প্রতিবেদক গাংনী: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহারবাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে নানা অনিয়ম ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
নামজারী অনুমোদন, খাজনার রশিদ অনুমোদন কিংবা হোল্ডিং খোলার মতো সাধারণ সেবা পেতেও দীর্ঘদিন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সেবাপ্রার্থীরা।
জানা গেছে, বর্তমান ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আতিকুর রহমান যোগদানের পর থেকেই সেবা প্রার্থীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে অফিসে গেলে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আতিকুর রহমান সাংবাদিকদের প্রবেশে আপত্তি জানান এবং বলেন- ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে আসতে হবে। এসময় তিনি অফিসের কাজ ছেড়ে মোবাইল ফোনে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়।
ধর্মচাকী গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে প্রবাসী সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি একটি হোল্ডিং খোলার জন্য দুই সপ্তাহ ধরে ঘুরছি। এছাড়াও বিবিধ ১৫১/১৩/১৫০ নামজারি বাতিল পূর্বক সংশোধনের জন্য আমি ১ বছর ধরে ভূমি অফিসে ঘুরছি। অবশেষে ২৩/০৭/২০২৫ তারিখে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদ্দাম হোসেন সব কাগজপত্র দেখে শুনানির পর নামজারি বাতিলের নির্দেশ দেন। কিন্তু দুই মাস পার হলেও ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আতিকুর রহমান সেই নির্দেশ কার্যকর করেননি, বরং আমাকে ঘুরাচ্ছেন। তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
অন্যদিকে, একই গ্রামের প্রতিবন্ধী শামসুল ইসলাম জানান, তিন মাস ধরে আমি নামজারির জন্য ঘুরছি। তিন মাস পরে এসে বলছে কাজ হয়নি। আমি প্রতিবন্ধী, হাঁটাচলা করতে পারি না, তবুও আমাকে হয়রানি করছে।
চৌগাছা গ্রামের স্কুলশিক্ষক নজরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আমি জমির খাজনা দেওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করেছি। শুধু অনুমোদনের জন্য আতিকুর রহমান আমাকে এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে বলেন। সাত দিন পরে আবার যেতে বলেন। এভাবেই চলছে ভূমি সেবা।
জোড়পুকুরিয়া গ্রামের কৃষক এনায়েত আলী বলেন, আমি হোল্ডিং খোলার জন্য দুই দিন অফিসে গিয়েছি, হয়নি। আজকেও গিয়েছিলাম, আতিকুর রহমান আমাকে বের করে দেন এবং বলেন পরে আসতে। আগে হোল্ডিং খোলার জন্য ২০০ টাকা আর নামজারির রিপোর্টের জন্য ৩০০ টাকা নিয়েছে। এবার কত নেবে জানি না।
ভুক্তভোগীদের প্রশ্নে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আতিকুর রহমান সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের অফিসে ঢোকার অনুমতি কে দিয়েছে? ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ নিয়ে আসবেন, তারপর কথা বলবো।”
হোল্ডিং খোলা বা অনুমোদন না দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসিল্যান্ডের সাথে যোগাযোগ করুন।
এছাড়া অনিয়ম নিয়ে বারবার প্রশ্ন করা হলে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন এবং আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আনোয়ার হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি একটি মিটিংয়ে আছি, পরে কথা বলবো।

Print Date & Time : 15 September 2025 Monday 1:05 am