জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে দেবরের হামলায় আহত জাহানারা খাতুন ওরফে সাজেদা (৫৫) নিহত হয়েছেন। ওই নারীকে গাছের সাথে বেঁধে পেটানো হয়।
সোমবার দিনগত রাতে রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাহানারা খাতুন মৃত্যু বরণ করেন। তিনি চলতি জুলাই মাসের ৫ তারিখে দেবরের হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
জাহানারা খাতুন উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কোমরভোগ খালপাড়া গ্রামের আকর শেখ ওরফে আকর মাঝির স্ত্রী। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মৃতদেহ গ্রামে এসে পৌঁছেনি। তবে গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হামলাকারীরা ঘরবাড়ি ফেলে আত্মগোপন করেছে।
নিহত বৃদ্ধার ছোট ছেলে তানজিদ হোসেন জানান, ঘটনার দিন সকালে তার মা জাহানারা খাতুন তাদের খাবার তৈরী করছিলেন। এমন সময় চাচা আকমল হোসেন লোকজন নিয়ে তার বাবার (আকর মাঝির) দখলীয় মেহগনি বাগানের জমিতে ঘর তুলতে থাকে। এ সময় সাজেদা তাদেরকে বাঁধা দেওয়া চেষ্টা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আকমল হোসেন ও তার ছেলেরা জাহানারাকে দঁড়ি দিয়ে বেঁধে মারতে থাকেন। সে ও তার বোন এগিয়ে গেলে তাদের উপরেও হামলা করা হয়। এক পর্যায়ে গ্রামবাসীরা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল এবং সর্বশেষ ঢাকা মেডেকেল কলেজে স্থানন্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মা মারা যান। তিনি মায়ের হত্যাকারী চাচা ও তার ছেলেদের বিচারের দাবি করেন।
এদিকে স্ত্রীর শোকে পাথর হয়ে গেছেন বৃদ্ধ আকর শেখ।
স্ত্রীর লাশের অপেক্ষায় আছেন। তিনি জানান, তার বাবা কারছেদ আলী শেখ প্রায় ২৮ বছর আগে তাদের দুই ভাই এর নামে গ্রামের রাস্তা সংলগ্ন এই ১৯ শতক জমি রেজিস্ট্রি করে দেন। ছোট ভাই আকমল তার জমি দখল বুঝে নেন। কিন্তু হঠাৎ করে ছোট ভাই (আকমল) ও তার ছেলেরা তার দখলীয় মেহগনি বাগানের মধ্যে ঘর তোলার চেষ্টা করেন। এ সময় জাহানারা দেবরকে বাঁধা দেবার চেষ্টা করলে তারা সবাই মিলে বৃদ্ধাকে গাছের সাথে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারপিট করে। তিনি স্ত্রীর হত্যাকারী ভাই ও ভাস্তেদের বিচার দাবি করেন।
অভিযুক্ত আকম হোসেনের সাথে কথা বলার জন্য তার বাড়িতে যাওয়া হয়। কিন্তু বৃদ্ধার মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর তার গোটা পরিবার আত্মগোপন করেছে।
স্থানীয় ওয়ার্ডের মেম্বর সোবাহান আলী জানান, বৃদ্ধা জাহানারা খাতুনকে দেবর ও তার ছেলেরা মারপিট করেছিল। ঘটনা স্থলে উপস্থিত পুলিশের এসআই আকরাম হোসেন জানান, বৃদ্ধার উপর হামলার অভিযোগ পেয়ে তিনি গ্রামে এসেছিলেন। দখলদারদের বাঁশ খুটি সড়িয়ে জমিটি দখল মুক্ত করেছিলেন। বৃদ্ধার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর গ্রামে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করেছেন।
খালিদ সাইফুল, দৈনিক দেশতথ্য, ২৫ জুলাই ২০২৩

Discussion about this post