সিলেট প্রতিনিধি: সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা সদরের জৈন্তাপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে দীর্ঘদিনের জমে থাকা ময়লার ভাগাড় এখন পরিণত হয়েছে নান্দনিক এক ফুলের বাগানে। নতুন করে সাজানো এই স্থানটিতে
এখন প্রতিদিন অগনিত মানুষ অবসর সময় পার করতে আসছেন। দীর্ঘদিনের জমে থাকা ময়লার বাগাড়কে বাগানে পরিনত করার মাধ্যমে উপজেলাবাসীর এক বড় সমস্যার স্থায়ী সমাধান করে প্রশংসায় ভাসছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তার এ মহতি উদ্যোগের মাধ্যমে জৈন্তাপুর নতুন রুপ লাভ করেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিগত কয়েক বছর ধরে জৈন্তাপুর স্টেশন বাজার ও তোয়াশিহাঁটি আবাসিক এলাকার প্রবেশমুখে মানুষের ফেলে দেয়া উচ্ছিষ্টে বিশাল ময়লার স্তুপে পরিণত হয়েছিল। জৈন্তাপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, লামনীগ্রাম মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ওই স্থানের মাত্র ২০০ মিটারের ভেতরে অবস্থিত। যার কারণে প্রতিনিয়ত এলাকায় বসবাসকারী বাসিন্দাদের পাশাপাশি স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা থাকতো চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে।
এই দূরবস্থা নিয়ে দৈনিক জৈন্তাবার্তা পত্রিকায় একাধিকবার সংবাদ প্রকাশিত হলে নিজপাট ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে গত ছয় মাস পূর্বে একবার ময়লা অপসারণ করা হয়। কিন্তু কয়েক মাস না যেতেই পুনরায় আবার ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয় স্থানটি।
বিশেষ করে চলতি বছরের জুন-জুলাই মাসে ওই স্থানে পানি জমা শুরু হয়। সেই সাথে ছড়িয়ে পড়ে ভয়াবহ দুর্গন্ধ। সে সময় স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা উপজেলা পরিষদ ও সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের নিকট এর স্থায়ী প্রতিকার চেয়ে বারবার ব্যর্থ হয়েছেন।
পরবর্তীতে উক্ত সমস্যার স্থায়ী সমাধানে ক্ষুদ্র এক প্রকল্প হাতে নেন জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালিক রুমাইয়া। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, ওই স্থানটিতে ময়লা যতবার অপসারণ করা হবে, তা পুনরায় বর্জ্য ফেলে আবার নোংরা করে ফেলা হবে। তাই স্থানটিতে স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে কিছু উদ্যোগ হাতে নিয়েছিলেন তিনি।
ইউএনও জানান, গত সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে উক্ত স্থানে থাকা সকল ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করে সেখানে নান্দনিক ফুলের বাগান করা উদ্যোগ নেন তিনি। সেই সাথে ঐতিহাসিক মেগালিথ ধ্বংসাবশেষ থেকে ঝোঁপঝাড় কেটে মেঘালিথ স্থাপনা দৃশ্যমান করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
তিনি জানান, চলতি অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করা হয়েছে।
বর্তমানে ওই স্থানে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের বাউন্ডারি দেয়াল ও মেগালিথ ধ্বংসাবশেষের চারপাশে স্টিলের স্থায়ী বেষ্টনী দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। তার ভেতরে লাগানো হয়েছে বাহারী জাতে ফুল ও পাতাবাহারের গাছ। রাতে এই স্থানটির সৌন্দর্য দৃশ্যমান হতে লাগানো হয়েছে হ্যালোজেন বাতি।
জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালিক রুমাইয়া উক্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে যারা নিরলস পরিশ্রম করেছেন তাদের সকলকে ধন্যবাদ জানান। সেই সাথে স্থানটির সৌন্দর্য ধরে রাখতে স্থানীয়ভাবে সকলকে মনিটরিং করার আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি আবাসিক এলাকা ও বাজারের বর্জ্যসামগ্রী নির্ধারিত চন্দ্রাবিল এলাকায় ফেলার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
এহ/21/10/24/ দেশ তথ্য
প্রিন্ট করুন
Discussion about this post