Print Date & Time : 24 August 2025 Sunday 8:46 pm

তিতাসের অবহেলায় কারখানার উৎপাদন ব্যাহত, ব্যাপক ক্ষতি

ফজলুল হক, কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুরের কালিয়াকৈরে পূর্ব ঘোষণা বা নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ গ্যাস সববরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় প্রায় চার শতাধিক শিল্পকারখানার উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে।
এতে মালামাল নষ্ট হয়ে কোটি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন কারখানার মালিকরা।
রোববার সকাল থেকে গ্যাসের এ সমস্যার কারণে ছুটি ঘোষণা করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। তাদের অভিযোগ, তিতাসের অবহেলার কারণেই এই ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন।

শিল্প-কারখানা ও তিতাসের চন্দ্রা জোনাল অফিস সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলা একটি শিল্প অধ্যুষিত এলাকা। এখানে প্রায় পাঁচ শতাধিক রপ্তানিমুখি শিল্পকারখানা রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় চার শতাধিক কারখানায় তিতাস গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের গ্যাস সরবরাহের মাধ্যমে উৎপাদন অব্যাহত আছে। কিন্তু রোববার সকাল থেকে হঠাৎ করে কারখানায় তিতাসের গ্যাস সরবারহ বন্ধ হয়ে যায়। পূর্ব ঘোষণা বা নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ গ্যাস সববরাহ বন্ধ করায় ওই চার শতাধিক শিল্পকারখানার উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। এতে মালামাল নষ্ট হয়ে কোটি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন কারখানার মালিকরা। আর সকাল থেকে গ্যাসের এ সমস্যার কারণে ছুটি ঘোষণা করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। তাদের অভিযোগ, তিতাসের অবহেলার কারণেই এই ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন। অথচ তিতাসের চন্দ্রা জোনাল অফিসের দাবী, উন্নয়ন কাজের জন্য গাজীপুরের জয়দেবপুর-টাঙ্গাইল লাইনের সাটডাউন দিয়েছে টাঙ্গাইল তিতাস সংশ্লিষ্টরা। এটা টাঙ্গাইলের সদরের এলেঙ্গা থেকে মির্জাপুরের কুমুদিনী পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকার কথা ছিল। টাঙ্গাইলের তিতাস কোম্পানি থেকে ওই জেলা উপজেলা ছাড়াও গাজীপুরের কালিয়াকৈর ও সাভারের আশুলিয়া মোট তিনটি জোন আছে। সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ওই লাইন বন্ধ থাকবে। আর ওই একটা লাইন বন্ধ থাকলেও কালিয়াকৈরে গ্যাস চালু আছে। কিন্তু যে রকম প্রেশার থাকার কথা তার চেয়ে কম রয়েছে। লো প্রেশারের কারণে কারখানাগুলোতে সমস্যা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বড় এক পোশাক কোম্পানির কর্তৃপক্ষ জানান, নাম উল্লেখ করে বক্তব্য দিলে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ আমাদের সমস্যা করবে। কোনো প্রকার নোটিশ ছাড়াই না জানিয়ে গ্যাস বন্ধ করেছে তিতাস কর্তৃপক্ষ। তাদের এমন অবহেলার কারণে আমাদের প্রায় তিন কোটি টাকার কাপড় নষ্ট হয়ে গেছে। তারা আগে থেকে জানালে আমাদের এই অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখিন হতে হতো না।

লিডা লিমিটেড কারখানার জিএম এ্যাডমিন জাহাঙ্গীর আলম জানান, গ্যাসের সরবরাহ অন্যান্য দিনের চেয়ে অনেক কম ছিল। আমাদের ডাইং না থাকায় তেমন প্রভাব পড়েনি। তবে যেসব কারখানায় ডাইং আছে, তাদের উৎপাদন অনেকটা ব্যাহত হয়েছে।

নুরুল ওয়্যার লিমিটেড কারখানার জিএম জহির হোসেন জানান, অনলাইনে নিউজ পোর্টালে গ্যাসের সমস্যাজনিত সংবাদ দেখে তিতাস কর্তৃপক্ষকে অবগত করি। কিন্তু তারা আমাদের আশস্ত করে এখানে গ্যাস সরবরাহে কোনো ত্রুটি হবে না। সকালে কারখানা চালু হলে গ্যাস সরবারহ বন্ধ হলে কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়।

এ বিষয়য়ে জানতে তিতাস গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের চন্দ্রা জোনাল অফিসের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোস্তফা মাহবুরের অফিসে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তিনি মিটিংয়ে আছেন জানিয়ে ওই অফিসের উপ-ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী রায়হান কবির জানান, টাঙ্গাইল থেকে গ্যাস লাইনে সাটডাউন দেওয়া হয়েছে। ওই এলাকায় গ্যাস বন্ধ থাকবে সে বিষয়ে টেলিভিশনসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার করা হয়েছে। আমাদের এলাকায় সাটডাউন হয়নি, আর এজন্য কোনো নোটিশ দেওয়া হয়নি। কিন্তু সেখানে সাটডাউন দেওয়ায় কালিয়াকৈরে গ্যাস সরবারহ বন্ধ না হলেও এখানে লো প্রেশার। এতে কারখানাগুলোতে সমস্যা হবে। তবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি আমাদের জানা নেই।

দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//