নিজস্ব প্রতিবেদক : কুষ্টিয়ার ছয়টি উপজেলার হাটবাজারগুলোতে ব্যান্ডরোলবিহীন বিড়ি বাজারজাত করছে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। সরকার নির্ধারিত ২৫ শলাকার খুচরা মূল্য ১৮ টাকা হলেও কুষ্টিয়ার ছয়টি উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে ২৫ শলাকা বিড়ি ৮, ৯ ও ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এসব বন্ধে বৃহত্তর কুষ্টিয়া অ ল বিড়ি মালিক সমিতি ও বিড়ি শ্রমিক ইউনিয়ন কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারের কার্যালয়ে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি পেশ করলেও বন্ধ করা যাচ্ছে না তাদের দৌরাত্ম্য।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বেশির ভাগ ভেড়ামারা উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম রায়টা, কুচিয়ামোড়া, বাহাদুরপুর, গোলাপনগর, এবং কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর এছাড়াও খোকসা, কুমারখালী, মিরপুর উপজেলার অন্তভুক্ত অ লের বাজারে নকল ও জাল ব্যান্ডরোলবিহীন বিভিন্ন নামে বিড়ি বিক্রি হচ্ছে।
বাজারগুলোতে বিভিন্ন কোম্পানীর নাম ব্যবহার করে বিড়িসহ নামে-বেনামে ব্যান্ডরোলবিহীন বিড়ি দোকানে পাওয়া যাচ্ছে।
বিড়ি শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা জানান, বিড়ি শিল্পের অবস্থা ভালো নয়। আগের মতো বিড়ি ব্যবসা নেই। সরকার নির্ধারিত ১৮ টাকায় বিড়ি চালানো এমনিতেই কষ্টসাধ্য। তার মধ্যে কমদামি বিড়ি বিক্রি হওয়ায় বাজার নষ্ট হচ্ছে।
জেলা বিড়ি মালিক সমিতির সদস্যরা বলেন, জাল ও ব্যান্ডরোলবিহীন বিড়িতে বাজার সয়লাব। আমাদের জেলায় জাল ও ব্যান্ডরোলবিহীন বিড়ি বন্ধে আমরা বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু কাজ হচ্ছে না। আমরা যারা সরকারকে রাজস্ব দিয়ে ব্যবসা করছি, প্রতিনিয়ত আমাদেরই লোকসান হচ্ছে। আর যারা সরকারকে রাজস্ব দিচ্ছে না, তারাই লাভবান হচ্ছে।
এদিকে বিভিন্ন সময়ে গোয়েন্দা পুলিশ, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অভিযান পরিচালনা করলেও অসাধু ব্যবসায়ী চক্রের লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হয়নি। এ কারণে কুষ্টিয়া অ লের হাটবাজারগুলোতে এখনো ব্যান্ডরোলবিহীন বিড়ির বাজারজাত দিন দিন বেড়েই চলেছে। শুধু তাই নয়, ব্যান্ডরোলবিহীন বিড়ির পাশাপাশি নকল ব্যান্ডরোলযুক্ত বিড়ির এই রমরমা বাজার থেকে মুনাফা লুটছে প্রতারক ব্যবসায়ীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দুইদিন আগে দৌলতপুর উপজেলার গাছেরদিয়া টলটলিপাড়া গ্রামে অভিযান পরিচালনার সময়ে বিপুল পরিমাণ নকল ব্যান্ডরোলযুক্ত আকিজ বিড়িসহ অসংখ্য জাল বান্ডরোলসহ বিড়ির তৈরির বিভিন্ন উপকরণ জব্দ করা করেছে পুলিশ।
সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সোহরাব আলী ভূঁইয়া বলেন, বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হবে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে যারা আইন অমান্য করছে ও রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। শিগগিরই এ বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করা হবে। আমরা চাই সবাই সরকারের আইনের আওতায় ব্যবসা করুক।
খালিদ সাইফুল // দৈনিক দেশতথ্য // ৭ মে ২০২৪

Discussion about this post