তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের জুড়ীতে উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষকদের দায়িত্বে অবহেলার খবর পাওয়া গেছে। যার ফলে, অত্রাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা শিক্ষা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
ওইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো হাজী খুরশিদ আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকা সিপ্রা দাশ। আলীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকা সালমা বেগম। হাসনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফরমান আলী।
জানা গেছে, জুড়ী উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে মোট ৮৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ওই সব প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রত্যেকটিতে ১জন করে প্রধান শিক্ষক এবং একাধিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ দেওয়ার পর সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ হতে তাদের আগমন এবং প্রস্থান বেঁধে দেয়া হয়েছে। উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নিকট হতে সময় নির্ধারণ করলেও ওইসব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকুরীরত প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের অনেকেই কতৃপক্ষের নির্দেশ কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজেদের খুশিমতো বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করেন।
সম্প্রতি সরেজমিনে ওই সব প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, ৩টি বিদ্যালয় যথাক্রমে হাজী খুরশিদ আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকা সিপ্রা দাশ, সহকারী শিক্ষক সানজিদা আক্তার, সহকারী শিক্ষক রুমি ভট্টাচার্য্য। বিকাল ৩ টা ৫০ মিনিটে প্রস্থান করেন। এছাড়াও সহকারী শিক্ষক মো: আবুল কালাম ও বাবলী আচার্য্য বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন না।
আলীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সালমা বেগম, সহকারী শিক্ষক বাবর আহমদ, সহকারী শিক্ষক মাছুমা আক্তার। বিকাল ৩ টা ৫০ মিনিটে প্রস্থান করেন।
হাসনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরমান আলীকে বিকাল ২ টায় গিয়ে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, সাংবাদিকদের উপস্থিতির সংবাদ পেয়ে তিনি বিদ্যালয়ে ২ টা ১৪ মিনিটে আগমন করেন, সহকারী শিক্ষক নাঈমা আক্তার দুপুরে খাবারের জন্য বাড়িতে যান ২ টা ১৫ মিনিটে বিদ্যালয়ে আসেন।
ওইসব এলাকায় গিয়ে শিক্ষার্থীদের অবিভাবকদের সাথে কথা হলে, ভুক্তভোগীরা বলেন, সরকার আমাদের ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া করার জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয় বানাইয়া দিয়েছেন। শিক্ষক ও দিয়েছেন। কিন্তু শিক্ষকরা সময়মতো আসে না। আমরা ওই শিক্ষকদের বিচার চাই। আমাদের দাবি সরকারের নিয়ম অনুযায়ী বিদ্যালয়টি খোলা হোক এবং বন্ধ হোক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরমান আলী বলেন, হোম ভিজিটে বাহিরে ছিলাম।
উল্লেখ্য, সাধারণত ক্লাস চলাকালীন সময়ে প্রধান শিক্ষকের হোম ভিজিটে যাওয়া উচিত নয়, কারণ তাঁর উপস্থিতি বিদ্যালয়ের সার্বিক শৃঙ্খলা ও কার্যক্রমের জন্য জরুরি। হোম ভিজিটের উপযুক্ত সময় হলো বিদ্যালয় শেষ হওয়ার পর, সাপ্তাহিক ছুটিরদিন, বা সরকারি ছুটির দিন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সালমা বেগম সাংবাদিকদের সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন। সহকারী শিক্ষক সানজিদা আক্তার বলেন, আমরা প্রতিদিন বিকাল ৩ টা ৫০ মিনিটে প্রস্থান করি এতে কোন সমস্যা নেই।
এ ব্যাপারে জানতে জুড়ী উপজেলা শিক্ষা অফিসার দিলীপময় দাশ চৌধুরী বলেন, আগমন ও প্রস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত করনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। মৌলভীবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শফিউল আলম বলেন, তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।