নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অংশ হিসেবে কুষ্টিয়ায় লিফলেট বিতরণ করেছে জেলা বিএনপি।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার বিকেলে এনএস রোর্ডে বিএনপির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, সাবেক এমপি, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনের নেতৃত্বে লিফলেট বিতরণ করেন জেলা বিএনপি।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও কুষ্টিয়া শহর বিএনপির সভাপতি কুতুব উদ্দিন আহমেদ, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক একে বিশ্বাস বাবু, জেলা বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মেজবাউর রহমান পিন্টুসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
লিফলেটটের বিষয়বস্তু হুবহু তুলে ধরা হলো:
লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে আজ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির সীমাহীন মূল্য বৃদ্ধির ফলে কোটি কোটি মানুষ নিঃস্ব, ক্ষুধার্ত ও ঋণগ্রস্থ। এই শীতের মওসুমেও এক কেজি কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা, পেঁয়াজ ১২০টাকা, মুলা ৪০ টাকা, কচুরমুখী ১০০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ১০০টাকা, শশা ৭০ টাকা, মুরগীর উচ্ছিষ্ট পাখনা ও পা ১২০ টাকা আর এক হালি মুরগীর ডিম ৮০ টাকায় কিনে সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে শেষ সম্বল বিক্রি করতে বাধ্য হওয়া কোটি কোটি দরিদ্র মানুষ ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের আশংকায় কাতর ও ক্ষুব্ধ। ২০২২ সালের সিপিডি সংলাপে যেখানে ঢাকায় ৪ জনের পরিবারের মাসিক নিম্নতম ব্যয় ১৮ হাজার ১১৫ টাকা বলে দেখানো হয়েছে সেখানে ২০২৪ সালে কার্যকর গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরী নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ হাজার ৫ শত টাকা। দেশে বেশির ভাগ শ্রমিকের মজুরী এর চেয়েও অনেক কম। অবৈধ সরকারের অপশাসন, লাগামহীন লুটপাট, দূর্নীতি ও অর্থপাচারের ফলে দেশের অর্থনীতি ধ্বংসপ্রাপ্ত এবং দেশ ও দেশের জনগণের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। প্রতি কিলোমিটার রাস্তা তৈরীতে ১১ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ের মত অস্বাভাবিক ও বিশ্বে সর্বোচ্চ ব্যয় করা হয়েছে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে, পায়রা সমুদ্র বন্দরে, রূপপুর পারমানবিক বিদুৎ কেন্দ্রে এবং মেট্রোরেলসহ সকল মেগা প্রকল্পে শুধুই মেগা দুর্নীতি করার জন্য। গত ১৫ বছরে বিদেশে পাচার করা হয়েছে ১৩ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। ব্যাংকগুলো লুটের পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৮১ মিলিয়ন ডলার চুরি করা হয়েছে। জনগণের টাকা লুট ও পাচার করে ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও সুবিধাভোগীরা গড়ে তুলেছে বিভিন্ন দেশে সেকেন্ড হোম, বেগম পাড়া এবং দুবাইয়ে গুলশান-৩।
অন্যদিকে দেশের বৈদেশিক ঋণ বেড়ে হয়েছে ১০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশী। দেশীয় ব্যাংক ও অর্থনৈতিক খাত থেকে নেয়া ঋণের পরিমান আরও বেশি। তারপরেও বৈদেশিক মুদ্রা ও ব্যাংকে নগদ টাকার সংকট চলছে। বাড়ছে মুদ্রা স্ফীতি ও মূল্য স্ফীতি। ঋণ করে লুট করা এই টাকা জনগণকেই শোধ করতে হবে।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়ে জনগণের ভোট ছাড়াই ডামী নির্বাচনের মাধ্যমে একদলীয় সরকার ও এক ব্যক্তির শাসন কায়েমের জন্য দেশের স্বার্থ ও সাবভৌমত্ব বিকিয়ে দেয়া হয়েছে বিদেশী প্রভুদের কাছে। ক্ষমতার লালসা এবং লুটপাটের মাধ্যমে অর্জিত অঢেল সম্পদ রক্ষার জন্য দেশের স্বার্থ, জনগণের প্রয়োজন, গণতন্ত্র সব কিছুকে জলাঞ্জলী দেয়া হয়েছে। নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হয়েছে রাজনীতি, সমাজ, সংস্কৃতি, প্রশাসন, বিচার ও শিক্ষা ক্ষেত্রে।
খালিদ সাইফুল // দৈনিক দেশতথ্য // ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪