গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চিৎলা পাটবীজ খামারে ‘নাজিম বাহিনীর’ দখলদারি, সরকারি সম্পদ লুট ও দুর্নীতির বিষয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের জেরে সাংবাদিক মাহাবুল ইসলাম ও এসএম ফয়েজের বিরুদ্ধে মিথ্যা মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সাংবাদিক মাহাবুল দৈনিক দেথতথ্য বাংলা ও দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকার প্রতিনিধি ও গাংনী উপজেলা প্রেসক্লাবের সদস্য। এবং এসএম ফয়েজ দৈনিক আমাদের মাতৃভূমির ক্রাইম রিপোর্টার।
সোমবার (১৪ জুলাই) “দৈনিক দেশতথ্য” ও দৈনিক “সময়ের সমীকরণ” পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে চিৎলা সরকারি পাটবীজ খামারে চলমান অনিয়ম, সম্পদ লুট, শ্রমিক হয়রানি ও একটি প্রভাবশালী চক্রের কর্তৃত্বের বিষয়টি প্রকাশিত হয়। এর দুই দিন পর নাজিম, বকুল ও এক অজ্ঞাত ব্যক্তি মিলে, খামারের যুগ্ম পরিচালক (জেডি) মোর্শেদুল ইসলামের ইন্ধনে, সাংবাদিক মাহাবুল ইসলাম ও এসএম ফয়েজের বিরুদ্ধে মেহেরপুর আমলী আদালতে (গাংনী) একটি মানহানির মামলা করেন।
ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয় সাংবাদিক মহল, মানবাধিকারকর্মী এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদের সৃষ্টি হয়।
গাংনী উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সিনিয়র সাংবাদিক জুলফিকার আলী কানন বলেন, “যে সাংবাদিক সাহসের সঙ্গে দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেছেন, তাকে মামলা দিয়ে হয়রানি করে দুর্নীতিবাজদের রক্ষা করা হচ্ছে। এটি স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর সরাসরি হামলা।”
অভিযোগ উঠেছে, চিৎলা পাটবীজ খামারের অনিয়ম নিয়ে লিখলেই সেই সাংবাদিককে হুমকি ধামকি দেয়া হয়।
এমনকি কিছুদিন আগেও সাংবাদ প্রকাশের জেরে এসএম ফয়েজের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সাংবাদিক মাহাবুল ইসলাম জানান, “চিৎলা পাটবীজ খামারের বর্তমান জেডি মোর্শেদুল যোগদানের পর থেকেই দুর্নীতির ছড়াছড়ি। আর এসব অনিয়ম দুর্নীতির নেতৃত্ব দেন নাজিম উদ্দিন, তার সহযোগী বাঁশবাড়িয়া গ্রামের বকুল, জাব্বার আলী, আঃ সালাম, মো. মুছা, জুগিন্দা গ্রামের শফিকুল ইসলাম কাদাসহ আরো কয়েকজন মিলে একটি দুর্নীতিবাজ চক্র গড়ে তুলেছে।”
তিনি জানান, এই চক্রের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের আগের দিন মামলার ২ নম্বর বাদী বকুল তাকে নিউজটি না করার জন্য অনুরোধ করেন এবং সন্ধ্যায় কফি হাউজে দাওয়াত দেন। কিন্তু তিনি দাওয়াত গ্রহণ না করে সংবাদটি প্রকাশ করেন। এর ফলেই ওই চক্রটি প্রতিশোধমূলক এই মামলা করে।
মাহাবুল আরও জানান, প্রতিবেদন প্রকাশের পরের দিন শ্রমিক শফিকুল ইসলাম তার গ্রামের বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে হুমকি দিয়েছেন।
এদিকে, চিৎলা পাটবীজ খামারে চলমান লুটপাট ও অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত করে দুর্নীতিবাজদের শাস্তির আওতায় আনার দাবিও জানিয়েছে স্থানীয় এলাকাবাসী। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কেউ কেউ বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

Discussion about this post