আইনি প্রশ্নের মুখে মাহমুদুল ইসলাম রানা
নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী সৈরাচারী সরকারের আমলে ২৭ বছর ধরে বাংলাদেশ তায়কোয়ানদো ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের গদিতে থাকা মাহমুদুল ইসলাম রানা নিজেকে “The Father of Taekwondo in Bangladesh” হিসেবে উপস্থাপনের বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ তায়কোয়ানদো ফেডারেশনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে তার নাম ও পরিচয় সংবলিত একটি পোস্টারে তিনি এ দাবি করেন। তবে এই উপাধির স্বীকৃতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, কারণ এর স্বপক্ষে কোনো জাতীয় বা আন্তর্জাতিক সংস্থার অনুমোদিত ঘোষণা পাওয়া যায়নি।
ভুয়া দাবির অভিযোগ নিয়ে অনেকেই দাবি করছেন, মাহমুদুল ইসলাম রানা নিজে থেকে এ উপাধি গ্রহণ করেছেন, যা বিভ্রান্তিকর ও প্রতারণার শামিল। এছাড়া,
তিনি নিজেকে বাংলাদেশ আর্মি, আনসার, বিজিবি, এবং অন্যান্য শৃঙ্খলা বাহিনীর তায়কোয়ানদো ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে দাবি করেছেন। তবে, সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে এ ধরনের কোনো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতিও মেলেনি।
একজন ক্রীড়া সংগঠক বলেন, “এই ধরনের দাবি বিভ্রান্তিকর। প্রতিটি বাহিনীর নিজস্ব স্পোর্টস কাউন্সিল রয়েছে, তারা স্বাধীনভাবে তাদের খেলার কার্যক্রম পরিচালনা করে।”
আইন বিভাগের বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা তথ্য ছড়ায় যা জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করে, তবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮-এর ২৫ ও ২৯ ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। এছাড়া, সরকারি সংস্থার নাম ব্যবহার করে মিথ্যা দাবি করা ফৌজদারি অপরাধের আওতায় পড়তে পারে এবং এটি দণ্ডবিধির ৪১৯ ও ৪২০ ধারা অনুযায়ী প্রতারণা হিসেবে গণ্য হতে পারে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এক কর্মকর্তা জানান, “আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। যদি কোনো ব্যক্তি মিথ্যা পরিচয় বা উপাধি দাবি করে প্রতারণা করে থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বাংলাদেশ তায়কোয়ানদো ফেডারেশনের কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে বক্তব্য দেননি। তবে, ফেডারেশনের এক অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির মধ্যে আলোচনা চলছে এবং দ্রুতই আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
সামাজিক মাধ্যমে এ বিষয় নিয়ে ক্রীড়ামোদী ও সাধারণ জনগণের মধ্যে মিশ্র দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, একজন ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে মাহমুদুল ইসলাম রানার অবদান থাকলেও, স্বীকৃতি ছাড়া এমন দাবি করা
নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। অনেকে আবার সরাসরি এ ধরনের প্রচারকে “জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার একটি কৌশল” বলে উল্লেখ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে ভবিষ্যতে এ ধরনের মিথ্যা দাবি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ক্রীড়া বিশেষজ্ঞরা।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য //জানুয়ারী ২৯,২০২৫//
প্রিন্ট করুন
Discussion about this post