গোফরান পলাশ, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: একই স্থানে দাড়িয়ে সূর্যোদয়, সূর্যাস্তের বিরল সৌন্দর্য উপভোগে দেশ বিদেশের পর্যটকরা ছুটে আসেন সাগর কন্যা কুয়াকাটায়। পদ্মা সেতু কুয়াকাটার সাথে সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করার পর থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক আসছেন কুয়াকাটায়।
অথচ কলাপাড়া-কুয়াকাটা মহাসড়কের আলীপুর থ্রি পয়েন্ট থেকে পাখিমারা স্পট পর্যন্ত সড়কে অসংখ্য খানা খঁন্দক সৃষ্টি হলেও সংস্কারের কোন উদ্দোগ নেই কর্তৃপক্ষের। সড়ক জনপথ বিভাগের পটুয়াখালী’র নির্বাহী প্রকৗশলী সড়কের এমন বেহাল দশার শীঘ্রই পরিবর্তন হবে বলে আশ্বস্ত করলেও অদ্যবধি সংস্কার করা হয়নি সড়কটি।
জানা গেছে, মামলা জটিলতায় দীর্ঘ এক যুগেও সংস্কার হয়নি কলাপাড়া-কুয়াকাটা মহাসড়কের ১১ কিলোমিটার অংশের সংস্কার কাজ। ২০০৯-২০১৪ অর্থবছরে কলাপাড়া উপজেলার পাখিমারা বাজার থেকে আলীপুর মৎস্যবন্দরের শেখ রাসেল সেতু পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিমি অংশের উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করে খুলনার দি রূপসা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তখন এর নির্মাণ ব্যয় ছিল ২০ কোটি টাকা। কাজটি মানসম্মত না হওয়ায় ঠিকাদারের বিল আটকে দেয় পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ কর্তৃপ। এ নিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে দু’টি দল সরেজমিন তদন্তও করেন।
তদন্তকারী দলের প থেকেও কাজের গুণগত মান ভালো হয়নি বলে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। নিম্নমানের কাজের কারণে তখন সড়ক ও জনপথ বিভাগ ৮ কোটি টাকার বিল আটকে দেয়।
তবে এ কাজ বাবদ ১২ কোটি টাকার বিল পরিশোধ করা হয়। এ ঘটনার পরিপ্রেেিত দি রূপসা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের প্রতিনিধি রাশেদুল ইসলাম চুড়ান্ত বিল দাবি করে ২০১৪ সালে আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলার কারণে ১১ কি.মি. সড়কের ওপর সংস্কার কাজে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন। যার ফলে গত দশ বছর ধরে সংস্কারবিহীন অবস্থায় পড়ে থাকে পাখিমারা বাজার থেকে শেখ রাসেল সেতু পর্যন্ত এ অংশের সড়কটি। তবে কুয়াকাটা পর্যটন এলাকায় যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হওয়ার কারণে সওজ কর্তৃপ এ অংশে জরুরী মেরামতের কাজ করে সচল রাখার চেস্টা করে সড়কটি। প্রবল বর্ষনে সড়কের বেশিরভাগ স্থানে বর্তমানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক স্থান দেবে গেছে। সামান্য বৃষ্টিতেই কাঁদা-পানিতে একাকার এখন সড়কটি। এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রায়শ:ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। বিকল হচ্ছে যানবাহন। তাই দ্রুত সড়কটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন পর্যটকসহ স্থানীয়রা। সড়ক ও জনপথ বিভাগ দুই দফায় ইটের খোয়া ফেলে গর্ত গুলো ভরাট করলেও কয়েকদিন যেতে না যেতেই আবার পূর্বের ন্যায় হয়ে গেছে।
ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় আগত পর্যটক সোহরাব হোসেন বলেন, ’কুয়াকাটার প্রবেশমুখে এসে কলাপাড়ার পরে সড়কটি অনেক খারাপ। ২০ মিনিটের পথ আসতে সময় লেগেছে এক ঘণ্টারও বেশি। সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান তিনি।
কুয়াকাটা-আলীপুর এলাকার অটোরিকশা চালক মো. আলিম হাওলাদার বলেন, ’সড়কের বেহাল অবস্থা। অনেকবার যাত্রিসহ গাড়ি নিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছি। এই সড়ক দিয়ে গাড়ি চালালেই অটোরিকশার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ সহ ব্যাটারী নস্ট হয়ে যায়। এ জন্য সড়কের ওই অংশে এখন গাড়ি চালাই না।’
সড়ক ও জনপথ বিভাগের পটুয়াখালী নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মাদ জামিল জানান, এখন আপাতত মামলা জটিলতা নেই। সড়ক সংস্কারের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বর্ষার কারণে এখন কাজ করা সম্ভব নয়। আগামী তিন থেকে চার মাসের মধ্যে সংস্কার কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।
দেশতথ্য//এইচ//