নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের গাইনী ও শিশু ওয়ার্ড থেকে চুরি যাওয়া সদ্যজাত এক শিশুকন্যাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এঘটনায় জড়িত সন্দেহে কাজলী নামের দুই নারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার রাতভর অভিযান চালিয়ে শনিবার ভোর রাতে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার খাজানগর চাষী ক্লাব পাড়ার বাসিন্দা সাইফুল ইসলামের স্ত্রী শিশুকন্যা ক্রেতা কাজলী খাতুনের(৩৪) ঘর থেকে শিশুটিকে উদ্ধারসহ ওই নারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগে নার্সের ছদ্মবেশে নাটোর আধুনিক হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে চুরির দায়ে পুলিশ গ্রেফতার করে একই এলাকার বাসিন্দা আরিফুল ইসলামের স্ত্রী কাজলী খাতুন(৩০)কে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শিশু চুরির দায় স্বীকার করে শিশুটি ক্রেতা কাজলীর বাড়িতে আছে বলে দেখিয়ে দেয় পুলিশকে।
এঘটনায় শিশু চুরির অভিযোগ এনে দুইজনের নামোল্লেখ করে নাটর সদর থানায় মামলা করে ওই শিশুকন্যার পিতা নলডাঙ্গা উপজেলার মহিষযাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা মাহফুজুর রহমান।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, বৃহষ্পতিবার দুপুরে প্রসব বেদনা নিয়ে নাটর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি হন হাসনা হেনা নামের প্রসুতি মা। ওই বিকেলে শিশুকন্যার জন্ম দেয় হাসনা হেনা। পরদিন শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নার্স পরিচয় দানকারী একনারী শিশুটিকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবে বলে সদজাত শিশুটির দাদি খাইরুন নাহারের কোল থেকে শিশুকে নিয়ে উধাও হয়ে যায়। এঘটনায় হাসপাতার এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। পরে শিশুটির পিতা নাটোর সদর থানায় জানালে থানা পুলিশ অভিযানে নামে।
শিশুটিকে উদ্ধারের খবরে তার বাবা নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরা মহিষডাঙ্গা গ্রামের মাহফুজুর রহমান ও মা হাসনা হেনা আনন্দ প্রকাশ করে পুলিশকে কৃতজ্ঞতাসহ ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নাটোর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক নাসিম আহমেদ জানান, ‘শুক্রবার বিকেলে আমরা জানতে পারি শিশু চুরির ঘটনাটি। তাৎক্ষনিক ভাবে হাসপাতালের সিসি ফুটেজ দেখে প্রাথমিক ভাবে চুরির সাথে জড়িত কাজলী খাতুন নামের এক নারীকে সনাক্ত করতে সক্ষম হই। পরে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে পুলিশ জানতে পারে চুরি যাওয়া শিশুটি কুষ্টিয়ার খাজা নগর এলাকায় আছে। সেই সূত্র ধরেই কুষ্টিয়া পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে মাত্র দুই দিনের সদ্যজাত চুরি যাওয়া শিশুটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ”।
এঘটনায় জড়িত অভিযোগে শিশুটিকে চুরির অভিযোগে কাজলী নামে এক নারীসহ শিশুটি ক্রেতা হওয়ার দায়ে কাজলী নামের অপর নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা এরা সংঘবদ্ধ শিশু চোর বা পাচারকারী চক্রের সদস্য হয়ে থাকতে পারে’। এই চক্রের সাথে আরও কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
খালিদ সাইফুল, দৈনিক দেশতথ্য, ১০ জুন ২০২৩

Discussion about this post