শেখ দীন মাহমুদ,খুলনা প্রতিনিধি: খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে নবজাতককে চুরির ২৩ দিনের মাথায় তাকে
উদ্ধার করেছ পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যায় সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার পাড়বিষ্ণুপুর এলাকা থেকে চুরি হওয়া শিশুটিকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই শিশুটির পালক বাবা-মাকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। তবে নবজাতককে চুরি করা সেই নারীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সোনাডাঙ্গা থানার এস আই তোফায়েল আহমেদ তোফু জানান, হারিয়ে যাওয়া ওই শিশুটিকে উদ্ধারে আমাদের আপ্রাণ চেষ্টা ছিল।
বিভিন্নস্থানে সোর্স লাগানো ছিল। সোর্স মারফত আমরা খবর পাই হারিয়ে যাওয়া শিশুটি নড়াইল কালিয়া উপজেলার পাড়বিষ্ণুপুর এলাকার রাশেদ মোল্লার বাড়ির ভাড়াটিয়া রানু খানম ও লালন মোল্লা দম্পত্তির কাছে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় স্থানীয় র্যাবের সহায়তায় আমরা পাড়বিষ্ণুপুর এলাকার রাশেদ মোল্লার বাড়িতে পৌঁছে শিশুটির সম্পর্কে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা সদোত্তর দিতে পারেনি।এরপর স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে প্রকৃত সত্য প্রকাশ পায়। স্থানীয়রা জনায়,
শিশুটি ওই নিসন্তান দম্পতি ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে ঢাকা থেকে ক্রয় করেছেন। তবে লালন মোল্লা পেশায় একজন কৃষক। শিশুটি কিনতে যে টাকা দিয়েছেন
সেটি দেওয়ার মতো সামর্থ তার নেই। সেকারণে শিশুটি কিভাবে নড়াইলে এবং কার কাছ থেকে তারা তাকে কিনেছেন মূলত সেসব ব্যাপারে জানতে পালক বাবা ও মা কে থানা হেফজতে নেওয়া হয়েছে।
সোনাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মমতাজুল হক বলেন, নবজাতক চুরির ঘটনায় শিশুটির পিতা ৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। ওই মামলায় ৫ জন কারাগারে রয়েছে। তবে শিশুটিকে
উদ্ধার করতে পারা পুলিশের একটা বড় সাফল্য। শিশুটি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে রয়েছে। তবে ওই নবজাতককে চুরির সাথে যে বা যারা দায়ী তাদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
নবজাতকের মা রানিমা বেগম জানান, গত ২৪ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে তারা হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুরের দিকেই তিনি সুস্থ বাচ্চা জন্ম দেন। বিকেল পাঁচটার দিকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়া হয়। তারা ছাড়পত্র নিয়ে বাগেরহাট
ফকিরহাটে বাড়িতে যাওয়ার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের গেটে
আসেন। এসময় নবজাতকের বাবা তুরাব আলি ও আত্মীয়স্বজন অ্যাম্বুলেন্স ভাড়ার ব্যাপারে কথা বলছিলেন। অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়া নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালক ও
রোগীর আত্মীয়স্বজনের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তা হাতাহাতি পর্যন্ত পৌঁছায়। নবজাতকটি ছিল তার খালার কোলে। হাতাহাতি ঠেকাতে সে কোলে থাকা নবজাতককে পাশের এক নারীর কাছে দেয়। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে বাচ্চা নিতে
গেলে ওই নারীকে সেখানে না পেয়ে হাসপাতাল সহ আশপাশের এলাকায় বহু খুঁজেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় মুহূর্তেই পুরো হাসপাতালে শোরগোল পড়ে যায়।
সর্বশেষ তিনি বাচ্চাকে চিনতে পেরেছেন জানিয়ে তাকে ফিরে পাওয়ায় সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//
প্রিন্ট করুন
Discussion about this post