শেখ নাদীর শাহ্,পাইকগাছা (খুলনা) :
খুলনার পাইকগাছা উপজেলার হরিঢালী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতিসহ বহুবিধ অভিযোগের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারী) সকালে বিদ্যালয় চত্ত্বরে মানববন্ধন চলাকালে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন, অভিযুক্ত শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাস।
পদত্যাগপত্রে তিনি শারীরিক অসুস্থতা ও ব্যাক্তিগত কারণের কথা উল্লেখ করেছেন।এদিকে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষক-ছাত্র-এলাকাবাসীর উদ্যোগে স্কুলের সামনে প্রধান সড়কে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন, সহকারী শিক্ষক অনীশ রঞ্জন চক্রবর্তী, হাবিবুর রহমান, রেবেকা, প্রকাশ ঘোষ, অভিভাবক-গফ্ফার মজলিশ, মোঃ শহিদুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মামুন, নাজমুল হোসেনসহ ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী শেখ আব্দুল মুহিন, রাকিবুল ইসলাম রকি, সাদিয়া আক্তার, লাকি আক্তার, রিনা আক্তার।
মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন, সহকারী শিক্ষক মো: মনিরুল ইসলাম। এসময় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ শাহজাহান আলী উপস্থিত ছিলেন।
আন্দোলনকারীরা জানান, মানববন্ধন কর্মসূচী চলাকালে প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাস অফিস কক্ষে তার পদত্যাগ পত্র রেখে চলে যান।
স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক এম এম হাফিজুর রহমান জানান, তিনি প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগপত্রটি বুঝে নিয়েছেন।
এর আগে বিদ্যালয়ের মোট ১৬ জন শিক্ষকের ১৪ জন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দূর্সীনি-অনিয়মসহ নানা বিষয়ে একটি অখিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগে জানানো হয়, প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাস একটি বিতর্কিত প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পেয়ে হরিঢালী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন।
এরপর বিভিন্ন সময় তিনি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ হাবিবুর রহমান মোড়ল, সঞ্জয় কুমার পাল ও বাবলু কুমার হরি এর কাছ থেকে বিএড স্কেল ও এমপিও ভুক্তির জন্য ২৫ হাজার টাকা, এনটিআরসিএ নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক মোঃ সবুর সরদার, সঞ্জয় কুমার পাল ও পল্লব কুমার হরির কাছ থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ও বিল করিয়ে দিতে অনুরূপ তিনজনের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৪৫ হাজার টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন।
সহকারী শিক্ষক অনীশ রঞ্জন চক্রবর্তী ও ঈশিতা রানীন নিকট থেকে অনৈতিকভাবে ২০ হাজার টাকা ও পাসওয়ার্ড দেখানোর নামে ১০ হাজার টাকা জোরপূর্বক আদায় করেন। এছাড়া চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগের মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিদ্যালয়ের অপ্রদর্শিত আয় (প্রশংসাপত্র মূল সনদপত্র) নিজে আত্মসাৎ করার পাশাপাশি বিগত দিনে শিক্ষকদের অতিরিক্ত ক্লাসের টাকার কমিশন গ্রহণ করেন বলে অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠের সুনাম রক্ষা ও দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষকের অপসারণসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক-কর্মচারী, ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকাবাসী গত ৫ ফেব্রুয়ারী ঐ অভিযোগপত্রটি দাখিল করেন।
এব্যাপারে সর্বশেষ অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসের প্রতিক্রিয়া জানতে স্কুলে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
উপজেলা মাধ্যমিত শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ শাহজাহান আলী পদত্যাগের ব্যাপারে সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, যথাযথ প্রক্রিয়ায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Discussion about this post