সেলিম আহামেদ তাক্কু ॥ ভোটার ও নেতাকর্মীদের মনোরঞ্জন করতে ভুরিভোজ আয়োজন করে নির্বাচনের আচারণবিধি আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগ উঠেছে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ঝাউদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকার মনোনয়ন পাওয়া চেয়ারম্যান প্রার্থী জহুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। তিনি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ঝাউদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরের পর জহুরুল তার বাড়িতে নেতাকর্মীদের মাংস-ভাত দিয়ে আপ্যায়ন করেন। কয়েক হাজার নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারকে তিনি খাওয়ান। রান্না ও খাবারের কয়েকটি ছবি চেয়ারম্যান প্রার্থী জহুরুল ইসলাম নিজের ফেসবুক পেজে পোস্টও করেন। সেখানে ক্যাপশনে তিনি লেখেন- ‘নির্বাচন উপলক্ষে এলাকার সাধারণ মানুষদের দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা।’ অবশ্য পরে নিজের ফেসবুক পেজ থেকে পোস্টটি সরিয়ে ফেলেন তিনি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগামী ৫ জানুয়ারি সদর উপজেলার ঝাউদিয়াসহ ১১টি ইউনিয়নে নির্বাচন। নির্বাচন ঘিরে নানাভাবে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। নির্বাচন উপলক্ষে শুক্রবার দুপুরে ঝাউদিয়ায় নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের নিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় সমাবেশ আহ্বান করা হয়। ঝাউদিয়া কলেজ মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে আসা লোকজনকে খাওয়ানোর জন্য চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা জহুরুলের বাড়িতে সকাল থেকে রান্নার আয়োজন চলতে থাকে। সেখানে গরু, খাসির মাংস ছাড়াও সবজি ও ভাত রান্না করা হয় ভোটারদের খাওয়ানোর জন্য। কয়েকজন বাবুর্চি দিয়ে রান্না করা হয়। দুপুর পর্যন্ত রান্না চলে। পরে সভায় আসা লোকজনকে খাওয়ানো হয়।
যুবলীগের একজন নেতা বলেন, বর্ধিত সভায় আসা লোকজন ও ভোটারদের খাওয়ানোর জন্য জহুরুল আয়োজন করে। সেখানে অনেকেই এ খাবার খান।
কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, নির্বাচন এলে যারা মনোনয়ন পান তারা ভোটারদের আপ্যায়ন করে থাকেন। তারই অংশ হিসেবে জহুরুল ইসলামও তার বাড়িতে ভুরিভোজের আয়োজন করেন। সেখানে এলাকার নেতাকর্মী ছাড়াও বাইরে থেকে আসা অতিথিরা খাবার খান। এদিকে নির্বাচনী আইন অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার পর কোনো প্রার্থী দলীয় সমাবেশ ও ভুরিভোজের আয়োজন এমনকি টাকা-পয়সা বিলাতে পারেন না।
ঝাউদিয়া ইউনিয়ন থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী অভিযোগ করেন, ভোটারদের আকৃষ্ট করতে আইন ভঙ্গ করে নৌকার প্রার্থী জহুরুল ইসলাম ভুরিভোজ করান। সেখানে কয়েকশ’ মানুষ অংশ নেয়। নৌকার প্রার্থী হওয়ায় তিনি প্রভাব বিস্তার করতে এসব করছেন। বিষয়টি নির্বাচনী কর্মকর্তাদের দেখা উচিত।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী জহুরুল ইসলাম বলেন, তেমন কিছু নয়, কিছু মানুষের জন্য খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। প্রতিবেশী ও এলাকার লোকজনকে খাওয়ানো হয়।
জানতে চাইলে ঝাউদিয়া ইউনিয়নের রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল মতিন জানান, বিষয়টি তারা জানা নেই। খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে তিনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

Print Date & Time : 3 August 2025 Sunday 7:08 pm