কখনো বা গহনা কখনো বা টাকা, টাকা দিলেই সর্বোরোগের চিকিৎসা মেলে হরহামেশাই। ভন্ড কবিরাজের খপ্পরে মানিক (১৮) নামের এক যুবকের আত্মহত্যার ঘটনা সহ সর্ব শান্ত কয়েকটি পরিবার আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে কুষ্টিয়ার হরিপুরে ইউনিয়নের পুরাতন কুষ্টিয়া গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের মেয়ে শেফালী বেগম।
এ ঘটনায় প্রতারণার স্বীকার লোকজনসহ এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, শেফালি কবিরাজ দীর্ঘদিন যাবৎ সংসারে অশান্তি, স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্ব, বন্ধ্যাত্ব, পছন্দের মানুষকে পাইয়ে দেওয়া, অবাধ্য সন্তানকে নিয়ন্ত্রণে আনাসহ নানাবিধ সমস্যার সমাধান দিয়ে আসছে । এ কাজে তার কাছে থাকা জ্বিন তাকে সহযোগিতা করে বলে তিনি রোগীদেরকে বোঝান। এসব ক্ষেত্রে তিনি প্রতারণার অংশ হিসাবে প্রতি দিন তার নিজ বাড়িতে আসন বসান। এসময় বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে যারা আসেন তাদের কারো বাড়িতে শত্রুতাবশত তাবিজ, কারো বাড়িতে পুতুল পুঁতে রাখা আছে এবং এ কারণেই বিভিন্ন সমস্যায় ভূগছেন বলে জানান তিনি।
একই সঙ্গে জ্বিনের সাহায্যে এসব তাবিজ বা পুতুল তুলে এনে সমস্যার সমাধান করে দেয়ার আশ্বাস দেন। এজন্য তিনি মোটা অংকের টাকা ও ৮/১০ হাজার টাকার মালামাল নেন। এরপর বাড়ি বন্ধ করার জন্য মোটা অংকের টাকা, তাবিজ দেয়ার জন্য টাকা এবং জনপ্রতি নজরানা ফি নেন।
কিন্তু জ্বিনের মাধ্যমে তাবিজ-কবজ তুলে আনার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও প্রতারণা। তার প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাৎ এর একাধিক অভিযোগ রয়েছে কুষ্টিয়া মডেল থানায়।
উল্লেখ্য, গত রোববার ১৪ মে রাত ১১ টায় কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের পুরাতন কুষ্টিয়া এলাকার মো. শহিদুল ইসলামের ছেলে মো. মানিক ইসলাম (১৮) চিরকুটে লিখে আত্মহত্যা করে।
চিরকুটে মানিক লিখেন, ‘যদি পারো তোমরা শেফালির মতো মুখোশধারী মানুষকে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দাও না হলে আমার মতো অনের নিরপরাধ মানুষের প্রাণ চলে যাবে। খালা তুমি কি বলেছ আমার মতো চোর মরে গেলে কি হয় আমি চোর নয় বিশ্বাস কর আমি চোর নয়’।
এই বিষয়ে শেফালির সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, আমরা এমন একটি অভিযোগ পেয়েছি তবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খালিদ সাইফুল // দৈনিক দেশতথ্য // ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩