জে. জাহেদ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা ব্রিজঘাট সন্ধ্যা বাজার ইজারা নিয়ে ইজারাদাতা উপজেলা প্রশাসন ও ব্যবসায়িদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি মাইকিং করা হয়েছে। এ নিয়ে গভীর রাতে (শুক্রবার) মাইকিংয়ের পর থেকে এলাকায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
আজ ১৪ এপ্রিল (শুক্রবার) দুপুরেও মাইকিং করতে দেখা গেছে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি নজরধারীতে রেখেছেন যাতে এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্ট না হয়।
জানা যায়, ব্রিজঘাট সন্ধ্যা বাজারটি ইজারা নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ি ও ইজারাদাতা উপজেলা নির্বাহী কার্যালয় এবং ইজারা গ্রহীতার মধ্যে নানা বিষয়ে অমিল ও সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল বিকেল ৫ টার দিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহকারি কমিশনার (ভূমি) বাজারে উপস্থিত হন। এ সময় মাইকিং করে ইজারাদাতাকে খাস কালেকশনে সহযোগিতা করার কথা জানিয়ে এলাকায় ও বাজারে মাইকিং করা হয়।
কিন্তু উপজেলা প্রশাসনের মাইকিং করার ৮ ঘন্টা পর গত রাত ঠিক ১ টার সময় বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়িদের পক্ষ থেকে আবার মাইকিং শুরু হয়। এতে ঘোষণা করা হয়, শুক্রবার জুমার নামাজের পর ব্যবসায়িরা মানববন্ধন করবেন। বাজার বন্ধ রাখবেন। এতে সাধারণ মাুনষের মাঝে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়। যেহেতু সামনে ঈদ। ব্যবসায়িদের দাবি ছিল, সিডিও জায়গায় নির্মিত ব্রীজঘাট বাজারটি অযৌক্তিভাবে ইজারা দেয়া হয়েছে।
চরপাথরঘাটা ব্রীজঘাট ক্ষুদ্র মাছ ব্যবসায়ী কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আজগর আল পাপ্পু বলেন, ‘ওসির মধ্যস্থতায় ব্রীজঘাট ব্যবসায়ী ভাইদের আজকের মানববন্ধনটি স্থগিত করা হয়েছে। ওসি জানিয়েছেন। বিষয়টির সন্তোষজনক সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ইজারাদাতাকে কেউ টাকা (খাস কালেকশন) দেবে না। সে কারণে আজকের মানববন্ধন স্থগিত করা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে ইজারাদাতা সাজ্জাদ হোসেন সাজিদ বলেন, ‘দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে নিয়ম মেনে ব্রিজঘাট বাজারটি ইজারা পেয়েছিলাম। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গতকাল মাইকিংও করা হয়েছে। আজকে ওসি সাহেব ফোন করে জানালেন খাস কালেকশন বন্ধ রাখতে। কথা মতো বন্ধ থাকবে। সমস্যা নেই। বাকিটা উপজেলা প্রশাসনের বিষয়। এ ছাড়া আমি কিছু বলতে পারব না।’
জানতে চাইলে পুরাতন ব্রিজঘাট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি সমিতির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা যারা বাজারের ব্যবসায়ি। তাঁদেরকে ওসি সাহেব থানায় ডাকিয়েছিলেন। ওসি স্যার জানতে চেয়েছেন, কেন আমরা মানববন্ধন করতেছি। তখন আমরা ওসি সাহেব কে জানিয়েছি, ইজারাদাতা কোন টোল রেইট সাইনবোর্ড টাঙালেন না, সীমানা নির্ধারণ করলেন না, কোন দোকানদার কত টাকা কি হারে দিতে হবে তা উল্লেখ না করেই উপজেলার লোকজন মাইকিং করে গেছেন।’
সভাপতি আরও বলেন, ‘গতকাল ইজারাদাতা বলে গেছেন, মাংস বিক্রেতাকে প্রতিদিন এক কেজি মাংসের সম-পরিমাণ অর্থ মানে ৯০০ টাকা দিতে হবে ও মুরগি বিক্রেতাকে প্রতিদিন একটি মুরগির সম-পরিমাণ অর্থ মানে ৩০০ টাকা দিতে হবে। এভাবে কী ইজারা হয়। এটা কী মগের মুল্লুক ইজারা টোল আদায়? যদিও বাজারের জায়গাটি সিডিএ’র জমি।’
এ ব্যাপারে কর্ণফুলী থানার ওসি মো. দুলাল মাহমুদ বলেন, ‘ব্রিজঘাট বাজার নিয়ে মাইকিং হয়েছে। মানববন্ধন করার বিষয়টি জেনে জনস্বার্থে ব্যবসায়িদের সাথে বসেছি। তাঁদের দাবি দাওয়া শুনেছি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে এ বিষয়ে সুষ্ঠু সমাধান করার আশ্বাস দিয়েছি। আপাতত মানববন্ধন হবে না। ব্যবসায়িরাও সম্মত হয়েছেন ।’
কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মামুনুর রশীদ জানান, ‘ওসির সাথে আলোচনা হয়েছে। ব্যবসায়িদের যৌক্তিক দাবি থাকলে আমরাও শুনব। বিধি সম্মত ভাবে বাজারের রাজস্ব আদায় করা হবে। ব্রিজঘাট সন্ধ্যা বাজারটি দীর্ঘদিন ইজারা হয়নি। তাই পাশের দোকানদার ও পাশের হাট বাজারগুলোর ইজারা টোল রেইট কম্পেয়ার করে পুনরায় জানানো হবে।’
সিডিএ এস্টেট অফিসার মোঃ আলমগীর খান বলেন, ‘ব্রিজঘাট বাজারের জমি চউকের অধিগ্রহণকৃত। এ জমি উপজেলা ইজারা দেয়ার ক্ষমতা রাখেন না। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) এর সদ্য বদলি হওয়া সচিব অমল গুহ জানিয়েছেন, ‘বাজারের জায়গাটি চউক এর মালিকানাধীন, উপজেলা প্রশাসনের নয়।’
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//
![প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন](http://dailydeshtottoh.com/wp-content/plugins/wp-print/images/printer_famfamfam.gif)
Discussion about this post