মুখতার হোসেন,গোদাগাড়ী(রাজশাহী) :স্বল্প পুঁজি, কম পরিশ্রম ও অল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বস্তায় আদা চাষ।
প্রাচীনকাল থেকে একমাত্র পাহাড়ি এলাকায় আদা চাষ হয়ে আসছিলো। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে নতুন নতুন ধারণা এবং উন্নত গবেষণার কারণে বস্তায় আদা চাষ এখন কৃষিতে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
বাড়ির আঙিনা, বাড়ির ছাদ, ছায়াতল অনাবাদি ও পতিত জমিসহ বিভিন্ন জায়গায় বস্তায় কিংবা টবে বালু, মাটি ও জৈব সার মিশিয়ে আদা চাষ হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানাযায় গোদাগাড়ী উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৭২ হাজার ৮৯০টি বস্তায় আদা রোপন করা হয়েছে।
গোদাগাড়ী পৌর এলাকার কৃষক শামসুল আলম বলেন প্রথমবার তিনি উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের সহযোগিতা নিয়ে চললতি মৌসুমে এক হাজার ২০০টি বস্তায় আদা চাষ করেছেন। ১ হাজার ২০০ আদার বস্তায় খরচ ধরা হয়েছে ৮০ হাজার টাকা।
পোকামাকড়ের উপদ্রব খুব বেশি না হলে শুধুমাত্র জৈব সার, ছাই, মাটি এবং বালি দিয়েই মিটছে আদা চাষের ঝামেলা।
তিনি বলেন, এলাকা বা জমিতে আদা চাষে পোকা আক্রমণ করলে পুরো আদা নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু বস্তায় ১টি বস্তায় পোকা আক্রমণ করলে একটি নষ্ট হয়। শামসুল আলমের আদা চাষের পদ্ধতি দেখে আগামী মৌসুমে তরুণ চাষীরা বস্তায় আদা চাষে ঝুকতে পারে।
মাটিাকাটা ইউনিয়নের বিদিরপুর বোগদামারীর কৃষক মের ফারুক বলেন সর্বপ্রথম অনলাইনে ভিডিও দেখে বস্তায় ও কৃষি অফিসের পরামর্শে আদা চাষের প্রতি উদ্বুদ্ধ হয়েছি, প্রথমবার আমি ১ হাজার বস্তায় আদা চাষ শুরু করি। প্রথম বছরেই বস্তায় আদা চাষ আমার ৭০-৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বস্তায় আদা চাষ করেছি যেখানে জৈব সার, মাটি এবং বালু ব্যবহার করেছি। মাঝে মধ্যে পোকার উপদ্রব দেখা দিলে সামান্য পরিমাণ কীটনাশক ব্যবহার করছি। আশা করছি ১ হাজার বস্তা থেকে ২-৩ টন আদা পাবো।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মরিয়ম আহমেদ বলেন, উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৭২ হাজার ৮৯০টি বস্তায় আদার চাষ হয়েছে । আদা উৎপাদনে সময় লাগে ১০-১২ মাস। প্রতিটি বস্তা থেকে প্রায় ২ কেজি আদা উৎপাদিত হয়। এতে কৃষকেরা পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত আদা বাজারজাত করে অনেক লাভবান হচ্ছেন।তিনি আরো আদা চাষকে আরও বেশি সম্প্রসারিত করতে কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত প্রশিক্ষণ, পরামর্শ এবং ক্ষেত পরিদর্শন করে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
Discussion about this post