এনামুল হক, কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়া সদর হাসপাতাল থেকে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ৪০ জন পরিচ্ছন্ন কর্মী ও ১৪ সিকিউরিটি গার্ড। দীর্ঘ ৭ মাস বেতন ভাতা বন্ধ থাকায় হিমসিম খেতে হচ্ছে অসহায় এই কর্মীদের।
প্রতি বছরের জুন থেকে জুন পর্যন্ত টেন্ডার এবং রিটেন্ডারের মাধ্যমে বেতন হয় তাদের। কিন্তু এ বছরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যারা টেন্ডার করে আনবেন তারা কেউ এ বছর রিটেন্ডার করতে পারেনি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে সাথে যারা জড়িত ছিলেন ৫ই আগস্টের পর থেকে তারা নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা যায়।
এদিকে বেতনের আশায় চাকরি ধরে রাখতে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন এই পরিচ্ছন্ন কর্মীরা। ধার দেনা করে আর চলতে পারছেন না তারা। এই কর্মের উপরে নির্ভর তাদের পরিবার। কেউ পাঁচ বছর, কেউ আট বছর এবং কেউবা ১২ বছর ধরে রয়েছে এই কর্মের সাথে শুধু তাই নয় পরিশ্রমের বিনিময়ে বেতন পেলেও প্রতি বছরে দিতে হয় মোটা অংকের উৎকোচের টাকা।
ভুক্তভোগীরা জানান, প্রতিবছরের জুন টু জুন টেন্ডারের মাধ্যমে আমাদের বেতন হয়ে থাকে। এ বছরেও টেন্ডার হয়েছে কিন্তু ৫ই আগস্টের পরে বেতন দিতে পারেননি কর্তৃপক্ষরা। আমরা প্রায় সাত মাস কাজ করেছি এখন পর্যন্ত কোন ধরনের সুযোগ সুবিধা পাইনি। এর আগে আমরা হাসপাতালে সংবাদ সম্মেলন করেছিলাম। তখন নতুন মেডিকেল অফিসার ডাঃ হোসেন ইমাম স্যার আমাদেরকে ডেকে বলেছিল আপনারা কাজ করতে থাকেন অবশ্যই বেতন পাবেন। কিন্তু কোন সমাধান মিলেনি। পরবর্তীতে পুনরায় আমরা তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম কে জানাই তিনি আমাদের বলেছিলেন ডিসি অফিসের মিটিংয়ে আমি ডিসি কে জানিয়েছি তবুও আলোর মুখ দেখতে পাইনি। আমাদের পরিবার আছে, বাড়িতে ছেলে-মেয়ে আছে তাদের লেখাপড়া খরচ এবং সংসার খরচ আছে কিভাবে চলব বুঝতে পারছি না। ধার দিনা করে চলছি বেতনের আশায় সেটাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আমরা অনেক খারাপ পরিস্থিতির মাধ্যমেও কোন দিন ডিউটি বন্ধ করিনি। ৫ই আগস্টের দিন হাসপাতালের অবস্থা দেখলে বুঝতে পারতেন আমরা কতটা পরিশ্রম করেছি। কত ছাত্ররা অসহায় হয়ে এই হাসপাতালের আনাচে-কানাচে আহত অবস্থায় পড়েছিল তাদের পাশেও আমরা সর্বোচ্চ সেবা ও সহযোগিতা করেছি। কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের কাছে আমাদের একটায় দাবি আমাদের বিষয়টি একটু সমাধান করে দিক।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, জুন মাসের পর থেকে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের টেন্ডার শেষ হয়ে গেছে। জুন মাসের পরে তাদের বলা হয়েছে তাদের চাকরি নেই। নতুন করে আবার যখন টেন্ডার হবে তার পর আবার আমরা কার্যক্রম শুরু করব। আমরা অনুমতি পাবো তার পরে। তখন তারা বললো আমরা কাজ করতে থাকি স্যার তার পরে যখন আবার টেন্ডার হবে তখন আমাদের নিয়েন। আমরা নতুন করে টেন্ডার করার কার্যক্রম চালাচ্ছি।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তৌফিকুর রহমান জানান, তারা কি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কে জানায়নি। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আমাকে কিছু বলেনি। আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
উল্লেখ্য, টেন্ডারের মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন কর্মী নিয়োগ পেয়েছিলেন সাবেক এমপি মাহবুব উল আলম হানিফ ও তার ভাই সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতার ক্যাডার বাহিনী।