ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মনোনীত চেয়ারম্যানদের নিয়ে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভা করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিবি করিমুন্নেছা।
হঠাৎ করেই আওয়ামী লীগপন্থী চেয়ারম্যানদের নিয়ে মিটিং করায় অবাক ও বিস্মিত হয়েছেন কুষ্টিয়াবাসী।
গত বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় উপজেলা সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
ছবিটি ছড়িয়ে পড়ার পর এ সভা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা কমিটির এ সভায় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-দপ্তর সম্পাদক ও ফুলবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, চিথলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক বাবলু, মালিহাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আকরাম হোসেন, বহলবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান, আমবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, বারুইপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান ডা. শফিকুল ইসলাম মন্টু, সদরপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম, আমলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান একলিমুর রেজা সাবানসহ উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানরা।
এ ব্যাপারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিরপুর উপজেলার অন্যতম সদস্য আবু সাইদ বলেন, ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের দোসর, জুলাই গণহত্যার আসামিদের নিয়ে কিসের আইনশৃঙ্খলা মাসিক সভা? ওরা নিজেরাই তো গণহত্যার আসামি, যাদের হাতে এখনো আমার ভাইদের হত্যার রক্ত। তাদের নিয়ে একই টেবিলে কিভাবে বসলেন ইউএনও! নাকি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসরদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়েছে ইউএনও বিবি করিমুন্নেছা? এর জবাব তাকে দিতে হবে। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সাব্বির আহমেদ বলেন, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠনের দায়িত্ব পড়েছে কি তার ওপর? আমরা বুঝতেছি না। একেরপর এক পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে উস্কানি দিয়ে যাচ্ছে তাদের নেত্রী শেখ হাসিনা। সেই স্বৈরাচারের দোসরদের নিয়ে কিসের আইনশৃঙ্খলা সভা করলেন ইউএনও? এর জবাব চায় জনতা।
উপজেলা জামায়াতের আমীর খন্দকার রেজাউল করিম বলেন, বিষয়টি শুনেছি। এটি দুঃখজনক, অবশ্যই এর প্রতিবাদ করবো। মিরপুর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহমত আলী রব্বান বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে এই ইউএনও এখানে এসেছেন। আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে তার বরাবরই সুসম্পর্ক দেখি। আওয়ামী লীগ নেতাদের বাইরে অন্য কোনো লোকদের সাথে ইউএনও বিবি করিমুন্নেছা মিটিং করেন না। উনি আসলে কি করতে চান? কি করেন এটা আমরা বুঝি না। আমাদের দলের সিনিয়র নেতাদের বিষয়টি জানিয়েছি।এ বিষয়ে মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউওনও) বিবি করিমুন্নেছাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা একটা কমিটি আছে, যারা যারা সদস্য তারাই এ মিটিংয়ে আসেন। এটা প্রতিমাসেই হয়। ৫ আগস্টের আগেও হয়েছে, পরেও হচ্ছে। পুরো বাংলাদেশে একইবাবে করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্যদের বাইরে তো আমি কাউকে নিয়ে এ মিটিং করতে পারবো না।
![প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন](http://dailydeshtottoh.com/wp-content/plugins/wp-print/images/printer_famfamfam.gif)
Discussion about this post