের লোকজন। এঘটনায় দুজন কে আটক করা হয়েছে।
খালিদ সাইফুল // দৈনিক দেশতথ্য // ১৮ মে ২০২৪

Discussion about this post