কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজে কর্মচারী দিয়ে শ্রেণি কক্ষে পাঠদান করানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কুষ্টিয়া জেলার মধ্যে এটি একটি অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। জানা যায়, কর্মচারী দিয়ে শ্রেণি কক্ষে পাঠদান করানো নিয়ে নানা রকম সমালোচনা ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
সমালোচনার জন্ম দিলেও প্রতিদিন তাদের দিয়ে শ্রেণি কক্ষে পাঠদান করানোসহ পরীক্ষার হলে কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। কর্মচারী দিয়ে শ্রেণি কক্ষে পাঠদান ও পরীক্ষার হলে দায়িত্ব পালনের বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষক জানান, আমরা খুবই বিব্রতবোধ করি যখন দেখি একজন কর্মচারী পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নসহ কক্ষ পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মো: জসীমউদ্দিন, মো: শরিফুল ইসলাম ও মো: তৌহিদুল ইসলাম এসএসসি / সমমান শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে ২০২৩ সালে ল্যাব সহকারী পদে যোগদান করেন। কলেজ শাখার কয়েকজন শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, তারা কলেজ শাখায় ল্যাব সহকারী পদে যোগদান করলেও তাদের মূল দায়িত্ব পালন না করে অধ্যক্ষ মহোদয় শ্রেণি কক্ষে পাঠদান করাচ্ছেন যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
তারা আরো জানান, তাদের পদমর্যাদা কর্মচারীর সমতুল্য। মাউশি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত একজন শিক্ষকের যদি বিএড ডিগ্রি থাকে তাহলে তার বেতন গ্রেড ১০ এবং বেতন স্কেল হবে ১৬০০০ টাকা। আর যদি বিএড ডিগ্রি না থাকে তাহলে বেতন গ্রেড ১১ এবং বেতন স্কেল ১২৫০০ টাকা।
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শূন্য পদের বিপরীতে শুধু প্রবেশ পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়, কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয় না। কর্মচারী নিয়োগ শুধু ম্যানেজিং কমিটি দিতে পারে।
বিদ্যালয় সূত্রে আরো জানা যায়, মো: জসীমউদ্দিন, মো: শরিফুল ইসলাম ও মো: তৌহিদুল ইসলাম এদের বেতন গ্রেড ১৮ এবং বেতন স্কেল ৮৮০০ টাকা। ফলে তারা প্রতিষ্ঠানের সহায়ক কর্মচারী। এ ব্যাপারে শিক্ষা অফিসের সাথে কথা বললে তারা জানান, একজন ল্যাব সহকারীর পদমর্যাদা কর্মচারীর সমতুল্য, এ ধরনের পদে নিয়োগপ্রাপ্তদের দিয়ে কখনোই শ্রেণি কক্ষে পাঠদান এবং পরীক্ষার হলে কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্ব দেওয়া যাবে না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২১ মে ২০২৪ তারিখে প্রকাশিত মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে- কর্মচারী অর্থ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত কোনো কর্মচারী যিনি শ্রেণি কক্ষে পাঠদান করেন না। এবং শিক্ষকের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে- শিক্ষক অর্থ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পূর্ণকালীন শিক্ষাদানের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত যে কোনো বিষয়ের শিক্ষক, প্রদর্শক ও ইন্সট্রাকটর।
আবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি সংক্রান্ত নীতিমালা ২০২৩ এর প্রজ্ঞাপনেও বলা হয়েছে- কর্মচারী অর্থ শিক্ষক ব্যতীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দাপ্তরিক / ল্যাব/ শপ সহকারী বা অন্যান্য কাজে নিয়োগপ্রাপ্ত পূর্ণকালীন কর্মরত ব্যক্তি। বিদ্যালয়ের অষ্টম ও নবম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিনিধিকে জানান, আমরাতো জানিই না যে তারা কর্মচারী পদে নিয়োগপ্রাপ্ত। আমরাতো জানি তারা স্কুলের স্যার। তারাতো আমাদের ক্লাস নেন।
অভিযুক্তদের সাথে কথা বললে তারা জানান, স্কুল থেকে আমাদেরকে ক্লাস ও পরীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয় তাই আমরা দায়িত্ব পালন করি। এ ব্যাপারে অধ্যক্ষর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
এহ/06/11/24/ দেশ তথ্য