সিলেট অফিস : সাম্প্রতিক বন্যার সুযোগে সিলেটের জাফলংয়ে পাথরখেকো সিন্ডিকেট বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। জাফলং ইসিএ এলাকা থেকে অবাধে লুট করছে বালু মিশ্রিত পাথর।
বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি যেনো তাদের জন্য এক মহা উৎসব তৈরি করেছে। ইসিএ সম্পর্কিত সরকারি গেজেট ও মহামান্য হাইকোর্টের ৯১৭৭/২০১৯ নং রিট পিটশন প্রদত্ত আদেশ লংঘন করে অব্যাহত রয়েছে যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক পদ্ধতিতে পাথর-বালু উত্তোলন। ফলে প্রাকৃতিক শোভা হারাচ্ছে দেশের প্রধান পর্যটনকেন্দ্র জাফলং, বদলে যাচ্ছে দেশের সীমান্ত রেখা ও মানচিত্র। ধংস হচ্ছে পরিবেশ ও প্রতিবেশ।
সূত্রমতে সরকারি গেজেট ও মহামান্য হাইকোর্টের উল্লেখিত রিট আদেশ অনুযায়ী জাফলং পাথর কোয়ারী ও ডাউকি নদী সংলগ্ন ১৪.৯৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকা ইসিএ বা প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা। এই এলাকাস্থ নদীর উভয় পারের ৫০০ গজ এলাকা যেকে যান্ত্রিক (বোমামেশিন) অযান্ত্রিক সব পদ্ধতিতে বালু-পাথর উত্তালন নিষিদ্ধ। এমনকি নির্ধারিত লাকায় স্টোনক্রাশার মেশিন পর্যন্ত বসানো নিষেধ। এই নিষেধাজ্ঞা লংঘনকারীদের বিরুদ্ধে ট্রাক্সফোর্স অভিযান পরিচালনারও নির্দেশ রয়েছে সরকারের উপর মহলের।
কিন্তু এলাকার চিহ্নিত পাথরখেকো সিন্ডিকেট ও স্থানীয় প্রশাসনসহ কেউই মানছে না সরকারি ইসিএ গেজেট ও উচ্চ আদালতে নির্দেশ। ফলে ধংসের দ্বারপ্রান্ত প্রকৃতির ষোড়শীকন্যা জাফলং। আর এ কারণে বিমুখ হয়ে পড়ছেন দেশ-বিদেশের পর্যটকরা। ঘটছে নানা অঘটন, এমনকি পাথরগর্তে পড়ে পর্যটকদের প্রায়শই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে চলেছে জাফলংয়ে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এলাকার চিহ্নত পাথরখেকো সিন্ডিকেট প্রত্যহ রাতদিন ট্রাক, ট্রলি, ইঞ্জিন চালিত নৌকা ও বলগেট বোঝাই করে বেআইনীভাবে পাচার করছে জাফলং ইসিএ এলাকার রাষ্ট্রীয় সম্পদ বালু-পাথর। অবৈধ পন্থায় কামাই করছে শত শত ও হাজারো কোটি টাকা। স্থানীয় প্রশাসনের অভিযান শুধু কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ বলে অভিযোগ স্থানীয় জনগনের।
এ ব্যাপারে আলাপকালে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ইকোলজিক্যালি ক্রিটিক্যাল এরিয়াকে সমুন্নত রাখতে স্হানীয় প্রশাসন সব সময় সক্রিয়। এখানকার পাথর উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি রয়েছে। পুলিশ, বিজিবিসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অবৈধ পাথর উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে তিনি জানান।
খালিদ সাইফুল, দৈনিক দেশতথ্য, ১ জুলাই ২০২৪

Discussion about this post