নতুন ভোটারদের কাছে নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রথম বারের ভোট যেন ব্যর্থ না হয়, বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে তারুন্যের শক্তি কাজে লাগাতে হবে। বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে একটি উন্নত জায়গায় নিয়ে যেতে হবে।
আজ শনিবার দুপুর ২টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর নির্বাচনী এলাকা গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ কলেজ মাঠে প্রধান অতিথির ভাষণে তিঁনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি আগুন সন্ত্রাসে লিপ্ত হয়েছে, বাসে, ট্রেনে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারছে. নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করছে। এগুলি বন্ধ করতে হবে, যারা এগুলি করছে তাদেরকে ধরিয়ে দিতে হবে। আমার ভোট আমি দেব যাকে খুশিতাকে দেব এটি আমাদের শ্লোগন. ভোট ও ভাতের অধিকার সবার রয়েছে। নির্বাচন নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করে আমরা তাদের দেখে নিব বলে হুশিয়ারী দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিঁনি আরো বলেন, জাতির পিতা এই বাংলাদেশকে শুধু স্বাধীনাতা এনে দেন নাই, মুক্তির পথও দেখিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু যুদ্ধপরাধীদের বিচার শুরু করেছিলেন, সেই বিচার বন্ধ করে দেয় জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না করে তাদেরকে বিভিন্ন দুতাবাসসহ বড় বড় পদে চাকুরী দিয়েছিল। আমরা দু’বোন বিদেশে ছিলাম রিফুজি হয়ে, আমাদের দেশে আসতে দেয়নি জিয়াউর রহমান, রেহানার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়েছিল, জিয়াউর রহমান সেটি রিনু পর্যন্ত করতে দেয়নি। আমি জিয়াউর রহমানের দেয়া ইন্ডেমনিটি বাতিল করে খুনিদের বিচার করেছি। ২০০৮ সালে বিচারের রায় কার্যকর করেছি। আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন বলেই আমি পেরেছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রাখে আল্লাহ মারে কে ? এই কোটালীপাড়ায় ৭৬ ও ৮৪ কেজি ওজনের ২ টি শক্তিশালী বোমা পুঁতে রাখা হয়েছিল। সেদিন ওই বোমা বিষ্ফোরন হলে কোটালীপাড়াবাসী নিশ্চহ্ন হয়ে যেত। এত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দেখতে পেলোনা, কিন্তু একজন চায়ের দোকানদার কেটলী ধুতে গিয়ে বোমার তার দেখে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সংবাদ দিলেন। পরে বোমা উদ্ধার করা হয়। সেদিন আমাকে এবং কোটালীপাড়া বাসীকে আল্লাহই রক্ষা করেছেন। আমি সেই চায়ের দোকানদারের প্রতি কৃতজ্ঞ।
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট বানিয়েছি, বিনা পয়সায় স্কুলে স্কুলে ল্যাব স্থাপন করে কম্পিউটার দিয়েছি। আমরা ৩ কোটি ৯৪ লক্ষ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি দিচ্ছি। নারীদের কর্ম-সংস্থান সৃষ্টি, শিক্ষকদের মর্যাদা দিয়েছি. বেতন বৃদ্ধি করেছি, প্রশিক্ষন দিয়েছি। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে জনগনের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌছে দিচ্ছি। আমরা ভুমিহীনদের ২ শতক জমিসহ গৃহ নির্মান করে দিয়েছি, দেশের ৩৩ জেলা ইতিমধ্যে ভুমিহীনমুক্ত ঘোষনা করেছি। পর্যায়ক্রমে এই ব্ংালাদেশে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবেনা।
তিনি আরো বলেন, কোটালীপাড়ার মানুষের এক সময়ে কাজের ও যাতায়াতের কোন সুযোগ ছিলনা। সব করে দিয়েছি, বাকি যা আছে তাও করে দেব। এইভাবে আমরা পুরো দেশটাকে এগিয়ে নিতে চাই। কোভিড-১৯ এর সময়ে আমরা বিনামূল্যে টিকা দিয়েছি. যা পৃথিবীর কোন ধনী দেশ দিতে পারেনি। নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মান করে বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছি। এখন দিনে দিনে ঢাকা গিয়ে আবার ফিরে আসা যায়। আমরা সুপেয় পানি পানের ব্যবস্থা করেছি, স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা করে দিয়েছি। কোন জমি অনাবাদী রাখা যাবেনা। উৎপাদান বৃদ্ধি করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন. জিয়ার আমলে মুক্তিযোদ্ধারা পরিচয় দিতে ভয় পেত। এখন মুক্তিযোদ্ধারা বুক ফুলিয়ে তাদের পরিচয় দিতে পারেন। আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিত করেছি, তাদেরকে বীর নিবাস করে দিয়েছি।
কোটালীপাড়ার ভোটরদের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা আমাকে নৌকা মার্কায় ভোট দেবেনতো ? আপনারা আমার নির্বাচন করে দেন, আর আমাকে দেখতে হয় ৩০০ আসন। আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে কাজ করার সুযোগ করে দেবেন।
কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজ নির্বাচনী এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি ও সাবেক সিনিয়র সচিব মোঃ শহীদ উল্লা খন্দকার, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুজিবুর রহমান হাওলাদার, গোলাম কিবরিয়া দাড়িয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এইচ এম অহিদুল ইসলাম, হাজী কামাল হোসেন শেখ, আমিনুজ্জামান খান মিলন, সাংগঠনিক সম্পাদক মতিয়ার রহমান হাজরা, আওয়ামী লীগ নেতা কমল চন্দ্র সেন, জাহাঙ্গীর হোসেন খান, ইউপি চেয়ারম্যান মাজাহারুল আলম পান্না, যজ্ঞেশ্বর বৈদ্য অনুপসহ যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক, ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//

Discussion about this post