পাইকগাছার কপিলমুনিতে পাওনা টাকা দেওয়ার জন্য ডেকে নিয়ে দু’সহোদরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে গুরুতর আহত’র ঘটনায় কথিত কিশোর গ্যাং প্রধানসহ ৭ জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। তবে মামলার এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও পুলিশ আসামীদের কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
এদিকে আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় আহতরাসহ তাদের পরিবার ফের হামলার আশংকায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
মামলার বিবরণ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, উপজেলার কপিলমুনির নাছিরপুর গ্রামের মৃত আফছার মল্লিকের ছেলে মো: মেহেদী হাসান একই গ্রামের শাহাজান বিশ্বাসের ছেলে মহিদ বিশ্বাস(২১) এর কাছে হাওলাতি ৭ হাজার টাকা পায়। উক্ত টাকা চাওয়ায় সে বিভিন্ন সময় নানা টালবাহানা করতে থাকে। একপর্যায়ে গত ১১ নভেম্বর রাত আনুমানিক ৯ টার দিকে উক্ত টাকা পরিশোধের কথা বলে নাছিরপুর গ্রামের তালেব সরদারের ছেলে মো: লিটন সরদার (২৪) সহ একই এলাকার আসিফ, মহিদ, রাব্বি, রিয়াজুল, আশিক ও তালেব সরদার মেহেদীকে মোবাইল ফোনে নাছিরপুর পাঞ্জেগানা মসজিদের পাশে রাস্তার উপর ডেকে নেয়।
এসময় মেহেদী হাসান ও তার অপর সহোদর হাসান মল্লিক ঘটনাস্থলে পৌছানো মাত্রই তারা দলবদ্ধ হয়ে দেশীয় ধারালো অস্ত্র-নিয়ে তাদেরকে ঘিরে ফেলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। একপর্যায়ে তারা মেহেদীর পকেটে থাকা মাছ বিক্রির ২১ হাজার টাকা জোরপূর্বক বের করে নেয়। এতে মেহেদী প্রতিবাদ করা মাত্রই পার্শ্ববর্তী রেজাকপুর গ্রামের মোসলেম সরদারের ছেলে আসিফ সরদার (২৪), নাছিরপুরের শাহাজানের ছেলে মহিদ, রবিউলের ছেলে রাব্বি (২২) ও মৃত নূর ইসলাম শেখ’র ছেলে রিয়াজুল শেখ (২২) তাদের হাতে থাকা ধারালো রাম দা দিয়ে তাকে উপর্যুপরি কুপিয়ে মারাতœক জখম করে।
এসময় আসিফ মেহেদীর মাজার উপওে পীঠের নিচে স্বজোরে কোপ দিলে তার ফুসফুস বেরিয়ে আসার উপক্রম হয়। এরপর তালেব সরদারের ছেলে গ্যাং প্রধান লিটন ধারালো দা দিয়ে তার গলায় কোপ দিতে গেলে হাত দিয়ে ঠেকালে কনুইয়ে লেগে মারাতœক জখম হয়। একপর্যায়ে মেহেদীর সহোদর হাসান মল্লিক ভাইকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে তারা তাকেও কুপিয়ে মারাতœক আহত করে। এসময় তাদের করুণ ডাক-চিৎকারে প্রতিবেশী ও পথচারীরা এগিয়ে আসলে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এরপর মূমুর্ষ অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে কপিলমুনি হাসপাতালে নিলে সেখানকার কর্তব্যরত ডাক্তাররা খুলনায় নেয়ার পরামর্শ দেন। এরপর খুলনায় নেয়ার পথিমধ্যে তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সেখান থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।
পারিবারিক সূত্র জানায়, মেহেদী হাসানের পীঠ ও মাজায় ১৪টি, হাতের কনুইয়ে ৫টি,২ ও ৩ টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। ফুসফুসে বাতাস ঢোকায় তার অবস্থা গুরুতর। অন্যদিকে তার সহোদর হাসানের একটি হাত কেটে ফেলার উপক্রম হয়েছে।
এঘটনায় তাদের আরেক ভাই মো: হোসেন মািল্লক বাদী হয়ে গ্যাং প্রধান নাসিরপুরের তালেব সরদারের ছেলে লিটন সরদার (২৮), রেজাকপুরের মোসলেম সরদারের ছেলে আসিফ সরদার (২৪), শাহাজান বিশ্বাসের ছেলে মহিদ বিশ্বাস (২১), রবিউল বিশ্বাসের ছেলে রাব্বি বিশ্বাস (২২), নূর ইসলাম শেখ’র ছেলে রিয়াজুল শেখ(২২), রবিউল শেখ’র ছেলে আশিক (২২) ও মৃত মোজাহার সরদারের ছেলে তালেব সরদার(৫০) নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে পাইকগাছা থানায় একটি মামলা করেছে। যার নং-১৫। তাং-১৮/১১/২১ ইং, ধারা: ১৪৩/৩৪১/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/১১৪/৫০৬(২) পেনাল কোড ১৮৬০।
এদিকে ঘটনায় মামলার এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও পুলিশ আসামীদের কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
পাইকগাছা থানা অসিার ইনচার্জ (ওসি) জিয়াউর রহমান জানান, ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আসামী গ্রেফতারে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, বাহিনী প্রধান লিটনের নেতৃত্বে কিশোর-যুবকদের নিয়ে একটি বাহিনী রয়েছে। যারা এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের পাশাপাশি ভাড়ায় উপজেলার বাইরেও ঘের দখল, চুরি,ডাকাতি করে আসছে।
জয়া–২৬-১১-২০২১

Discussion about this post