মেহেরপুর প্রতিনিধি : মেহেরপুরে ৯ বছর বয়সী এক শিশু ধর্ষণ মামলার আসামি জামিন পেয়ে বাদিকে বিভিন্ন হুমকিসহ ধর্ষনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ব্লাকমেইল করার অভিযোগ ধর্ষিতার পরিবারের।
থানায় প্রতিকার চেয়ে বাদি অভিযোগ নিয়ে আসলে পুলিশের এক এসআই অভিযুক্ত ধর্ষককে বাঁচাতে পক্ষপাত্বি শুরু করেন।
এ অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে সদর থানা ঘেরায় করে বিক্ষোভ মিছিল ও অভিযুক্ত পুলিশের বিচারের দাবিতে ছাত্র জনতা অবস্থান নেয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী, পুলিশ সুপার (এসপি) ও প্রশাসনের উদ্বর্তন কর্মকর্তারা ছুটে আসেন থানায়।
গত সেপ্টেম্বর মাসে মেহেরপুর সদর উপজেলার একটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে বসবাসকারী ৯ বছরের শিশুকে ধর্ষণ করে মদনাডাঙ্গা গ্রামের বায়েজিদ নামের এক যুবক। ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ধারণ করে বায়েজিদের বন্ধু আলামিন হোসেন। এ ঘটনায় শিশুটির মা বাদি হয়ে গেল ৯ সেপ্টেম্বর বায়েজিদ, আলামিন ও বরকত আলী নামের তিন জনের নামে মেহেরপুর আদালতে ধর্ষণ মামলা করেন। আসামিরা গ্রেফতার হয়ে কয়েক মাস হাজতবাসের পর জামিনে মুক্ত হয়। ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের হুমকি দিয়ে বাদিকে মামলা তুলে নিতে বলে আসামি পক্ষ । এ ঘটনায় ধর্ষণ মামলার বাদি প্রতিকার চেয়ে মেহেরপুর সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টি মিমাংসা জন্য আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সদর থানার এসআই সুজয় কুমার উভয় পক্ষকে নিয়ে থানায় বসেন। এসময় এসআই সুজয় কুমার ধর্ষণ মামলার আসামিদের পক্ষ থেকে বাদিকে চাপ দিতে থাকেন। খবর পেয়ে থানায় গিয়ে প্রতিবাদ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এসআই সুজয় কুমার থানার মধ্যেই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সদস্য তুষার ও সিয়ামকে লাঠিপেটা করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ছাত্র জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে থানা ঘেরাও করে প্রতিবাদ শুরু করেন। এসআই সুজয় কুমার ও ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা দাবিতে থানার চত্বরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্র জনতা।
এদিকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে সেনাবাহিনীর একটি দল থানায় গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। সেখানে উপস্থিত হন মেহেরপুর পুলিশ সুপার মাকছুদা খানম।
এসময় বিক্ষুদ্ধ ছাত্র জনতা ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিয়ে পুলিশ সুপারের বক্তব্য প্রত্যাখান করেন। তবে শেষ পর্যন্ত ছাত্ররা তিনটি শর্তের মধ্যে এক ঘন্টা সময় বেধে দিয়ে রাত সাড়ে দশটার দিকে থানা চত্তর থেকে বের হয়ে বাইরে অবস্থান করে। পুলিশ সুপার সহ উদ্বর্তন কর্মকর্তারা জরুরি বৈঠক করে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে রাত বারোটার দিকে এসআই সুজয় কুমার কে সাময়িক বরখাস্ত করেন। অন্য দিকে বাদিকে হুমকি দেওয়ায় ধর্ষণ মামলার আসামি ও তাদের পক্ষের দুই জন কে আটক করা হয়েছে বলে জানালে উত্তেজিত ছাত্র জনতা থানা থেকে বের হয়ে আসেন।