ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধিঃ পেশায় ছিলেন একজন কাঠমিস্ত্রী। বিয়ে করে সংসার পেতেছিলেন। তার আয় দিয়ে বাবা-মা ও ভাইকে নিয়ে সংসার ভালোই চলছিল। কিন্তু এক দুর্ঘটনায় তার সাজানো সংসার এলোমেলো করে দিয়েছে। পঙ্গুত্ব বরণ করে তিনি গত চার বছর ধরে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। এখন তার পাশে কেউ নেই। বলছিলাম টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার হাতিমাড়া গ্রামের মৃত শামছুল হকের ছেলে সবুজ (২৪)।
সবুজ জানান, গত চার বছর আগে পাশের গ্রামের ঘর নির্মাণের কাজ করতে গিয়ে টিনের চাল থেকে পড়ে মেরুদন্ডের প্রধান হাড় ভেঙে যায়। সামর্থ্য অনুযায়ী চিকিৎসা করেছেন, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। মেরুদন্ডের হাড় ভাঙার ফলে বর্তমানে তার দুই পা অচল হয়ে গেছে। পায়ের বিভিন্ন অংশে ঘায়ের সৃষ্টিও হচ্ছে। সংসারে যা আয় ছিল তা দিয়ে চিকিৎসা করে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে সবুজের পরিবার।
সাত বছর আগে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কাকলী নামে এক মেয়েকে বিয়ে করেন সবুজ। সামিয়া (৫) ও কাউসার (৩) নামে তার দুটি ছেলে-মেয়ে রয়েছে। শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে আয়-রোজগার নেই। স্ত্রী ছেলে মেয়ে নিয়ে তাকে ছেড়ে বাবার বাড়ি চলে গেছেন। অভাবে ও শোকে বাবা মারা গেছেন বছরখানেক হলো। এ অবস্থায় সবুজের মা এবং ছোট ভাই উজ্জল অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনরকমে সংসার চালান।
সবুজ আরো জানান, তার বাড়ির হুইলচেয়ারে বসে থাকতে আর ভালো লাগে না। কিছু করতে মন চায় তার। কিন্তু তারতো সে সামর্থ্য নেই। এ অবস্থায় তিনি একটি ভ্রাম্যমাণ টং দোকানের আগ্রহ প্রকাশ করেন। এতে করে সংসারের জন্য কিছু সহায়তা হতো এবং প্রতিবেশীদের সাথে একটা যোগাযোগ স্থাপন হতো।
সাগরদিঘী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোকাম্মেল হোসেন বলেন, সবুজ কাঠমিস্ত্রীর কাজ করে সংসার চালাতো। দুর্ঘটনায় সে অক্ষম হয়ে পড়ায় পরিবারটিও সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। তার চিকিৎসা করতে গিয়ে পরিবারটি নিঃস্ব হয়ে গেছে। শারীরিকভাবে অক্ষম সবুজের জন্য সমাজের বিত্তবানদের কিছু করা উচিত।
সবুজের মা জোস্না বেগম বলেন, ঢাকার কয়েকটি হাসপাতালে ছেলেকে চিকিৎসা করানো হয়েছে। ডাক্তার বলেছিল চিকিৎসা করলে সবুজ ভালো হবে। কিন্তু টাকার অভাবে তার চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি। তার দুই পায়ের ঘা ছড়িয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় তার পা কেটে ফেলার পরামর্শ দিয়েছেন ডাক্তার। পা কাটা আর চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা লাগবে। আমি একজন গরীব মানুষ। এত টাকা কোথায় পাব? সহায়-সম্বল যা কিছু ছিল এত দিনে সব শেষ হয়ে গেছে। আমি আমার সন্তানের চিকিৎসার জন্য বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতা চাই।
সবুজের চিকিৎসা এবং আয়ের সুযোগ করে দিতে যারা সহায়তা করতে চান তারা এ মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন এবং সাহায্য পাঠাতে পারেন। বিকাশ নম্বর- ০১৭৩৩-৫৮৪১২২ (পার্সোনাল)। এটা সবুজের মায়ের নম্বর।
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//

Discussion about this post