Print Date & Time : 24 August 2025 Sunday 6:23 pm

নিয়মিত খোলা হয় না কমিউনিটি ক্লিনিক, রোগীদের দূর্ভোগ

রোমান আহমেদ, জামালপুর প্রতিনিধি : উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের মির্জাপুর এলাকায় কমিউনিটি ক্লিনিক না খোলায় রোগীরা পাচ্ছেন না কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা। নেই কোন যাতায়াত ব্যাবস্থা। ফলে গ্রাম্য ওষুধের দোকানদাররাই রোগীদের ভরসা। রোগীদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাদের ছুটতে হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সপ্তাহে একদিন কমিউনিটি ক্লিনিক খুলে খাতাপত্র সাক্ষর দিয়ে কখন চলে যান কেও জানেন না। বাকি ছয় দিন তালাবদ্ধ থাকে বলে জানান স্থানীয়রা।

জামালপুরের মাদারগঞ্জে কমিউনিটি ক্লিনিক এর কমিউনিটি হেলথকেয়ার প্রোভাইডার ( সিএইচসিপি) শ্যামলী আক্তারের বিরুদ্ধে কর্মস্থল ফাঁকির অভিযোগ উঠেছে।

এছাড়াও স্বাস্থ্য সহকারি ও পরিবার পরিকল্পনা সহকারি নিয়মিত যান না ক্লিনিকে। ক্লিনিক খোলা থাকে সপ্তাহে একদিন।
উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নজরদারী নেই ক্লিনিকে অভিযোগ স্থানীয়দের।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চারপাশ ইটের তৈরি দেয়াল ঘেরা কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ। দুতলা বিশিষ্ট ভবন। নিচতলায় ফাকা থাকায় গরু রাখার জায়গা বানিয়েছে স্থানীয় এক বাসিন্দা। দেয়ালের ভেতরে ভবনের সামনেই শাকসবজির গাছ লাগানো। দেখে মনে হয় কারও বাড়ির উঠোন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দায়িত্বে থাকা সিএইচসিপি শ্যামলী আক্তার কিছু দিন হাসপাতালে আসার পর পারিবারিক সমস্যার কারণে দীর্ঘ আট মাস কমিউনিটি ক্লিনিকে আসেন নি বলে জানা যায়। স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে দায়িত্বে আছেন যিনি তিনিও আসেন মাসে একবার। এসে খাতাপত্র সাক্ষর করে কখন চলে যায় কেও জানে না। কোন মাসে ক্লিনিকের ফটক খোলাও চোখে পড়ে না স্থানীয়দের।

ক্লিনিকে শাকসবজির গাছ লাগিয়েছেন সুবর্না নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা।
তিনি বলেন, প্রতি রবিবার করে আসে। যে মহিলা আসে তারে জিগাইয়ে লাগাইছি। কইছে যে পইরে আছে লাগানগা। এখন যদি কয় লাগান যাবো না তাইলে কাইটে ফালাইলাম।
স্থানীয় কয়েকজন মহিলা জানান, কোন মাসে একবার আসে আবার কোন মাসে আসেইনে। শুধু মিটিং হয় হাসপাতালে আর কিছু না। ওষুধপত্রও দেয়না। আমরা কয়দিন যাইয়ে ফিরে আইছি ওষুধ দেইনা। তাই আর যাইনে।
তারা আরও জানান, ভালো রাস্তা না থাকায় কোন যানবাহন চলাচল করে না। কেও অসুস্থ হলে যেতে হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ক্লিনিকটিতে সর্ব সময় সব ধরনের ঔষধ দিলে আমাদের কষ্ট লাঘব হতো।

এবিষয়ে সিএইচসিপি শ্যামলী আক্তার বলেন, আমার একটি পারিবারিক কারণে ফেব্রুয়ারীর ১৪তারিখ থেকে নভেম্বরের ১১তারিখ পর্যন্ত আমি অনুপস্থিত ছিলাম। স্যারদের সাথে কথা বলে নভেম্বরে এসে জয়েন করছি। এখন আমি প্রতিনিয়ত অফিস করতেছি৷ আমি হেড অফিসে কাগজপত্র দিয়েছি, ছুটি মঞ্জুর হয় নাই কিন্তু যে কয়দিন যায়নেই সেকয়দিন বেতনও পাইনেই। আমি যখন ছিলাম না স্বাস্থ্য সহকারী উম্মে সাহিদা ওনি প্রতি রবিবার করে একদিন যাইয়ে সেবা দিতো। ক্লিনিকে স্বাস্থ্য সহকারী পদে আছেন উম্মে সাহিদা, পরিবার পরিকল্পনা সহকারী রাজিয়া সুলতানা। তারাও নিয়মিত আসে না।

মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, তার আট মাসের মত সমস্যা ছিলো। এই জন্য তাকে বিনা বেতনে ঢাকা থেকে ছুটি মঞ্জুর করে দিছে। অই সময়টাতে আমাদের স্বাস্থ্য সহকারী দায়িত্বে ছিলো। এখন তাকে আবার যোগদান করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিয়মিত অফিস করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আপনি যেটা বললেন এবিষয়ে অবগত ছিলাম না। আরও যারা দায়িত্বে আছে তারা নিয়মিত অফিস করতেছে। যদি অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ পাই সেক্ষেত্রে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//