কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: অনুমোদনহীন পণ্য বিক্রির আড়ালে নিষিদ্ধ মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এম এল এম) ব্যবসার মাধ্যমে গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এক্সসিলেন্ট ওয়ার্ল্ড গ্রুপ নামের এক প্রতিষ্ঠান। গ্রাহকদের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ করেছেন ওই প্রতিষ্ঠানের সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তা।
সরেজমিনে কুষ্টিয়া দুর্নীতি দমন অফিসের পার্শ্ববর্তী এক্সিলেন্ট ওয়ার্ল্ড গ্রুপ এর জেলা ডিপো অফিসে গিয়ে দেখা যায়, গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাৎ এর টাকা ফেরত দেয়ার ভয়ে শুধু পিয়ন দিয়ে চালু রেখেছে অফিসটি। ডিপোতে রয়েছে অনুমোদনহীন ব্যবহার্য পণ্যর পাশাপাশি নানা প্রকারের ভোগ্য পণ্য। এক্সিলেন্ট ওয়ার্ল্ড গ্রুপের জেলা ডিপো অফিস সহকারীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, প্রতিষ্ঠানটি নেটওয়ার্ক বিজনেস অর্থাৎ একজনের হাত থেকে অন্য হাত অর্থাৎ প্রতি প্রোডাক্টের পয়েন্টের মাধ্যমে প্রতি ৫০ পয়েন্টে যুক্ত হয়ে একজন। এভাবে স্তরে স্তরে নিষিদ্ধ এমএলএম বিজনেসের মতো কমিশন পয়েন্টের মাধ্যমে চলে এই ব্যবসা।
এবিষয়ে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মৃত ওলিউল আলমের ছেলে এক্সিলেন্ট ওয়ার্ল্ডের কুষ্টিয়া শাখার সাবেক সদস্য জাকির হোসেন টিটুর সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলাম এক্সিডেন্টের সাথে এ সময় তারা বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে আমার কাছ থেকে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে।
এই প্রতারক প্রতিষ্ঠান অর্থ নিয়ে পণ্য না দিয়ে আমাকে সর্বশান্ত করেছে। এসময় তিনি আরো বলেন, গেল ৬ই জুলাই ২০২৪ তারিখে আমি আমার আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ কুষ্টিয়া সদর এসিল্যান্ড বরাবর জানালে, তিনি সরেজমিনে কুষ্টিয়া শহরস্থ চৌড়হাস এলাকায় টিটিসি এর সামনে এক্সসিলেন্ট ওয়ার্ল্ড এর ডিপো অফিসে আসলে সেখানে উপস্থিত এক্সসিলেন্ট ওয়ার্ল্ড এগ্রো ফুড এন্ড কসমেটিক লি. এর চেয়ারম্যান মো: জাহাঙ্গীর আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের পর মডেল থানায় সোপর্দ করেন। থানায় অবস্থানকালে চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ৩শত টাকার স্ট্যাম্পের মাধ্যমে আমার প্রাপ্য টাকার মধ্যে ৫লক্ষ টাকা পরিশোধ করেন এবং বাকি টাকা ১৫ই জুলাই পরিশোধ করবেন বলে অঙ্গীকার করে লাপাত্তা হযন। এসময় টিটু আরো জানান, এক্সিলেন্ট ওয়ার্ল্ড আমার মতো আরো অনেকের কাছ থেকে শত শত কোটি টাকা নিয়ে প্রতারণা করছে। এ ধরনের প্রতারণা এখনো তারা চলমান রেখেছে।
এক্সিলেন্ট ওয়ার্ল্ড কুষ্টিয়ার জিএম পদধারী মোমিনের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এক্সিলেন্ট ওয়ার্ল্ড এর ব্যবসা ও কুষ্টিয়া মডেল থানায় প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমকে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন এবং সে সময় জাকির হোসেন টিটুকে ৫লক্ষ টাকা প্রদানসহ ৩শত টাকার স্ট্যাম্পে উল্লেখিত নির্ধারিত তারিখের মধ্যে বাকি টাকা পরিশোধের অঙ্গীকারের বিষয় স্বীকার করেন।
উল্লেখিত, পূর্বেও প্রচলিত ব্যবসার আড়ালে এমএলএম ব্যবসা পরিচালনা ও সরকারের অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান হতে এক্সিলেন্ট ওয়ার্ল্ডের পন্যের ছাড়পত্র না থাকায় কুষ্টিয়ার ডিপো অফিস সিলগালা করে জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি এনএসআই কর্তৃক কুষ্টিয়ায় ব্যবসা পরিচালনা করার নিষেধাজ্ঞা থাকলেও জেলার বিভিন্ন জায়গায় তারা এই অবৈধ এমএলএম ব্যবসা চালিয়ে আসছে।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//আগস্ট ২৮,২০২৪//
প্রিন্ট করুন
Discussion about this post