Print Date & Time : 24 August 2025 Sunday 10:59 pm

গাভী ও বাছুর খুইয়ে অঝোরে কাঁদছে বৃদ্ধা

তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

চম্পাবতীর দেড় লাখ টাকা মুল্যের কালো একটি গাভী ও সাদা বাছুর নিয়ে গেছে চোরেরা।
দীর্ঘ দিন পোষে বড় করা একমাত্র সম্বল হারিয়ে সত্তোরোর্ধ্ব চম্পাবতী নায়েক এখন দিশেহারা। তারা কান্না থামছেই না। অঝোরে কাঁদছেন।

প্রতিদিনকার মতো তার বাড়ির পাশে ছনখলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে রশি দিয়ে খোঁটায় বেঁধে গরু চড়াতেন। স্বামীহারা বিধবা চম্পাবতী মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভুনবীর ইউনিয়নের ছনখলাবস্তি এলাকার বাসিন্দা।

সোমবার (১লা এপ্রিল) দুপুর একটার দিকে দুটি গাভী ও একটি বাছুরকে জল খাওয়াতে স্কুল মাঠে যান চম্পাবতী। তিনি গিয়ে দেখতে পান গাভী ও বাছুরটি নেই। শুধু খুটাটা পড়ে আছে। এর পর থেকে চম্পাবতী ও দুই ছেলের বউ, ছেলে নির্মল ও পরিমল নায়েকসহ আত্মীয় স্বজন সকলে মিলে গাভী ও বাছুর খুঁজে বেড়াচ্ছেন। আশা পাশের এলাকা গান্ধী, আমরাইল, রাবার বাড়ী বৈরাগী, রায় বাড়ী, মুছাই, কালেঙ্গা, সাতষট্টি, আটষট্রি, সাতাইশ, উনত্রিশ, জেবি, সাতগাও, সিন্দুরখান সব জাগায় খোঁজা হয়েছে। আঐ রেলের উত্তরে সারা ভুনবীর ইউনিয়ন এলাকায় খোঁজা খুঁজি করা হয়। যদি কেউ পান জানাতে স্থানীয় মসজিদের মাইকিং ও করানো হয়। কিন্তু গত দুদিনেও সারা এলাকায় হণ্যে হয়ে বাছুর ও গাভী দুটিরই কোনও হদিস মিলেনি।

চম্পাবতীর দেবর ধনঞ্জয় নায়েক ছিলেন নি:সন্তান। তিনি মারা যান তিন চার বছর আগে। ধনঞ্জয়ের বউয়ের ফান্ডের টাকা তুলে একটি গাভী কিনেন। এই গাভী লালন পালনের পর দুটি গাভী ও একটা বাছুর হয়।

গত সোমবার সকালে এ দুটি গাভী ও একটি গরু বাছুর স্কুল মাঠে খুটায় বেঁধে ঘাস খেতে দেন। দুপুরে গরুগুলোকে মার গুড়া জল খাওয়াতে গিয়ে দেখেন তিনটি গরুর মধ্যে দুই টি নেই। দিনে দুপুরে একটি গাভী ও বাছুর নিয়ে যাওয়ার পর থেকে এ বাড়িতে এক শোকের ছায়া সৃষ্টি হয়েছে। পরিবারের কারো মন ভাল নেই। একমাত্র সহায়সম্বল গরুদুটি হারিয়ে সবাই অঝোরে কাঁদছে। কোথাও গিয়ে পাচ্ছেন না এতটুকু শান্তনা। কোথায় পাবে গরু! কোথায় পাবে এর বিচার!

চম্পাবতী কেঁদে কেঁদে বলেন, ‘দুইদিন ধরে ঘরের চুলায় আগুন নেই। মুড়ি আর চা খেয়ে কোন রকম দিন কাটাই। শুধু গরু বাছুর খোঁজে দিন রাত কাটছে পরিবারের সকলের।’

চম্পাবতী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দুইহাত করো জোড় করে প্রার্থনা জানিয়ে কেঁদে কেঁদে বলেন, “আপনারে প্রার্থনা কইরা কই। আপনি এইটার ব্যবস্থা নেন।

তুমি এই চোররে কোনরকম দমন করো মা। আর কিভাবে আমরা চা শ্রমিক ভালো হইয়া চলমু এটার আপনি একটা ব্যবস্থা নিবেন। আপনার কাছে আমার এই অনুরোধ মাগো।

দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//