দীর্ঘ প্রতীক্ষার প্রহর চুকিয়ে ঘটলো দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের লালিত স্বপ্নের বাস্তবায়ন। খুলনা থেকে এই প্রথম ২২৫ জন যাত্রী নিয়ে স্বপ্নের পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকার পথে ছুটলো সুন্দরবন এক্সপ্রেস। বুধবার (১ নভেম্বর) রাত ৯ টা ৪৫ মিনিটে খুলনা রেল স্টেশনের ১ নম্বর প্লাটফর্ম থেকে ট্রেনটি ছেড়ে যায়। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে সেটি ঢাকায় পৌঁছায়। আর নতুন এ রুটে চলাচলের ফলে গন্তব্যে পৌঁছাতে জনপদের মানুষদের বেঁচে যাবে অন্তত ২ ঘন্টা মূল্যবান সময়।
এদিকে খুলনা থেকে স্বপ্নের পদ্মাসেতু হয়ে ট্রেন যাত্রার প্রথম সারথি হতে পেরে উচ্ছ্বাসিত যাত্রীরাও।
পদ্মাসেতু হয়ে প্রথম ট্রেন যাত্রায় যাত্রী হতে পেরে আবেগাপ্লুত হয়ে কুয়েট মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টের সহকারী অধ্যাপক হারুন অর-রশিদ বলেন, এর আগেও সুন্দরবন ট্রেনে চড়ে ঢাকায় যাওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। তবে সেই অভিজ্ঞতার সাথে আজকেরটার বিস্তর ফারাক। আর পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা পৌঁছানোর ফলে একদিকে যেমন সময় বাঁচবে অপরদিকে তেমনি ট্রেন যাত্রায় নতুন দিগন্তের সূচনা হলো।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নাগরিক নেতা এডভোকেট বাবুল হাওলাদার জানান, পদ্মা সেতু হয়ে খুলনা ভায়া ঢাকা যাতায়াতে ট্রেন যোগাযোগের যে নব দিগন্তের সূচনা হলো তা নিঃসন্দেহে দক্ষিণ জনপদের সর্বোস্তরের মানুষদের জন্য আশির্বাদ স্বরূপ। আর এ অঞ্চলের মানুষ হিসেবে এই রুটটা আরও শর্ট করে ট্রেনের বগির সংখ্যা বাড়ানোসহ ভাড়া কমানোর দাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ করেন তিনি।
খুলনা রেল স্টেশনের মাস্টার মাসুদ রানা জানান, খুলনা থেকে ঢাকাগামী আন্ত:নগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস রুট পরিবর্তন করে পোড়াদাহ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, ভাঙা হয়ে পদ্মাসেতু দিয়ে ঢাকা যাচ্ছে। নতুন এই রুট পরিবর্তনের ফলে পূর্বের তুলনায় যাত্রী সংখ্যা বাড়বে একইসঙ্গে সময় কমবে অন্তত ২ ঘন্টা। আজ ২২৫ জন যাত্রী নিয়ে খুলনা ছেড়েছে ট্রেনটি।
নতুন এই রুটে ট্রেন চলাচলে যাত্রীদের আগ্রহ বেড়েছে দাবি করে তিনি জানান, খুলনা থেকে রাত ৯ টা ৪৫ মিনিটে সুন্দরবন ট্রেনটি ছেড়ে যাবে। আর ঢাকায় পৌছাবে ভোর ৫ টা ১০ মিনিটে। অপরদিকে ঢাকা থেকে সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে ৩ টা ৫০ মিনিটে খুলনায় এসে পৌছাবে।
তার থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, সর্বোমোট ১৩টি কোচ নিয়ে যাতায়াত করবে সুন্দরবন ট্রেনটি। রাতে খুলনা থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন ট্রেনের মোট আসন সংখ্যা ৮৬০টি। এরমধ্যে শোভন চেয়ার ৪৯২টি, এসি বার্থ ৪৮টি ও স্নিগ্ধা ৩২০টি। আর ঢাকা থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা ট্রেনের আসন সংখ্যা ৯০৮টি। এরমধ্যে শোভন চেয়ার ৪৯২টি, এসি সিট ৯৬টি ও স্নিগ্ধা ৩২০টি।
প্রসঙ্গত, খুলনা থেকে ঢাকা পর্যন্ত সুন্দরবন আন্ত:নগর ট্রেনের ভাড়া (ভ্যাট ছাড়া) ধরা হয়েছে, শোভন চেয়ার শ্রেণির ৫০০ টাকা, প্রথম সিট শ্রেণির ভাড়া ৬৬৫ টাকা, প্রথম বার্থ শ্রেণির ভাড়া ৯৯৫ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণির ৮৩০ টাকা, এসি সিট শ্রেণির ভাড়া ৯৯৫ টাকা ও এসি বার্থ শ্রেণীর ভাড়া ১৪৯৫ টাকা।
যদিও সরাসরি ট্রেন চালুর পাশাপাশি সংশ্লিষ্ঠদের পূর্বের তুলনায় ভাড়া কমানোর দাবি জানিয়েছন প্রথম যাত্রার সারথিসহ বিস্তীর্ণ জনপদের মানুষ।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//নভেম্বর ০২,২০২৩//

Discussion about this post